বর্ষাকালের শুরুতে অনেকেরই জ্বর, পাতলা পায়খানা, বমি এবং শরীরে ব্যথার মতো অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। সাধারণ সর্দি-জ্বর হলে তা ঘরোয়া উপায়েই সারিয়ে তোলা সম্ভব। তবে মারাত্মক অবস্থা হলে তখন দ্রুত চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে। কিন্তু আপনি কীভাবে বুঝবেন যে আপনার লক্ষণগুলো মৌসুমী জ্বরের মতো সাধারণ কিছু না ডেঙ্গুর মতো গুরুতর কিছু? 

বর্ষার সাধারণ জ্বর এবং ডেঙ্গুর মধ্যে পার্থক্য

যদিও এসময়ের জ্বর এবং ডেঙ্গু উভয় ক্ষেত্রেই জ্বর, ব্যথা এবং ক্লান্তির মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তবে দুটি অবস্থার মধ্যে মূল পার্থক্য রয়েছে। সঠিক নির্ণয় এবং কার্যকর চিকিৎসার জন্য এই পার্থক্যগুলে বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। 

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ

উচ্চ জ্বর: একটি আকস্মিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, প্রায়ই ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে।

গুরুতর মাথাব্যথা: একটি গভীর, তীব্র ব্যথা সাধারণত চোখের পিছনে অনুভূত হয়।

পেশী এবং জয়েন্টে ব্যথা: পেশী এবং জয়েন্টগুলিতে চরম ব্যথা।

পেটে ব্যথা: বমি বমি ভাব এবং পেট ভরে থাকার অনুভূতি সহ উপরের পেটে ব্যথা।

ফুসকুড়ি: জ্বর কমার সঙ্গে সঙ্গে ফুসকুড়ি তৈরি হয়।

ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত বেশিরভাগ লোকের উপসর্গ নাও থাকতে পারে, তবে প্রাথমিক জ্বর কমে যাওয়ার ১ থেকে ২ দিন পরে গুরুতর ডেঙ্গু হতে পারে। গুরুতর ডেঙ্গুর সতর্কতা লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে-

ডেঙ্গু জ্বরের গুরুতর অবস্থার লক্ষণ

* অবিরাম বমি

* পেটে অনেক বেশি ব্যথা

* মাড়ি বা নাক থেকে রক্ত ​​পড়া বা মল বা বমিতে রক্ত ​​পড়া

* শ্বাসকষ্ট

* চরম ক্লান্তি বা অস্থিরতা।

ডেঙ্গুর বিশ্বব্যাপী ঝুঁকি ২.৫ থেকে ৩.৬ বিলিয়ন মানুষকে প্রভাবিত করে, যার বার্ষিক কেস ৫০ থেকে ৩৯০ মিলিয়নের মধ্যে। প্রতি বছর, প্রায় ৫০০,০০০ ব্যক্তি ডেঙ্গুর কারণে হাসপাতালে ভর্তি হন, যার ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার ২.৫%। এমনটাই বলা হয়েছে মাল্টিডিসিপ্লিনারি ডিজিটাল পাবলিশিং ইনস্টিটিউট- এর দেওয়া এক তথ্যে।

সাধারণ মৌসুমী জ্বর

অন্যদিকে, মৌসুমি জ্বর বর্ষাকালে সাধারণ সংক্রমণের জন্য নির্দিষ্ট সময়কে বেছে নেয়। পরে ধীরে ধীরে লক্ষণ প্রকাশ পায়। একটু খেয়াল করলেই লক্ষণগুলো বুঝতে পারবেন।

মৌসুমী জ্বরের লক্ষণ

* সর্দি-কাশি

* হালকা থেকে মাঝারি মাথাব্যথা

* দুর্বল বোধ করা

* গলা বসে যাওয়া

* গিলতে অসুবিধা

* খাবারে তেমন কোনো অরুচি হবে না।

অসুস্থতা কোনো অবহেলার বিষয় নয়। তাই হালকা লক্ষণ দেখা দিলেও অবহেলা করবেন না। নিজের যত্ন নিন। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার ও জীবনযাপনের অভ্যাস করুন। কোনো লক্ষণ দেখে সন্দেহ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যেকোনো অসুখ আগেভাগে চিহ্নিত করা গেলে তার থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়।

এইচএন