মানুষের মস্তিষ্কের বিকাশ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া যা গর্ভাবস্থায় শুরু হয় এবং বয়সন্ধিকাল পর্যন্ত চলতে থাকে। জন্মের পর প্রক্রিয়াটি গতি পায় এবং তিন বছর বয়স পর্যন্ত মস্তিষ্ক দ্রুত বিকশিত হয়। এসময় শিশু ভাষা, যোগাযোগ, সামাজিক, মানসিক এবং জ্ঞানীয় দক্ষতা অর্জন করে। সুতরাং, শিশুর জীবনের প্রথম তিন বছর শেখা এবং বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শিশুর প্রথম তিন বছরে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তা আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করতে পারে এবং তাদের স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে পারে। বেশিরভাগ বাবা-মা শিশুর স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য তাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক ক্লাসে ভর্তি করে। এর প্রয়োজন হবে না যদি আপনি নিজেই যত্নশীল হন। শিশুর ব্রেইন উন্নত করতে সহায়ক ৫ কাজ সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক-

জিহ্বা বের করা

আপনি হয়তো এই ক্রিয়াকলাপের গুরুত্ব সম্পর্কে ভাবেননি, কিন্তু এটি আপনার শিশুর খাওয়া এবং কথা বলার বিকাশের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিশুর সামনে এই কাজ আপনি নিজেই করুন। খেলার সময় আপনার জিহ্বাকে বিভিন্ন কোণে আটকে রাখুন এবং শিশুকে এটি অনুকরণ করার সময় দিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্রিয়াকলাপ শিশুকে তার জিহ্বা নিয়ন্ত্রণ অনুশীলন করতে এবং কথা বলার দক্ষতা উন্নত করতে সহায়তা করে।

মেমরি গেম খেলুন

আপনার প্রতিদিনের ব্যস্ততা থেকে কিছু সময় বের করুন এবং আপনার সন্তানের সঙ্গে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির গেম খেলুন। কুইজ, কার্ড এবং ক্রসওয়ার্ড, এই সমস্ত গেম তাদের স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। তাদের প্রশ্ন করুন এবং উত্তর দেওয়ার জন্য সময় দিন। আপনি যদি তাদের ছোটবেলা থেকে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির কাজে নিয়োজিত করেন তাহলে তারা পরবর্তীতে শিক্ষাজীবনে আরও ভালো করবে। এছাড়াও তারা সময়ে সময়ে তাদের স্মৃতি পরীক্ষা করার অভ্যাস গড়ে তুলবে।

বই পড়ায় উৎসাহিত করুন

কোন সন্দেহ নেই যে আপনি যত বেশি পড়বেন, তত স্মার্ট হবেন। ছোটবেলা থেকে তাই শিশুকে বিভিন্ন ঘরানার বইয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিন, তাদের পড়ার উপকরণ দিয়ে ঘিরে রাখুন এবং বইয়ের প্রতি শিশুর আগ্রহ বাড়ানোর জন্য পড়ুন। পড়া দৃষ্টিভঙ্গি এবং শেখার দক্ষতা উন্নত করে। এটি দীর্ঘ সময় ধরে তথ্য মনে রাখতে সাহায্য করে। পড়ার বাইরে আপনি গল্পচ্ছলে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কথা বা ঘটনা জানাতে পারেন। এরপর সেই গল্পের প্রতি শিশুর প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে ভুলবেন না।

গান শুনতে দিন

ছোটবেলা থেকেই তাদের বিভিন্ন ধরনের সংগীতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিন। এটি ভাষা অর্জন এবং পড়ার দক্ষতা বাড়িয়ে তোলে। শিশুর উপযোগী বিভিন্ন গান বা ছড়াগান শিশুর কল্পনার জগত বিস্তৃত করবে। তবে শিশুকে শুনতে দেওয়ার জন্য গান নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। অহেতুক অর্থহীন গান তাকে শুনতে দেবেন না। 

সঠিক পুষ্টি

সঠিক পুষ্টি শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য অপরিহার্য। অল্প বয়স থেকেই পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার দেওয়ার অভ্যাস করতে হবে। সেইসঙ্গে জাঙ্ক ও প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিতে হবে। সামুদ্রিক খাদ্য, শাক, বাদাম, বীজ এবং গোটা শস্য ব্রেইনের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য ভালো।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে এইচএন