বিবাহিত জীবন সুখী করার উপায়
পরস্পরের ভালোলাগা এবং ভালোবাসাকে পুঁজি করে একসঙ্গে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্তর আরেক নামই বিয়ে। দুটি ভিন্ন মানুষ এক হয়ে গড়ে তোলে সংসার। সেই সংসারে সুখ ও শান্তি বজায় থাকলে পৃথিবীর বুকেই স্বর্গ নেমে আসে যেন। আবার সংসারে প্রতিনিয়ত অশান্তি হতে থাকলে জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ। মানুষ তখন বিয়ে সিদ্ধান্তকেই জীবনের অন্যতম ভুল বলে অভিহিত করতে থাকে।
বিয়ের পরে স্বাভাবিকভাবেই সঙ্গীর প্রতি অনেক প্রত্যাশার জন্ম নেয়। সেগুলো পূর্ণ না হলে অভিমান হওয়াটাও স্বাভাবিক। কিন্তু ছোট ছোট এমন অপূর্ণতা জমা হতে থাকলে একদিন তা বিস্ফোরিত হয়। তখন সম্পর্কটি টেকানোই মুশকিল হয়ে পড়ে। বিবাহিত জীবন সুখের করে তোলা কঠিন কিছু নয়। আপনার প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজ, সঙ্গীর প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার সংমিশ্রণ পারে এটি সুখের করে তুলতে। বিবাহিত জীবন সুখের করতে চাইলে আপনাকে করতে হবে এই কাজগুলো-
বিজ্ঞাপন
বিশ্বাস ও ভালোবাসা
সম্পর্কের প্রথম শর্তই হলো বিশ্বাস ও ভালোবাসা। এই দুই বিষয় ছাড়া সম্পর্ক যেন বিষের মতো। বিবাহিত জীবনে বিশ্বাস ও ভালোবাসা না থাকলে পদে পদে হবে ভুল বোঝাবুঝি। দেখা দেবে একে অন্যের প্রতি সন্দেহপরায়ণতা। আর বোঝাই যায়, এরপর সম্পর্কটি কোন দিকে গড়াতে পারে! তাই পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসা ধরে রাখুন। তার ছোটখাট ভুলগুলো ক্ষমা করতে শিখুন। নিজের ভুল থাকলে তাও সহজে স্বীকার করতে শিখুন। এতে সুখী হওয়া সহজ হবে।
চাহিদা পূরণ
সঙ্গী মানেই সুখ ও দুঃখ ভাগ করে নেওয়া। পরস্পরের প্রতি থাকে অনেক আকাঙ্ক্ষা। তাই সঙ্গীর চাহিদার দিকে খেয়াল রাখুন। তার কী দরকার তা জানতে চান। তার আকাঙ্ক্ষাগুলো আপনার সামর্থ্যের মধ্যে থাকলে তা পূরণ করুন। যখন আপনি তার চাহিদা পূরণ করবেন, তখন সেও আপনার চাহিদার দিকে লক্ষ রাখবে। এভাবেই সুখের হয়ে উঠবে সংসার।
ইতিবাচক থাকুন
সুখী হওয়ার অন্যতম উপায় হলো ইতিবাচক থাকা। আপনি যত ইতিবাচক চিন্তা করবেন, তত বেশি সুখী হবেন। সম্পর্কের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতির প্রয়োগ করুন। সঙ্গীর খুঁতগুলো খুঁজে বের না করে তার ভালো দিকগুলো সম্পর্কে বলুন। ছোটখাট আনন্দ কিংবা চমক ভাগ করে নিন। সুখী হবেন।
ভেবেচিন্তে বলুন
যেকোনো কথা একবার বলে ফেললে তা বদলানো সম্ভব হয় না। তাই কখনো রাগ হলেও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন। কারণ রাগের সময়েই আমরা সবচেয়ে অযৌক্তিক বা অপ্রয়োজনীয় কথা বলে ফেলি। যা সঙ্গীর কষ্টের কারণ হতে পারে। পরে ক্ষমা চেয়ে নিলেও কথার আঘাত সহজে দূর হয় না। তাই কথা বলার আগে ভেবেচিন্তে বলুন। কোন কথায় সে খুশি হয়, কোন কথায় কষ্ট পেতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
পরিবারকে গুরুত্ব দিন
বিয়ে মানে শুধু দুইজন মানুষের বন্ধন নয়; বরং দুই পরিবারের বন্ধন। তাই পরস্পরের পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা রাখুন। যদি সঙ্গীর পরিবারের কোনো সদস্যকে পছন্দ না-ও করেন তবে তা প্রকাশ করবেন না। কারণ নিজের আপনজন সম্পর্কে নেতিবাচক কথা কেউ ভালোভাবে নেয় না। নিজেদের ভেতর সম্পর্ক ভালো রাখতে চাইলে অন্যদের নিয়ে যতটা সম্ভব কম আলোচনা করুন। তাদের দোষগুলো ঢেকে রেখে গুণ নিয়ে কথা বলতে পারেন।
সিদ্ধান্তকে সম্মান জানান
অনেকে আছেন যারা শুধু নিজের সিদ্ধান্তকেই সঠিক মনে করেন। এরকমটা একদমই করতে যাবেন না। কারণ আপনি সব সময় সঠিক না-ও হতে পারেন। সঙ্গীর সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। সবচেয়ে ভালো হয় দু’জন মিলে আলোচনা করে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিলে। তার কোনো সিদ্ধান্ত পছন্দ না হলে চিৎকার-চেচামেচি করবেন না। ঠান্ডা মাথায় তাকে বুঝিয়ে বলুন কেন তার সিদ্ধান্তটি সঠিক নয়। দু’জনের মধ্যে সহনশীলতা থাকলে বিবাহিত জীবন সুখের হয়ে উঠবে।
এইচএন/এএ