যখন সবকিছু মনের মতো হয় না, চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যে সমন্বয় ঘটে না, তখনই সূত্রপাত হয় ঝগড়ার। মজার বিষয় হলো, সবচেয়ে কাছের মানুষের সঙ্গেই সবচেয়ে বেশি ঝগড়া হয়। কারণ তার কাছেই আমাদের প্রত্যাশা থাকে বেশি। কিন্তু ঝগড়া করার নিয়মটা আবার কী! ঝগড়া নিয়ম ছাড়া হবে এটিই তো স্বাভাবিক। 

একটি সম্পর্ক ভালো রাখার জন্য মাঝেমাঝে একটু হলেও ঝগড়ার প্রয়োজন আছে। এতে পরস্পরের মনের ক্ষোভগুলো পরিষ্কার হয়ে যায়। এদিকে মনোবিদরা বলছেন। তারা বলছেন যে ঝগড়ার সময়ে এমন কোনো কথা বলা যাবে না যাতে সম্পর্কটাই নষ্ট হয়ে যায়। 

ঝগড়ার সময় মানুষ খুব বেশি ভেবেচিন্তে কথা বলে না। তখন হয়তো এমন কোনো কথা বলে ফেলে যা অপরজনের মনে ভীষণভাবে আঘাত করে। যা সহজে ভোলা যায় না। এরকমটা চলতে থাকলে সম্পর্কটাই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে। একটি সম্পর্ক কিন্তু ভাঙার উদ্দেশ্যে কখনো তৈরি হয় না। দুজন দুজনের হাত ধরে বাকি পথ পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্যে সম্পর্ক শুরু হয়। তাই সামান্য ঝগড়ার কারণে সম্পর্ক নষ্ট হতে দেবেন না। ঝগড়া যদি করতেই হয়, তবে এই ৩ নিয়ম মেনে ঝগড়া করুন-

তার দুর্বলতায় আঘাত করবেন না

হয়তো কখনো সে আপনাকে বিশ্বাস করে নিজের দুর্বলতম বিষয়টি বলেছিলেন। এরপর কখনো ঝগড়া হলে আপনি সেই কথাটিই টেনে আনলেন এবং আঘাত করতে পেরে খুশিও হলেন। কিন্তু তার জীবনের দুর্বল কথাটি, দুঃখ, কষ্ট, লজ্জা কিংবা ব্যর্থতার কথাটি সে আপনাকে ভরসা করে শেয়ার করেছিল। এখন আপনি যদি ঝগড়ার সময় সেই বিষয়টি টেনে আনেন তবে সে তাতে মানসিকভাবে প্রচণ্ড আঘাত পেতে পারে। আপনার প্রতি তার বিশ্বাস বা আস্থা কমে যাবে এবং সম্পর্কটিও নড়বড়ে হয়ে যাবে। বুঝতেই পারছেন, ঝগড়ার সময় ছোট্ট একটি ভুলের প্রভাব কতটা হতে পারে!

বিচ্ছেদের হুমকি দেবেন না

ঝগড়া হলে বেশিরভাগ ব্যক্তিই সঙ্গীকে এই কথা বলে যে, ‘তোমার সঙ্গে আর থাকা সম্ভব নয়’ অথবা বলে ‘আমাকে মুক্তি দাও’। আর এ ধরনের কথা মন থেকে খুব কম মানুষই বলে। শুধু ঝগড়ায় জিততে চেয়ে বা সঙ্গীকে কষ্ট দেওয়ার জন্যই এমনটা বলে থাকে। আপনিও হয়তো মন থেকে বললেন না, কিন্তু আপনার কথাটি সত্যি ধরেই যদি আপনার সঙ্গী বিচ্ছেদের দিকে এগিয়ে যায় তখন আর তাকে দোষ দিতে পারবেন না। তাই বলার আগে অবশ্যই ভেবে বলুন, সত্যি আপনি কী চান।

তৃতীয় ব্যক্তিকে টেনে আনবেন না

ঝগড়ার বেশিরভাগ অংশজুড়ে তাকে তৃতীয় ব্যক্তি। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়ার মধ্যে পরিবারের অন্য সদস্যরাও যোগ দেন। এটি কখনো হতে দেবেন না। কারণ যার পরিবার, তার পক্ষেই কথা বলবে তাতে সে যদি দোষীও হয়ে থাকে। এতে সমস্যা কমার বদলে বরং বাড়ে। তাই সম্পর্ক কিংবা ঝগড়ায় তৃতীয় ব্যক্তি একদমই আসতে দেবেন না।