ঘূর্ণিঝড়ের সময় করণীয়
কয়েক বছর ধরে কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে। সে কারণে এদেশের উপকূলবর্তী মানুষ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। আজ বুধবার (২৬ মে) বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়তে পারেন চট্টগ্রাম, মোংলা ও খুলনার উপকূলবর্তী মানুষ।
ঘূর্ণিঝড়ের আগে যা করবেন
বিজ্ঞাপন
উঁচু স্থানে ঘর তৈরি করুন
গ্রামাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় থেকে বাঁচার জন্য উঁচু স্থানে ঘর তৈরি করা উচিত। বিশেষজ্ঞরা বলেন, উপকূলবর্তী গ্রামাঞ্চলের মানুষের ঘূর্ণিঝড় থেকে সুরক্ষা পেতে অবশ্যই উঁচু স্থানে ঘর তৈরি করা উচিত। কারণ ঘূর্ণিঝড়ের সময় নিচু স্থানে থাকা ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সঙ্গে রাখুন রেডিও
তারবিহীন একপাক্ষিক যোগাযোগের মাধ্যম রেডিও। ঘূর্ণিঝড়ের আগে যথাসময়ে খবরাখবর পেতে দুর্যোগ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় সবসময় জেলেদের নৌকা, লঞ্চ ও ট্রলারসহ বিভিন্ন জলযানে যাতায়াতের সময় রেডিও রাখার পরামর্শ দেয়। নদী বা সাগরে অবস্থানের সময় রেডিওর খবর শোনার অভ্যাস তৈরি করুন।
শুকনো খাবার সঙ্গে রাখুন
ঘূর্ণিঝড়ের সময় খাবার পাওয়া যাবে না। তাই আগে থেকে শুকনো খাবার রেখে দিন। মুড়ি, চিড়া, বিস্কুটসহ আরও বিভিন্ন শুকনো খাবার রেখে দিলে দুর্যোগের সময় সেগুলো খেয়ে দিন কাটানো সম্ভব।
প্রাথমিক চিকিৎসার উপকরণ রাখুন
দুর্যোগের সময় হাতের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসার উপকরণ রাখুন। অনেক সময় দেখা যায় এসব উপকরণ না থাকার ফলে দুর্যোগের সময় অসুস্থ ব্যক্তিকে নিয়ে বিপদে পড়ে পরিবার। তাই দুর্যোগ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় ঘূর্ণিঝড়ের আগে প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম সঙ্গে রাখার পরামর্শ দিয়েছে।
ঘরের অবস্থা পরীক্ষা করুন
ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর আপনার ঘরের অবস্থা পরীক্ষা করে দেখুন। ঘরের সুরক্ষার জন্য মাটিতে খুঁটি পুঁতে রাখুন। এরপর সেগুলোর সঙ্গে ঘরের বিভিন্ন অংশ বেঁধে রাখুন। যাতে ঘূর্ণিঝড়ের সময় ঘর উড়ে না যায়।
ঘূর্ণিঝড়ের সময় যা করবেন
অস্থির হবেন না
বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড়ের সময় মানুষ ধৈর্য হারিয়ে ফেলেন। অস্থির হয়ে ছোটাছুটি করেন। কিন্তু দুর্যোগের সময় ধৈর্যহীনতা অনেক সময় বিপদের কারণ হয়। তাই ঘূর্ণিঝড় শুরু হলে অস্থির না হয়ে শান্ত থাকুন। ঠান্ডা মাথায় নিরাপদ স্থান খুঁজুন।
সতর্ক থাকুন
ঘূর্ণিঝড় যখন উপকূলে আঘাত হানে তখন সতর্ক থাকুন। পথে-ঘাটে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটি, ছিঁড়ে যাওয়া তার ও আশপাশের জলাবদ্ধ এলাকা এড়িয়ে চলুন।
আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করুন
ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশপাশের আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করুন। সেখানকার স্বেচ্ছাসেবকদের কথা মেনে চলুন। আশ্রয়কেন্দ্রের দরজা-জানালা খোলা রাখবেন না। কারণ বজ্রপাতের কারণে এতে প্রাণহানির আশঙ্কা থাকে।
ঘূর্ণিঝড়ের পর যা করবেন
গাছপালা সরিয়ে ফেলুন
ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে এলাকার রাস্তায় গাছপালা পড়ে থাকবে। সেগুলো দ্রুত সরিয়ে ফেলা উচিত। এর মধ্য দিয়ে রেডক্রিসেন্টসহ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও এনজিওগুলো সহজেই সাহায্য নিয়ে এলাকায় পৌঁছতে পারবে।
ঘরে ফিরতে সহায়তা করুন
সক্ষমতা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত মানুষকে ঘরে ফিরিয়ে আনুন। সম্ভব হলে অন্য গ্রামের মানুষকে আশ্রয় দিন। সরকারি প্রতিষ্ঠান বা এনজিওর জন্য বসে থাকবেন না।
উদ্ধার করুন
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করুন। তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ান। এসব মানুষের চিকিৎসার প্রয়োজন হলে হাসপাতালে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।
শুরু করুন চাষাবাদ
দ্রুত উৎপাদন করা যায় ফসলের চাষাবাদ শুরু করুন। কেননা ঘূর্ণিঝড়ের পর খাদ্যাভাব দেখা দেয়। তাই নিজের পরিবার ও গ্রামের মানুষের খাবারের চাহিদা মেটানোর কাজ শুরু করুন।
এইচএকে/আরআর/এএ