বর্তমানে বেশিরভাগ পরিবারেই স্বামী-স্ত্রী দুজনে চাকরি করে থাকেন। তাই তারা নিজের সন্তানকে বেশি সময় দিতে পারেন না। ফলে শিশুর সঙ্গে মানসিক বন্ধন মজবুত হয় না। সে ধীরে ধীরে মা-বাবার থেকে দূরে চলে যায়। নিজের ভালো-মন্দ কিছুই মা-বাবার সঙ্গে শেয়ার করে নিতে চায় না।

তাই সমস্যা এতদূর গড়িয়ে যাওয়ার আগেই সাবধান হতে হবে। সেক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব নিজের সন্তানের সঙ্গে বন্ধন বাড়ানোর কাজে লেগে পড়তে হবে। আর সেই কাজে আপনাকে সাহায্য করতে পারে এই পরামর্শগুলো।

সারাদিন অফিসে গাধার খাটনি খেটে ক্লান্ত। তবে তারপরও রাতে বাড়িতে আসার পর অবশ্যই সন্তানের সঙ্গে সময় কাটান। এই সামান্য কাজটা করলেই সন্তানের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক দৃঢ় হবে। সে বুঝতে পারবে যে আপনাদের কাছে তার গুরুত্ব ঠিক কতটা। এক্ষেত্রে এই কৌশলগুলো মেনে চুলন।

নিজের সারাদিনের কথা বলুন​

বাড়িতে আসার পর সন্তানকে নিজের সারাদিনের কর্মকাণ্ডের কথা বলুন। আপনি কীভাবে অফিস গেছেন, কী কী কাজ করেছেন, কীভাবে ফিরেছেন– সবই তাকে জানাতে হবে। তাহলেই দেখবেন সেও আপনাকে নিজের সারাদিনের সব ঘটনা একবারে ঠিক ঠিক ভাবে বলবে। তার কথা শোনার পর প্রয়োজন মনে হলে কিছু পরামর্শও দিতে পারেন। তাহলেই ধীরে ধীরে আপনার সঙ্গে তার বন্ধন আরও কয়েকগুণ পোক্ত হয়ে উঠবে।

খেলতে যান​

বাচ্চারা খেলতে ভালোবাসে। এটাই তাদের মনোরঞ্জনের অন্যতম উপায়। তাই এবার অফিস থেকে বাড়ি ফিরে আসার পর অবশ্যই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট খেলুন। তার পছন্দমতো খেলাই আপনাকে খেলতে হবে। আর যেই যেই দিন আপনার ছুটি থাকবে, সেই সেই দিনগুলিতে অবশ্যই তাকে নিয়ে মাঠে যান। সেখানে সমবয়সীদের সঙ্গে তাকে মিশিয়ে দিন। কিংবা আপনিই তার সঙ্গে খেলুন। তাতেই আপনাদের মধ্যে দূরত্ব ঘুচে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সন্তানের কাছেও পরামর্শ চান​

সে ছোট। সেই কারণে তার সব কথা ফেলে দেবেন না। তাতে সন্তানের সঙ্গে আপনাদের দূরত্ব বাড়বে। তাই এই বদভ্যাস শুধরে নিন। বরং চেষ্টা করুন ছোটখাট বিষয়ে তার পরামর্শ নেওয়ার। যেমন ধরুন, তাকে আপনি আজ বাড়িতে কী রান্না হবে, এই বিষয়টা জিজ্ঞেস করতেই পারেন। তারপর তার মতামত মেনে নিয়ে রান্না হোক বাড়িতে। তাহলেই সন্তান বুঝবে তার মতামতও আপনাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারপরই আপনাদের মধ্যে ভালোবাসার বন্ধন আরও পোক্ত হবে।

ভালো কথা বলুন​

আপনার সন্তান ভুল করতেই পারে। আপনিও তো রোজ কত ভুল করেন! তাই সন্তান ভুল করলেই তাকে নেতিবাচক কথা বলবেন না। বরং তাকে ভুল শুধরে নিয়ে জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন। সে যে পাহাড় কেটে নিজের জন্য রাস্তা তৈরি করে নিতে পারবে, এই বিশ্বাসটা তার মধ্যে রোপন করে দিতে হবে। তাহলেই দেখবেন সে আপনাদের নিজের মণি কোঠায় স্থান দেবে। তারপর আপনারা সকলে মিলে হেসেখেলে জীবন কাটাতে পারবেন।

এমএ