পালস অক্সিমিটার কীভাবে ব্যবহার করবেন? জেনে নিন সঠিক পদ্ধতি
করোনাভাইরাস মহামারিতে যেসব নতুন জিনিস আমাদের সঙ্গী হয়ে উঠেছে তার একটি হলো পালস অক্সিমিটার। শুরুর দিকে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকলেও প্রয়োজনীয় জিনিসের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। সেই তালিকায় যোগ হয়েছে এই পালস অক্সিমিটার। এই যন্ত্রের কাজ সম্পর্কে এখন প্রায় সবাই জানেন। শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাত্রা মাপার কাজে লাগে এটি।
পাল্স অক্সিমিটারে আঙুল রাখার কিছুক্ষণ পর দুটি সংখ্যা দেখতে পাবেন। এর মধ্যে একটি আপনার শরীরের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা কতখানি তা দেখাবে এবং অন্যটি দেখাবে পালস রেট। এই মাত্রা দেখেই বুঝতে পারবেন আপনার শরীর কতখানি সুস্থ আছে, বাড়তি চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কি-না।
বিজ্ঞাপন
করোনাভাইরাস প্রায় প্রতিদিনই তার চরিত্র পরিবর্তন করছে। নতুন নতুন উপসর্গ দেখা দেওয়াতে অনেকেই আক্রান্ত হলেও টের পাচ্ছেন অনেক দেরিতে। আবার হুটহাট অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এমন অবস্থায় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা জানা থাকলে চিকিৎসা গ্রহণ সহজ হয়। স্বাভাবিক অবস্থায় শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা ৯৫ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে। আপনার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা এর নিচে নেমে গেলে কী করবেন কিংবা অক্সিজেন মাপার যন্ত্র ঠিকভাবে কাজ করছে কি-না কীভাবে বুঝবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
শরীরের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা ৯৪ এর নিচে নেমে গেলে সতর্ক হোন। এর অর্থ হতে পারে যে আপনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত এবং আপনার ফুসফুস সংক্রমিত হয়েছে। এমনটা হলে পেটের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে আরেকবার অক্সিমিটারে মেপে দেখতে হবে। এতে অক্সিজেনের মাত্রা বাড়তে পারে।
শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে সঙ্গে সঙ্গে উদ্বিগ্ন হবেন না। কিছুক্ষণ স্থির থাকার চেষ্টা করুন। কিছুক্ষণ পর আবার পালস অক্সিমিটারে মেপে দেখুন। দ্বিতীয়বারেও একই ফল এলে যন্ত্রটি খুলে এমন একজনের আঙুলে মেপে দেখুন, যিনি আপাতত সুস্থ। যদি তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক দেখায় তবে বুঝবেন যন্ত্রটি ঠিকভাবে কাজ করছে।
একটি বিষয়ে খেয়াল রাখবেন, আপনি যে আঙুলে যন্ত্রটি ব্যবহার করছেন তাতে মেহেদি, নেইলপালিশ কিংবা ট্যাটু যেন না থাকে। এগুলোর কারণে অনেক সময় সংখ্যা ভুল দেখাতে পারে। তাই সঠিক মাত্রা জানার জন্য আঙুল পরিষ্কার রাখুন।
অনেক সময় অতিরিক্ত জ্বরের কারণে শরীরে কাঁপুনি দেখা দিতে পারে। তখন স্থির থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে পালস অক্সিমিটার সঠিকভাবে কাজ না-ও করতে পারে। শরীর স্থির থাকলেই কেবল এই যন্ত্র ব্যবহার করুন। হাঁটাচলা অবস্থায় এটি ব্যবহার করবেন না। এতে সঠিক ফল না-ও পেতে পারেন।
পালস অক্সিমিটারে মাপার পরে আপনার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কম দেখালে একবার হেঁটে নিন। এরপর আরেকবার মাপুন। যদি শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা বেড়ে যায় তাহলে যন্ত্র ঠিকভাবে কাজ করছে না। তাই শুরুতেই উদ্বিগ্ন না হয়ে ধৈর্য ধরতে হবে।
কোনো ঘুমন্ত ব্যক্তির শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মেপে দেখতে যাবেন না। কারণ এক্ষেত্রে সঠিক ফল না আসার সম্ভাবনা বেশি। ঘুমের ক্ষেত্রে সমস্যা আছে যাদের, ঘুমের সময় তাদের শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা অনেকটাই কমে যায়। এটি গুরুতর কিছু নয়।
শুধু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেই নয়, বরং আরও অনেক অসুখের ক্ষেত্রে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে পারে। হতে পারে তা হাঁপানি রোগী কিংবা ধূমপায়ী ব্যক্তির ক্ষেত্রে। তাই ধূমপান বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন। পাশাপাশি অন্য সব অসুখের ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকুন।
এইচএন/এএ