শীতের আড়মোড়া ভেঙে বসন্ত উঁকি দিচ্ছে প্রকৃতিতে। ঝরা পাতার বিষন্নতা ছাপিয়ে ফাগুন আসবে নতুন রঙে, সতেজ রূপে। প্রকৃতির পাশাপাশি মানুষের মনও যেন পাখা মেলে এসময়। এজন্যই বুঝি বসন্তকে ডাকা হয় ঋতুরাজ নামে! বলা হয় বসন্ত বাতাসে থাকে ভালোবাসার সৌরভ। সে কথাকে আরো সত্য করে তুলতেই যেন ফাগুনের প্রথম দিনটি একইসাথে ভালোবাসার দিনও। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস পহেলা ফাল্গুনে।

উৎসবপ্রিয় বাঙালি বসন্তের প্রথম দিনটি উদযাপন করে নিজেকে উজ্জ্বল হলুদ রঙে রাঙিয়ে। আবার এদেশে ভালোবাসা দিবস উদযাপিত হয় টকটকে লাল রঙে মুড়িয়ে। তবে গতবছর থেকে এই দু’টি বিশেষ দিন একই দিনে পালিত হচ্ছে বলে রঙে রঙে মাতোয়ারা হওয়ার এক দারুণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাঙালি তার স্বভাবসুলভ উৎসব মুখরতাকে আরো অর্থবহ করতেই যেন হলুদ আর লালের গন্ডি পেরিয়ে পোশাকে নিয়ে এসেছে নতুন রঙের বাহার। যদি দিনের প্রথম ভাগে প্রাধান্য পায় বসন্তকে বরণের আয়োজন, তো দিন শেষ হয় ভালোবাসার ছন্দে।

উৎসবের এক অনন্য অনুষঙ্গ হলো পোশাক। এমনকী, পোশাক আমাদের ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি আমাদের মানসিকতা, রুচি কিংবা মেজাজেরও প্রতিফলন। তাইতো বিশেষ দিনগুলোকে ঘিরে পোশাক নির্বাচনে সবারই থাকে বাড়তি মনোযোগ। বসন্ত বরণ ও ভালোবাসার দিনটি একই দিনে হওয়ায় দিনটির সাজসজ্জায় থাকা চাই বিশেষত্ব। দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলোও সেকথা মাথায় রেখে এবারের ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসের কালেকশনে নিয়ে এসেছে বৈচিত্র্য। হলুদ, লালের পাশাপাশি এবার নীল, সাদা, সবুজও নজর কাড়ছে ক্রেতা সাধারণের। বিভিন্ন ফুলেল নকশার পাশাপাশি আকর্ষণ সৃষ্টি করেছে জ্যামিতিক নকশাও। আছে মিলিয়ে পরার মতো শাড়ি-পাঞ্জাবির কাপল সেটও।

দেশীয় পোশাকের ব্র্যান্ড সাতকাহন এবছর বহু রঙের সমাহার করেছে তাদের পোশাকে। যেমন আছে দেশীয় সোনালু ফুলের হ্যান্ড পেইন্ট শাড়ি; তেমনি আছে প্রেমের অমর নিদর্শন তাজমহলের স্ক্রিনপ্রিন্ট। আরো আছে ট্রেডিশনাল ও ফিউশন ধাঁচের ডিজাইন। শাড়ি-পাঞ্জাবির পাশাপাশি আছে কুর্তিও। তবে পোশাকে রং কিংবা নকশা যেমনই হোক, এবারের ফাল্গুন সবার জন্য হোক ভালোবাসায় পূর্ণ। প্রকৃতির পাশাপাশি সবাই মিলে ঝলমলে সুন্দর রূপে এক বসন্তের সুবাতাসেরই অপেক্ষা এখন কেবল।