স্ট্রেসের কারণে বেশি খাওয়ার মতো সমস্যা যে কারো হতে পারে। সাধরণত অতিরিক্ত মানসিক চাপ, উদ্বেগ বা অন্যান্য মানসিক সমস্যার ফলে সাময়িক আরাম বা সান্ত্বনার জন্য খাবারের দিকে আকর্ষণ বোধ করে। যে কারণে অতিরিক্ত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে। এ ধরনের অভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য সুফল বয়ে আনে না। কারণ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি খাবার খেলে তা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।

স্ট্রেস ইটিং কেন ঘটে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ট্রেস আমাদের শরীরে বিভিন্ন রাসায়নিক বা হরমোন নিঃসরণ করে যা স্ট্রেস ইটিংয়ের কারণ হতে পারে। শরীরে উচ্চ-কর্টিসল,  ইনসুলিন এবং ঘেরলিনের কারণে আপনি ক্ষুধার্ত বোধ করতে পারেন। হার্ভার্ড হেলথ রিপোর্ট অনুসারে প্রায় ২৭% প্রাপ্তবয়স্করা বলে যে তারা স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশি খেয়ে থাকে।

বিএমসি পাবলিক হেলথ-এ প্রকাশিত একটি জার্মান অনলাইন সমীক্ষা চাপের পরিস্থিতিতে মানুষের খাওয়ার অভ্যাসের দিকে নজর দিয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন যে, চকোলেট এবং কফি সবচেয়ে জনপ্রিয় আরামদায়ক খাবার, তবে কেউ কেউ স্বাস্থ্যকর বিকল্প হিসেবে ফল এবং চা পছন্দ করে। গবেষণায় প্রায় অর্ধেক অংশগ্রহণকারী স্ট্রেস বোধ করার সময় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খাবার গ্রহণ করে, এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর এবং অস্বাস্থ্যকর দুই ধরনের খাবারই খেতে দেখা গেছে।

স্ট্রেস ইটিং-এর কারণ

মানসিক ট্রিগার: স্ট্রেস, উদ্বেগ, দুঃখ বা একঘেয়েমি দূর করার জন্য খাওয়ার তাগিদকে ট্রিগার করতে পারে।

হরমোনের পরিবর্তন: স্ট্রেস হরমোনের পরিবর্তন হতে পারে যা ক্ষুধা এবং খাবারের প্রতি আকাঙ্ক্ষাকে প্রভাবিত করে।

সামাজিক প্রভাব: সহকর্মীদের চাপ বা সামাজিক পরিস্থিতিও স্ট্রেস ইটিং-এ অবদান রাখতে পারে।

অতীতের অভিজ্ঞতা: খাবার এবং আরামের মধ্যে পূর্ববর্তী সম্পর্ক স্ট্রেস ইটিং-এর অভ্যাসকে প্রভাবিত করতে পারে।

স্ট্রেস ইটিং কীভাবে শরীরকে প্রভাবিত করে

স্ট্রেস ইটিং আমাদের শরীরকে বিভিন্ন উপায়ে প্রভাবিত করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:

* ওজন বৃদ্ধি এবং সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সমস্যা

* পুষ্টির ভারসাম্যহীনতা

* অপরাধবোধ, লজ্জা এবং মানসিক প্রভাব।

আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (এপিএ) মতে, প্রাপ্তবয়স্করা যারা স্ট্রেসের ফলে বেশি খেয়ে থাকেন তারা অলস বোধ করা এবং শরীরে অস্বস্তি বোধ করার মতো লক্ষণ অনুভব করতে পারে।

স্ট্রেস ইটিং-এর সমাধান

* মানসিক চাপগুলো সামলে নেওয়া, যেগুলো স্ট্রেস ইটিং-এর কারণ হতে পারে।

* ব্যায়াম, ধ্যান বা শখের মতো মানসিক চাপ মোকাবিলা করার জন্য খাওয়া বাদে অন্য কোনো কাজ করা।

* শরীরের ক্ষুধার সংকেতের দিকে মনোযোগ দেওয়া এবং আবেগপ্রবণ না হয়ে মন দিয়ে খাওয়া।

* অন্তর্নিহিত মানসিক সমস্যাগুলো সমাধান করতে একজন থেরাপিস্ট বা পরামর্শদাতার সঙ্গে কথা বলা।

* পুষ্টিকর খাবার মজুদ করা এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা।

এইচএন