অমর একুশে বইমেলার পঞ্চম দিনে ৭৩টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। মেলার দ্বিতীয় দিন থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩০৩টি বই মেলায় এসেছে। তুলনামূলক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নতুন বইগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এসেছে উপন্যাস ও কবিতার বই। অপরদিকে সর্বনিম্ন নতুন বইয়ের তালিকায় রয়েছে অভিধান ও নাটক।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলা একাডেমির জনসংযোগ উপবিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মেলার পঞ্চম দিনে নতুন গল্পের বই ৪টি, উপন্যাস ১৪টি, প্রবন্ধ ১২টি, কবিতা ১২টি, গবেষণা ১টি, ছড়া ১টি, শিশুতোষ ১টি, জীবনী ৪টি, মুক্তিযুদ্ধ ১টি, বিজ্ঞান ১টি, ভ্রমণ ৪টি, ইতিহাস ৭টি, রাজনীতি ১টি, চিকিৎসা ১টি, অনুবাদ ১টি, সায়েন্স ফিকশন ১টি এবং অন্যান্য ৭টিসহ মোট ৭৩টি বই যোগ হয়েছে।

এ দিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ : সমরজিৎ রায় চৌধুরী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহিদ মুস্তাফা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মইনুদ্দীন খালেদ এবং মুস্তাফা জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পী হাশেম খান।

অনুষ্ঠানে প্রাবন্ধিক বলেন, বাংলাদেশের বরেণ্য শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী হাতে লেখা বাংলাদেশের সংবিধানের অন্যতম নকশাবিদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান লোগোসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের লোগোর প্রণেতা। তিনি ছবি আঁকতেন আমাদের দেশের রূপবৈচিত্র্যকে বিষয়বস্তু করে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও ছবি এঁকেছেন তিনি। এছাড়া নিসর্গ ও মানুষ ছিল তার প্রিয় বিষয়। গ্রামীণ দৃশ্যাবলী, সেই সঙ্গে তার শৈশবের স্মৃতিবিজড়িত দৃশ্যাবলী তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। শিল্পী সমরজিৎ তার জীবনব্যাপী প্রগতিশীল আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করেছেন। শান্তির অন্বেষায় তার চিত্রপটে রঙ, রেখা, রূপ— সব একাকার হয়ে আছে।

আলোচকরা বলেন, সমরজিৎ রায় চৌধুরী একাধারে একজন প্রতিভাবান শিল্পী, অভিভাবকসুলভ শিক্ষক এবং বন্ধুবৎসল একজন মানুষ ছিলেন। পরম্পরা-নির্ভর শিল্পী হলেও তার চিত্রভাষায় আধুনিকতার ছোঁয়াও ছিল স্পষ্ট। শিল্প-সৃষ্টির ক্ষেত্রে আনন্দ ও লাবণ্য তৈরিতে তিনি বিশেষভাবে জোর দিয়েছিলেন। পরিচিত ও অপরিচিত দু ধরনের মোটিফের ব্যবহার তার চিত্রের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য। প্রকৃতি, মানুষ আর লাল সবুজের বিন্যাস তার চিত্রকে বিশিষ্টতা দান করেছে।

সভাপতির বক্তব্যে শিল্পী হাশেম খান বলেন, শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী ছিলেন নিষ্ঠাবান একজন শিক্ষক। দৃঢ় মনোবলের অধিকারী এই শিল্পী চাটুকারিতাকে কখনো প্রশ্রয় দেননি বরং ভালোবাসা দিয়েই সহকর্মী ও শিক্ষার্থীদের মন জয় করেছিলেন। তিনি তার নিজের চিত্রভাষা নির্মাণ করতে পেরেছিলেন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি আলতাফ হোসেন, আসলাম সানী এবং মারুফ রায়হান। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মীর বরকত, ইকবাল খোরশেদ এবং কাজী বুশরা আহমেদ তিথি। এছাড়াও ছিল ফয়জুল আলম পাপ্পুর পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘প্রকাশ সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন’-এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী ইয়াকুব আলী খান, সালাউদ্দিন আহমদ, সুজিত মোস্তফা, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী এবং প্রিয়াংকা গোপ। যন্ত্রানুসঙ্গে ছিলেন সুবীর চন্দ্র ঘোষ (তবলা), ইফতেখার হোসেন সোহেল (কী-বোর্ড), ফিরোজ খান (সেতার) এবং মো. হাসান আলী (বাঁশি)।

এমএম/এসএসএইচ/