ভাতের সঙ্গে লবণ খেলে কী হয়?
বাঙালি মানেই খাবারের থালায় নানা পদের আয়োজন। আমাদের মূল খাবার হলো ভাত। তার সঙ্গে যোগ হয় বিভিন্ন পদের মাছ, মাংস, সবজি, ডাল ইত্যাদি। ভাতের থালায় অল্প একটু লবণ না হলে অনেকেরই খাবারের স্বাদ ঠিক লাগে না। আবার সেই কাঁচা লবণ খেতে দেখে পাশ থেকে হইহই করে ওঠেন কেউ না কেউ। কাঁচা লবণ খেলে নাকি শরীরের জন্য তা ভীষণ ক্ষতিকর হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা, যারা ভাতের পাতে লবণও খান, তারা এই অভ্যাস সহজে ছাড়তে পারেন না। ভাতের সঙ্গে লবণ খাওয়া আসলেই কি ক্ষতিকর?
খাদ্য হিসাবে আমরা যে লবণ খেয়ে থাকি সেটি হলো মূলত সোডিয়াম ক্লোরাইড। এই লবণের মধ্যে থাকে ৪০ শতাংশ সোডিয়াম এবং বাকি ৬০ শতাংশ থাকে ক্লোরাইড। কাঁচা লবণ খাওয়া নিয়ে বেশ কিছু তথ্যও দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
বিজ্ঞাপন
অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার রয়েছে ক্ষতিকর কিছু প্রভাব। এর ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের প্রায় সব মানুষই প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ করেন। প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ প্রতিনি প্রায় ৪৩১০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ করেন। যা কিনা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত মাত্রার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।
আরও পড়ুন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, যেকোনো প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ মানুষের জন্য দিনে ২০০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম বা ৫ গ্রামের কম লবণ খাওয়া উচিত। শিশুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ হতে হবে আরও কম। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ১৪ বছরের বেশি বয়সী এবং গর্ভবতী নারী প্রতিদিন ১৫০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম গ্রহণ করতে পারবেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে প্রতি বছর বিশ্বে মৃত্যু হয় ১৮ লাখ ৯০ হাজার মানুষের। ইউএস-এর স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এনএইচএস- এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। এছাড়া ভাতের সঙ্গে বাড়তি লবণ খাওয়ার এই অভ্যাস শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি তৈরি করতে পারে। এমনকী এটি হাড় থেকেও ক্যালসিয়াম শুষে নিতে পারে। তাই এক্ষেত্রে সচেতন হোন।
এইচএন