সকালটা শুরু হয় চা দিয়ে। দেশের আনাচেকানাচে, রাস্তাঘাটে, রেস্তোরাঁ সবখানেই সর্বত্র চা পাওয়া যায়। চায়ের সঙ্গে বিস্কুট, সিঙ্গাড়া, চপ, পাকোড়া অনেক কিছুই খেয়ে থাকেন চা প্রেমীরা! কিন্তু চায়ের সঙ্গে যা কিছু খান তার সবই কি স্বাস্থ্যসম্মত? একেবারেই না। চায়ের সঙ্গে কী কী খাওয়া নিরাপদ আর কোনগুলো একেবারেই খাবেন না? 

বিস্কুট ও চা: সবচেয়ে বেশি যে ভুলটা হয়, সেটি হলো চায়ের সঙ্গে বিস্কুট খাওয়া। আমাদের অনেকেরই চায়ে বিস্কুট ডুবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস আছে। কিন্তু জানেন কি, এতেই ডেকে আনছেন বিপদ? বিস্কুট প্রায়শই পরিশোধিত শর্করা এবং অস্বাস্থ্যকর চর্বি দিয়ে ভরা থাকে, যা চায়ের ট্যানিনের সঙ্গে মিলিত হলে পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড তৈরি করে। বেশি বিস্কুট খেলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যাও হতে পারে। পরিবর্তে, আপনার চায়ের সঙ্গে হোল গ্রেন স্ন্যাকস বা এক মুঠো বাদাম বেছে নিন।

পাকোড়া ও চা: বর্ষার দিনে ঝাল ঝাল তেলেভাজা খেতে কার না ভালো লাগে! কিন্তু চায়ের সঙ্গে জুটি বাঁধলেই সর্বনাশ। চপ বা পাকোড়ায় ব্যবহৃত অতিরিক্ত তেল এবং পরিশোধিত ময়দা ওজন বৃদ্ধি করে। চায়ের সঙ্গে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। আপনি যদি লোভ সামলাতে না পারেন, তাহলে এয়ার ফ্রায়ারে ভাজা স্ন্যাক্স কিংবা বেক করা খাবার খেতে পারেন চায়ের সঙ্গে।

সিঙ্গাড়া ও চা: একটি লোভনীয় কম্বিনেশন। মুচমুচে, স্বাদে ভরপুর সিঙ্গাড়া জনপ্রিয় স্ট্রিটফুডও। তবে, দুধ চায়ের সঙ্গে খেলে উচ্চ চর্বিযুক্ত সামগ্রী আপনার পরিপাকতন্ত্রকে ধ্বংস করতে পারে। আপনার স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে সিঙ্গাড়া খাওয়া কমান। আর চায়ের সঙ্গে তো একেবারেই নয়।

চিনিযুক্ত মিষ্টি চা: লিকার চা অনেকে চিনি ছাড়া খান। কিন্তু দুধ চা? চিনি ছাড়া স্বাদই হয় না। কিন্তু চিনি দিয়ে দুধ চা খাওয়া খুবই ক্ষতিকর। বার বার চায়ের সঙ্গে শরীরে চিনি ঢুকতে থাকে। অ্যাসিডিটি বাড়ে তো বটেই, রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়ে। দেহের ওজন বৃদ্ধি পায়। পরিবর্তে, আপনার চায়ে গুড় বা মধুর মতো স্বাস্থ্যকর মিষ্টির বিকল্পগুলো বেছে নিন।

এছাড়া, পুষ্টিবিদের নির্দেশ, খুব মশলাদার খাবারের সঙ্গে চা না খাওয়ার। তাতে অ্যাসিডে জ্বলে যেতে পারে গলা-বুক। চায়ের মধ্যে থাকা ট্যানিনের সঙ্গে যে কোনও কিছুরই বনে না! আর গরম চায়ের সঙ্গে যা একেবারেই খাবেন না, সেটি হল ঠান্ডা খাবার। ঠান্ডা মিষ্টি বা কেক জাতীয় খাবার গরম চায়ের সঙ্গে খেলে পরিপাকতন্ত্রে বড়সড় গোলযোগ দেখা দিতে পারে। তাপমাত্রার হেরফেরে খাবার হজম হবে না। বমি বমি ভাব এমনকি বমিও হয়ে যেতে পারে।

অতএব, চায়ে চুমুক চলতে থাকুক। সঙ্গে যে খাবারগুলো খাওয়া হয়, সেগুলো বুঝেশুনে!

কেএ