বিনয় দত্তের ‘প্রহসনের এক রাত্তির’ এখন মেলায়
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২৩ এ প্রকাশিত হয়েছে মুক্তমনা কথাসাহিত্যিক এবং প্রতিশ্রুতিশীল সাংবাদিক বিনয় দত্ত'র সমকালীন কথনমালা ‘প্রহসনের এক রাত্তির’। বইটি প্রকাশ করেছে পুথিনিলয় প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন চারু পিন্টু। ১২৮ পৃষ্ঠার বইটির মুদ্রিত মূল্য ৩৭০ টাকা। বইটি রকমারিতেও পাওয়া যাচ্ছে।
‘প্রহসনের এক রাত্তির’ বইয়ে অতীত নিয়ে কথা আছে, ছোট-বড় ঘটনার বিশদ রূপও আছে, জোর করে ভুলে থাকতে চাওয়ার বিষয়ও আছে।
বিজ্ঞাপন
বইটি সম্পর্কে লেখক বলেন, সাংস্কৃতিক আবহে বেড়ে ওঠা একটি রাষ্ট্র ধীরে ধীরে সংস্কৃতি বিমুখ হয়ে যাচ্ছে, আজ জোরালো সাংস্কৃতিক আন্দোলনের দেখা মেলে না। কেন হচ্ছে এমন? অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা আজ বড় পণ্য, শিক্ষা থেকে পোশাক সব জায়গায় সাম্প্রদায়িকতা। এমন কি হওয়ার কথা ছিল? বেড়ে ওঠা তারুণ্যের সংকট যেন আমাদের অচেনা, আমরা যেন তাদের ভুলে থাকতে চাই। তবে কি তরুণরা অবহেলিত? এক রাতে শিক্ষাক্রম হয়ে যায় পরিবর্তিত, পাঠ্যপুস্তক যেন যেমন খুশি তেমন আবদার মেটানোর জায়গা। তবে শিশুরা কী শিখবে? প্রশ্ন করলেও উত্তর কি মিলছে? উত্তর জানা জরুরি, জানানো জরুরি। ‘প্রহসনের এক রাত্তির’-এ সেই অজানা উত্তরের সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমি সমাজ পরিবর্তনের জন্য লিখি। লিখে আনন্দ পাই, তাই লিখি। ‘লিখে কী হবে?’ এই মর্মবাণী আমি বিশ্বাস করি না। লিখি দেখেই আপনারা জানেন। জানেন দেখেই আপনারা ভাবেন। আমার কাজ আপনাদের চলমান ভাবনা থামিয়ে দেওয়া। আমি যা বলতে চাইছি তা শোনানো।
তিনি আরও বলেন, আমি সমাজ পরিবর্তনের কথা বলি। কারণ সমাজকে যদি সন্তানের মতো দেখি তবে তা আমাদেরই লালন-পালন এবং পরিবর্তন করতে হবে। কখনো মাঠের জন্য আহাজারি করে, কখনো শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন চাই বলে চিৎকার করে, কখনো সাম্প্রদায়িক দাবানল বন্ধ করে, কখনো তারুণ্যের সংকটের কথা বলে সেই পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।
লেখক বলেন, মূল বিষয় হলো আমাদের দেশে যে সংকট চলমান তার সমাধান সম্ভব। কীভাবে? সেই গল্প বলার চেষ্টা করেছি। আমি গল্পকথক, সংকটেও গল্প বলি, কষ্টেও গল্প বলি, আনন্দেও গল্প বলি। তবে সংকটের পাশাপাশি সমাধানেরও গল্প বলি। ‘এই শহর সুবোধদের’, ‘আরোপিত এই নগরে’, ‘অর্বাচীনের আহ্নিক’-এর পর এটি সমকালীন কথনমালার নতুন সংযোজন। পাঠের আমন্ত্রণ।
এটি লেখকের ষষ্ঠ বই। ২০১৭ সালে চৈতন্য থেকে গল্পগ্রন্থ ‘চিলতে মেঘ ও কুহুকেকার গল্প’, ২০১৮ সালে পুথিনিলয় থেকে উপন্যাস ‘অমৃতায়ন’, ২০১৯ সালে পুথিনিলয় থেকে সমকালীন কথনমালা ‘এই শহর সুবোধদের’, ২০২০ সালে পুথিনিলয় থেকে সমকালীন কথনমালা ‘আরোপিত এই নগরে’, ২০২২ সালে পুথিনিলয় থেকে সমকালীন কথনমালা ‘অর্বাচীনের আহ্নিক’ প্রকাশিত হয়।
লেখক বিনয় দত্তের জন্ম ২০ ফেব্রুয়ারি, নন্দনকানন, চট্টগ্রাম। বেড়ে ওঠা চট্টগ্রামে। বাবা অনিমেষ চন্দ্র দত্ত ও মা মিনু দাশ। ছেলেবেলা থেকেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে তার অবস্থান সুদৃঢ়। লেখালেখির শুরু ছেলেবেলাতেই। ২০০৫ সাল থেকে লেখক হিসেবে নিজেকে তৈরি করার লক্ষ্যে সক্রিয় সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক, চিত্রনাট্য, মুক্তগদ্য লেখেন। এছাড়া সামাজিক সংকট ও সমস্যা নিয়ে জাতীয় দৈনিক, অনলাইন পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে লেখালেখি করেন।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি নিয়মিত গবেষণায় যুক্ত আছেন। মুক্তিযুদ্ধ, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাহিত্য ও চলচ্চিত্র বিষয়ে দেশের স্বীকৃত জার্নালে তার একাধিক গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।