ইলিশ মাছের নাম শুনলে জিভে পানি আসে না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া যাবে না। সর্ষে ইলিশ, ভাপা, ইলিশ পাতুরি, দই ইলিশ, ইলিশের টক, ইলিশের ডিম ভাজা আরও অনেক রেসিপি হয়েছে যার তার তালিকা করে শেষ করা যাবেনা। 

বাঙালির ইলিশ প্রেম যতটা খাঁটি, ইলিশের বাঙালি প্রেমও কিন্তু ঠিক ততটাই। আমরা যেমন ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছি ইলিশকে। ইলিশও নিজের পুষ্টিগুণে আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষা করে। খাবারের তালিকায় ইলিশ থাকলে স্বাদ রক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্যরক্ষাও হয়।

ইলিশ মাছের অনেক পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এর উপকারিতাগুলো বিস্তারিতভাবে নিচে তুলে ধরা হলো:

হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা: ইলিশ মাছে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম। অন্য দিকে, প্রচুর মাত্রায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। তাই এই মাছ খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে হৃদ‌্‌যন্ত্রও সুস্থ থাকে।

রক্ত সঞ্চালন: সামুদ্রিক মাছে থাকা ইপিএ ও ডিএইচএ ওমেগা-থ্রি-অয়েল শরীরে ইকসিনয়েড হরমোন তৈরি হওয়ায় বাধা দেয়। এই হরমোনের প্রভাবে রক্ত জমাট বেঁধে শিরা ফুলে যায়। ইলিশ মাছ খেলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। থ্রম্বসিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।

বাতের ব্যথা: ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের সঙ্গে অস্টিওআর্থারাইটিসের সম্পর্ক রয়েছে। প্রতি দিনের ডায়েটে সামুদ্রিক মাছ থাকলে বাতের ব্যথা, গাঁট ফুলে গিয়ে যন্ত্রণার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়। ইলিশে ওমেগা থ্রি-তে ভরপুর থাকে।

মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়: মস্তিষ্কের ৬০ শতাংশই তৈরি ফ্যাট দিয়ে। যার অধিকাংশই ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ইলিশ মাছ খেলে বয়স কালে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কমে। শিশুদের মস্তিষ্ক গঠনেও সাহায্য করে ডিএইচএ। অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভিটি ডিজঅর্ডার রোধ করতে পারে ইলিশ মাছ। স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, পড়াশোনায় মনোযোগও বাড়ায়।

চোখের স্বাস্থ্য: তেলযুক্ত মাছ খেলে চোখের স্বাস্থ্য ভালো থাকে, চোখ উজ্জ্বল হয়। বয়সকালে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসার মোকাবিলা করতে পারে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ইলিশ মাছের মধ্যে থাকা ভিটামিন এ অন্ধত্বের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

ফুসফুস ভালো রাখে: সামুদ্রিক মাছ ফুসফুস ভাল রাখতে কার্যকর। শিশুদের ক্ষেত্রে হাঁপানি রোধ করতে পারে ইলিশ মাছ। যাঁরা নিয়মিত মাছ খান, তাঁদের ফুসফুস অনেক বেশি শক্তিশালী হয়।

সুতরাং, সঠিকভাবে ও পরিমিত পরিমাণে ইলিশ মাছ খাওয়া হৃদরোগীদের জন্য স্বাস্থ্যকর হতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া সবসময় উত্তম।

এমআইকে