দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বাঁচার সঙ্গে আমাদের জীবনযাপনের ধরন সম্পূর্ণভাবে জড়িত। আমরা যে খাদ্য গ্রহণ করি বা প্রতিদিন যেসব অভ্যাস মেনে চলি তার সমষ্টিই হলো শারীরিকভাবে আমাদের ভালো কিংবা মন্দ থাকা। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন মেনে চলার অর্থই হলো দীর্ঘ জীবন সুস্থভাবে বাঁচতে পারা। সেজন্য আপনাকে কী করতে হবে? খেয়াল রাখতে হবে কিছু বিষয়ের প্রতি, সেগুলো যথাযথ মেনে চলতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

১. ঘুমকে প্রাধান্য দেওয়া

ঘুমের গুরুত্ব হলো একটি আন্ডাররেটেড শব্দ যেখানে ফোন এবং বিনোদন ডিভাইসগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি নিয়মিত অংশ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বাঁচার জন্য এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর মধ্যে একটি। কার্যকরী অভ্যাসের মধ্যে রয়েছে স্ক্রিন টাইম কমানো, ঘুমানোর আগে চাপ এড়ানো এবং রাতের ঘুমের রুটিন বজায় রাখা।

২. মস্তিষ্কের কার্যকলাপ

মানসিকভাবে সক্রিয় থাকা দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বাঁচার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেয়েছেন যে, আরও বেশি শিক্ষা গ্রহণের ফলে উচ্চতর জ্ঞানগত রিজার্ভ হয়। বিভিন্ন ধরনের ক্লাস, শখ বা ক্লাবের কাজে জড়িত থাকলে তা জ্ঞানীয় দক্ষতা বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে। ধাঁধা সমাধান করার চেষ্টা করুন, বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে মাঝে মাঝেই দাবা খেলতে বসে যান। এগুলো মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়াতে কাজ করবে।

৩. ধ্যান

ধ্যান আমাদের শারীরিক স্বাস্থ্যকে অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যের সঙ্গে মিলিত করে। এটি মন এবং শরীরের মধ্যে একটি সিম্ফনি তৈরি করে। নিয়মিত ধ্যান চাপ কমাতে এবং দীর্ঘায়ু উন্নত করতে সাহায্য করে। সর্বোত্তম সুবিধার জন্য ঘুম থেকে ওঠার পরে বা বিছানায় যাওয়ার আগে ধ্যান এবং আপনার শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন।

৪. শ্রবণ সহায়ক

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইন্দ্রিয় দুর্বল হতে শুরু করে। শ্রবণ ক্ষমতা তার মধ্যে অন্যতম। প্রয়োজনে শ্রবণযন্ত্র পরার পরামর্শ দেওয়া হয়, কারণ এটি মস্তিষ্কের নানা ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। শ্রবণ যন্ত্রের সঠিক ব্যবহার মস্তিষ্ক গুরুত্বপূর্ণ উদ্দীপনা পাওয়াটা নিশ্চিত করে।

৫. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া

আমরা যা খাই তাই ফেরত পাই। দীর্ঘ সুস্থ জীবন অর্জনের জন্য আপনার থালায় পুষ্টিকর খাবার রাখুন। পুষ্টিকর খাদ্য বজায় রাখা জরুরি যদি আপনি বৃদ্ধ হয়েও উদ্যমী এবং সুস্থ থাকতে চান। এর মধ্যে রয়েছে ফল, শাক-সবজি এবং দানা শস্য মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এমনটাই পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

৬. নিয়মিত ব্যায়াম

ওয়ার্কআউট কোনো শখ নয়, এটি আপনার শরীরের প্রয়োজন। ব্যায়াম যেকোনো বয়সে গুরুত্বপূর্ণ। অল্প বয়সে শক্তি প্রশিক্ষণ এবং কার্ডিও শুরু করুন। অন্তত ৩০ মিনিটের প্রতিদিনের শারীরিক ক্রিয়াকলাপ, যেমন বাগান করা, হাইকিং বা যোগব্যায়াম আপনাকে বার্ধক্য কমাতে সাহায্য করবে এবং প্রকৃতপক্ষে আপনার চেয়ে কম বয়সী দেখাবে।

৭. সামাজিক থাকা

সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকা স্বাস্থ্যকেও উন্নীত করে। ইভেন্টে অংশগ্রহণ করা এবং সামাজিক থাকা আমাদের মনকে তীক্ষ্ণ রাখতে এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। পারিবারিক নৈশভোজ বা সাপ্তাহিক কলের মতো সাধারণ অভ্যাসগুলো সুস্থ মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বজায় রাখতে এবং দীর্ঘজীবী হতে উপকারী হতে পারে।

এইচএন