কিডনিতে পাথর হলো খনিজ এবং লবণের শক্ত জমাট যা কিডনির ভেতরে তৈরি হয়। এর ফলে তীব্র ব্যথা এবং অস্বস্তি হয়। এগুলো কিডনি থেকে মূত্রাশয় পর্যন্ত মূত্রনালীর যেকোনো অংশকে প্রভাবিত করতে পারে। যদিও জেনেটিক্স এবং স্বাস্থ্যের অবস্থাও কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তবে জীবনযাপন এবং খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তনের মাধ্যমে তা কমানো সম্ভব হতে পারে। কিডনিতে পাথর প্রতিরোধের কার্যকরী উপায় জেনে নিন-

১. হাইড্রেটেড থাকুন

প্রচুর পরিমাণে পানি পান করলে তা প্রস্রাবের উপাদানগুলোকে পাতলা করে। যখন আপনি ডিহাইড্রেটেড হন, তখন আপনার প্রস্রাব খনিজের সঙ্গে ঘনীভূত হয়ে পাথর তৈরি করে। দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার লক্ষ্য রাখুন। আপনার প্রস্রাবের রঙ নিরীক্ষণ করুন; পরিষ্কার বা ফ্যাকাশে হলুদ প্রস্রাব সাধারণত সঠিক হাইড্রেশন বোঝায়। আপনি যদি ব্যায়াম করেন বা গরম আবহাওয়ায় থাকেন তবে তরলের ঘাটতি পূরণের জন্য আপনার পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

২. লবণ গ্রহণ সীমিত করুন

উচ্চ সোডিয়ামের মাত্রা প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বাড়ায়, যা পাথর গঠনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্ট ফুড এবং লবণাক্ত স্ন্যাকস এড়িয়ে আপনার খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে দিন। তাজা উপাদান দিয়ে রান্না করুন এবং ভেষজ ও মসলা ব্যবহার করুন। সোডিয়াম সামগ্রী কতটা আছে তা দেখার জন্য খাদ্যের লেবেল পড়ে নিন। প্রতিদিন ২,৩০০ মিলিগ্রামের কম সোডিয়াম খাওয়ার লক্ষ্য রাখুন।

৩. ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খান

খাদ্যতালিকাগত ক্যালসিয়াম অন্ত্রে অক্সালেটের সঙ্গে যুক্ত হলে কিডনিতে পাথর তৈরিতে বাঁধা দিতে পারে। আপনার খাদ্যতালিকায় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন। যেমন দুগ্ধজাত দ্রব্য, সবুজ শাক-সবজি, বাদাম এবং ফোর্টিফাইড উদ্ভিদ-ভিত্তিক দুধ। প্রতিদিন ১,০০০ থেকে ১,২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম গ্রহণের লক্ষ্য রাখুন। ক্যালসিয়াম পরিপূরক গ্রহণ করার আগে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন। কারণ অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম আবার পাথরের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

৪. অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার সীমিত করুন

অক্সালেট কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে। উচ্চ-অক্সালেট জাতীয় খাবার যেমন পালং শাক, বিট, বাদাম, চকলেট, চা এবং কিছু ফল খাওয়া কমিয়ে দিন। অক্সালেট শোষণ কমাতে সাহায্য করার জন্য খাবারের সময় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে অক্সালেট-সমৃদ্ধ খাবার খান।

৫. প্রাণিজ প্রোটিন সীমিত করুন

অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়ায়, যা ইউরিক অ্যাসিড পাথর গঠনে অবদান রাখতে পারে। লাল মাংস, মুরগি, ডিম এবং সামুদ্রিক খাবার খাওয়া সীমিত করুন। মটরশুটি, মসুর ডাল এবং টফুর মতো উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন বেছে নিন। প্রাণিজ প্রোটিন প্রতি কিলোগ্রাম শরীরের ওজন প্রতিদিন ০.৮ গ্রাম রাখতে লক্ষ্য রাখুন।

এইচএন