যদি ভেবে নেন, এ কাজ আপনাকে দিয়ে হবে না, তবে তা সত্যিই হবে না। মনে যদি আত্মবিশ্বাস থাকে— আমি পারবো তাহলে সত্যিই তা সম্ভব। এই যে মনের উপর আস্থা সেটাই  আত্মবিশ্বাস। 

ব্যক্তি বা পেশাগত জীবনে এগিয়ে চলার জন্য নিজের উপর এই বিশ্বাস জরুরি।

অনেকেই ছোট থেকে অভিভাবকদের মুখে শুনে বড় হয়েছেন, তোমার দ্বারা হবে না। তুলনা টানা হয়েছে অন্যদের সঙ্গে। কখনও বাবা কিংবা মা নিজেই বলেছেন, আমি এত নম্বর পেয়েছি, তুই করে দেখা। কিন্তু ছোট থেকেই অভিভাবকদের উচিত, সন্তানের বড় হওয়ার পথে এমন প্রতিবন্ধকতা যাতে না আসে, তা দেখা।

আত্মবিশ্বাস বাড়াবেন কী ভাবে?

» নিজের প্রতি বিশ্বাস নিজেকেই বাড়াতে হবে। সে জন্য অনুপ্রেরণামূলক কথন শুনতে পারেন। যে সমস্ত মানুষ তাদের জীবনে অনেক ঝড়-ঝাপটা পেরিয়ে বড় হয়েছেন, তাদের জীবনী আপনাকে উৎসাহিত করতে পারে। বিভিন্ন মনীষী থেকে ব্যবসায়ী, বিজ্ঞানী এমন অনেকে আছেন যারা দারিদ্র, হাজারও প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে সফল হয়েছেন। তারা যদি পারেন আপনি বা পারবেন না কেন? ভাবলেই, মনের সাড়া পাবেন।

» ‘আমি পারব’। এই কথাটা নিজের মনকে বার বার বলুন। ব্যক্তিগত জীবনের ঝড় ঝাপটা হোক বা পেশাগত জীবনের লক্ষ্যপূরণ, নিজেকে বলুন পারতেই হবে। নিজেকে বোঝান, কোনও কাজ যখন অসম্ভব নয়, তখন কিছুতেই হেরে যাবেন না। শুধু ভাবলে হবে না, সমস্যার মোকাবিলার পথ বের করতে হবে। লক্ষ্যপূরণে বাধা থাকবেই। সেই বাধা একমাত্র টপকানো যাবে নিজের প্রতি বিশ্বাস থাকলে।

» পড়াশোনা, শিক্ষা কিন্তু আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির সহায়ক হতে পারে। জ্ঞানার্জন শুধু পুঁথিগত বিদ্যা দিয়ে হয় এমনটা নয়, দৈনন্দিন জীবন থেকে প্রতি মুহূর্তে শেখা যায়। সেই শিক্ষাগ্রহণ জরুরি। প্রতিটি মানুষের গুণ যেমন থাকে, তেমন খামতি থাকে। নিজের খামতি মেনে নেওয়ার মধ্যে কোনও দুর্বলতা নেই। বরং সেই খামতি পূরণের চেষ্টাই আপনার বিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে।

» আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করুন। হয়তো ইংরেজি ঝরঝরে বলতে পারেন না। কিংবা একলা ট্রেনে করার কথা ভাবলেই মনে হয়, একা পারব না। লক্ষ্য স্থির করুন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ইংরেজি বলা অভ্যাস করুন। প্রথমে চার লাইন। সেটা বলতে পারলেই দেখবেন মনে বিশ্বাস আসছে। তারপর ৬ লাইন, তারপর ১০ লাইন। এভাবে এগোতে থাকুন। বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রেও তাই। প্রথমে দু’টি স্টেশন ট্রেনে চেপে যান। একবার সফল হলেই দেখবেন, পরের ধাপ সহজ হয়ে যাচ্ছে।

» ধ্যানের অভ্যাস মন কেন্দ্রীভূত করতে ও শান্ত হতে সাহায্য করে। এতে মনের শক্তি বাড়ে। নিয়মিত ধ্যানের অভ্যাসও কিন্তু মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

» নিজে অন্যের সঙ্গে তুলনা টানবেন না। ভাববেন না, একই কাজ দু’জনে শিখতে শুরু করলেন। অথচ আর একজন দিব্যি করতে পারছে, আপনি পারছেন না। এ নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগার কোনও মানে হয় না। যে কোনও কাজ আয়ত্ত করতে এক একজনের এক একরকম সময় লাগে। একেবারে না হলে বার বার চেষ্টা করতে হবে।

এমএসএ