আধুনিক জীবনযাপনের ফলস্বরূপ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যদিও এই সমস্যাকে নিরীহ বলে মনে হতে পারে, কিন্তু এটি গুরুতর পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে। লিভার শরীরের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ। এটি ডিটক্সিফিকেশন এবং চর্বি বিপাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফ্যাটি লিভার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনো স্পষ্ট লক্ষণ ছাড়াই নিঃশব্দে বিকশিত হয়। 

কীভাবে বুঝবেন যে আপনার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে? শুধু কী খাচ্ছেন তা নয়, কীভাবে জীবনযাপন করেন সেসবও এক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। আপনি যদি লিভারের স্বাস্থ্য সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হন তবে এই নির্দেশিকাটি আপনার জন্য। এখানে সাতটি অভ্যাস রয়েছে যা ফ্যাটি লিভারের কারণ হতে পারে।

১. অলস জীবনযাপন

কর্মক্ষেত্রে হোক বা বাড়িতে, আপনি যদি দিনের বেশিরভাগ সময় বসে কাটান তাহলে আপনার ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার অভ্যাস মেটাবলিজমকে ধীর করে দেয় এবং লিভারে চর্বি জমতে সাহায্য করে। এই নড়াচড়ার অভাব শরীরের চর্বিকে কার্যকরভাবে ভাঙার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে, যা ধীরে ধীরে লিভারের ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়।

২. উইকএন্ড ফাস্ট ফুড

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ফাস্ট ফুড খাওয়ার অভ্যাস আছে অনেকেরই, তবে অতিরিক্ত খাওয়া ক্ষতিকারক হতে পারে। ফাস্ট ফুড অস্বাস্থ্যকর চর্বি, শর্করা এবং পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট দিয়ে তৈরি হয়, যা লিভারকে চাপ দিতে পারে এবং চর্বি তৈরিতে সাহায্য করে।

৩. অ্যালকোহল সেবন

নিয়মিত অ্যালকোহল গ্রহণ করলে তা আপনার লিভারের ক্ষতি করতে পারে। লিভার অ্যালকোহলকে বিপাক করে এবং অতিরিক্ত গ্রহণ এর প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতাকে ছাপিয়ে যেতে পারে, যার ফলে চর্বি জমে যায়। আপনার লিভারকে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য এই অভ্যাস ত্যাগ করা জরুরি।

৪. সবজি এড়িয়ে যাওয়া

খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত শাক-সবজি না রাখলে তা ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। শাক-সবজি ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে সমৃদ্ধ যা হজমে সহায়তা করে। এ ধরনের খাবার চর্বি জমা হওয়া রোধ করে লিভারের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।। খাবারে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি যোগ করা হলো একটি সুস্থ লিভার বজায় রাখার চাবিকাঠি।

৫. খাওয়ার পর বসে থাকা

খাওয়ার পরপরই বসে থাকার অভ্যাস হজমে বাধা দিতে পারে এবং ফ্যাটি লিভারে অবদান রাখতে পারে। খাবারের পরে নিষ্ক্রিয়তা ক্যালোরি বার্নিং এবং চর্বি বিপাককে ধীর করে দেয়, যা লিভারে চর্বি সঞ্চয়ের দিকে নিয়ে যায়। খাবারের পর অল্প হাঁটার অভ্যাস হজমশক্তি উন্নত করে এবং চর্বি জমা কমাতে পারে।

৬. শারীরিক কার্যকলাপের অভাব

শুধু খাবার নয় - ব্যায়ামের অভাবও ফ্যাটি লিভারের বিকাশে ভূমিকা রাখে। নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ বিপাক বৃদ্ধি করে এবং চর্বি সঞ্চয় রোধ করে। লিভারের স্বাস্থ্য বাড়াতে আপনার দৈনন্দিন রুটিনে ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করুন।

৭. লেট-নাইট ডিনার

রাত ৮টার পর রাতের খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা শরীরের চর্বি বিপাক এবং হজম প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে। গভীর রাতের খাবার লিভারে ফ্যাট হিসাবে জমা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, এটি ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়ায়। সন্ধ্যার আগে খাওয়ার লক্ষ্য রাখুন এবং হালকা খাবার বেছে নিন।

এইচএন