সংসার গড়ে ওঠে বিশ্বাস ও ভালোবাসার বন্ধনে। এটি টিকে থাকে পারস্পারিক বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে। ভালোবাসা, বিশ্বাস, সহযোগিতায় একে অপরের পাশে থাকাই সংসারের উদ্দেশ্য। কিন্তু সংসার করতে গিয়ে মতের অমিল হয় না, এমন কোনো দম্পতি খুঁজে পাওয়া যাবে না। হয়তো ছোটখাটো বিষয় নিয়েই কথা কাটাকাটি, সেখান থেকে সম্পর্ক গড়ায় ভাঙনের দিকে!

কথায় কথা বাড়ে। তাই কথা বলার সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে জানাও জরুরি। যদি একে অপরকে আঘাত করে কথা বলার প্রচেষ্টা থাকে, তবে সেই সম্পর্ক বেশি দূর যেতে পারে না। অনেক সময় রাগের মাথায় আমরা এমন কিছু কথা বলে ফেলি, পরে মনে হয় যে সেগুলো না বললেই হতো। স্ত্রী তার নিজের অজান্তেই এমন কিছু কথা বলে ফেলতে পারেন, যেগুলো স্বামীর মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ছোট সমস্যা তখন বড় হতে হতে ভাঙন পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে।

অনেক সময় এমন হতে পারে যে, দাম্পত্যের শুরুতে মানুষ ঠিক বুঝে উঠতে পারে না কী করা উচিত। পরস্পরকে চিনলেও একসঙ্গে থাকার অভ্যাস গড়ে উঠতে সময় লাগে। দিনের বেশিরভাগ সময় একসঙ্গে থাকার ফলে এমন সব কথাও মুখ ফসকে বলা হয়ে যেতে পারে, যেগুলো আসলে বলা ঠিক নয়। জেনে নিন কোন কথাগুলো স্বামীকে বললে তা সম্পর্ককে ভাঙনের দিকে নিয়ে যেতে পারে-

শ্বশুরবাড়ির বদনাম
আপনার শ্বশুরবাড়ি হলেও সেটি আপনার স্বামীর নিজের বাড়ি। আর নিজের বাড়ির বদনাম কেউ সহ্য করতে পারেন না। তাই শ্বশুরবাড়ির বদনাম করলে আপনার স্বামী রেগে যাবেন, এটাই স্বাভাবিক। কারণ সেই বাড়ির সব সদস্য তার আপনজন। তাই শ্বশুরবাড়ির বদনাম করবেন না। যদি সুযোগ পান তবে প্রশংসা করুন। এতে আপনার স্বামী খুশি থাকবেন। ভালো থাকবে আপনার সম্পর্ক। সংসারও সুখের হবে।

বাবার বাড়ির অতিরিক্ত প্রশংসা
আপনি অবশ্যই আপনার পরিবারকে ভালোবাসবেন। তাদেরকে মনে পড়াও স্বাভাবিক। তাদের কাছ থেকে পাওয়া শিক্ষাই আপনাকে সুন্দর জীবনযাপনে পথ দেখিয়ে যাবে। বাবার বাড়ির মানুষেরও প্রশংসা করবেন। তবে তা যেন অতিরিক্ত না হয়। সব সময় শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে বাবার বাড়ির তুলনা করবেন না। মনে রাখবেন, একেক পরিবারের মানুষ একেকভাবে গড়ে ওঠে। কেউ কারও মতো হুবহু হতে পারে না।

স্বামীর সঙ্গে অন্যদের তুলনা
প্রত্যেকেই যে যার মতো। গুণ এবং দোষ মিলিয়েই মানুষ। আপনার স্বামীকে তাই অন্য কারও সঙ্গে তুলনা করবেন না। তার ভালো যে দিকগুলো আছে, সেগুলো ভেবে খুশি থাকার চেষ্টা করুন। আপনি যাদের সঙ্গে আপনার স্বামীর তুলনা করছেন, হতে পারে তাদেরও অনেক কমতি রয়েছে, একসঙ্গে না থাকলে যেগুলো বোঝা যায় না। তাই নিজেকে সংযত করুন। অযথাই অন্যের সঙ্গে নিজের স্বামীর তুলনা করে সংসারে অশান্তি ডেকে আনবেন না।

স্বামীর অতীত নিয়ে কথা শোনানো
অতীত যে কারোই থাকতে পারে। কিন্তু অতীত নিয়ে পড়ে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। তাই স্বামীর যদি কোনো অতীত থাকে, সে বিষয় নিয়ে কথা শোনাবেন না। তিনি হয়তো সব ভুলে নতুন করে শুরু করতে চাইছেন। আপনার উচিত হবে তাকে সাহায্য করা। বারবার অতীতের কথা শোনাতে থাকলে এক সময় সম্পর্ক তিক্ত হতে শুরু করবে।