রেগে গেলে আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন সব শব্দ ব্যবহার করি যেগুলো আসলে সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে নিয়ে যায়। আবার ঝগড়ার সময় একটু রয়েসয়ে কথা বললেই সম্পর্কের সৌন্দর্য ধরে রাখা সহজ হয়। তাতে দু’জনের মধ্যে ঝগড়ার প্রভাব খুব একটা পড়ে না। সম্পর্ক থাকলে ঝগড়াও থাকবে। মতের অমিল হবেই। সেখান থেকে হতে পারে কথা কাটাকাটিও। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন একজন অপরজনের জন্য অসম্মানজনক কিছু না বলেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক ঝগড়ার সময় কোন কথাগুলো বলা থেকে বিরত থাকতে হবে-

১. ‌তুমি সব সময় এমন করো
নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্য সব দায় অপরজনের ওপর চাপনোর প্রবণতা থাকে অনেকেরই। এটি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। কখনোই ঝগড়ার সময় যেকোনো একটি কাজের কথা বলবেন না যে তুমি সব সময় এমন করো। কারণ আপনার এই কথা তাকে আরও ক্ষিপ্ত করে তুলতে পারে। কিছু বলার থাকলে তা পরে ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলুন। যদি ঝগড়ার সময়ই সব দায় তার ওপর চাপাতে চান তাহলে হিতে বিপরীত হতে পারে।

২. এটি তোমার দোষ
উত্তপ্ত মুহূর্তে দোষারোপ করলে তা প্রতিকূল পরিবেশ তৈরি করে পারস্পরিক বোঝাপড়ার সুযোগকে বাধাগ্রস্ত করে। কাউকে দোষারোপ করলে তা কেবল গঠনমূলক যোগাযোগের সম্ভাবনাই বন্ধ করে না বরং জবাবদিহিতাকেও বাধা দেয়। কার্যকর পদ্ধতির মাধ্যমে সমস্যাগুলোকে ভাগ করে সহযোগিতামূলক সমাধানের প্রয়োজন। দৃষ্টিভঙ্গির এই পরিবর্তন সহযোগিতাকে উৎসাহিত করতে পারে এবং দোষারোপের খেলা বন্ধ করলে তা দ্বন্দ্ব দূর করতে পারে।

৩. শান্ত হও
ভালো উদ্দেশ্য থাকা সত্ত্বেও, শান্ত হও বললে তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপরপক্ষের অনুভূতিকে বাঁধাগ্রস্ত করে। এটি বোঝায় যে তাদের আবেগ অযৌক্তিক, যা উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। এর পরিবর্তে, সমর্থন দিন এবং তার আবেগ প্রকাশের সুযোগ দিন। ঠান্ডা মাথায় তার সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলুন। গঠনমূলকভাবে দ্বন্দ্ব সমাধানের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করুন।

৪. তুমি অতিরিক্ত করছো!
কারো আবেগকে অত্যধিক বলে উড়িয়ে দিলে তা তার অনুভূতি এবং অভিজ্ঞতাকে ছোট করে। এটি ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি করে বিরোধকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। তার আবেগ থামিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে সহানুভূতি প্রদর্শন এবং বুঝতে চেষ্টা করার মাধ্যমে পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সমাধানের পথ খুলে দিতে পারেন। মনে রাখবেন, ঝগড়াই শেষ কথা নয়। বরং ঝগড়ার পরেও যেন দু’জন মিলেমিশে থাকা যায় সেটিই লক্ষ্য হওয়া উচিত।

৫. আমার কথা শেষ
তর্কের সময় হঠাৎ করে কথা বন্ধ করা সমাধানের সুযোগকে দমিয়ে দেয়। এটি সাধারণ ভিত্তি খুঁজে পেতে বা অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার ক্ষেত্রে অরুচি প্রকাশ করে। সংলাপ চালিয়ে যাওয়া, এমনকি সাময়িকভাবে বিরতি দিলেও শান্ত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সমস্যাটিকে পুনর্বিবেচনা করলে তা সম্পর্ক সুন্দর হওয়ার সম্ভাবনা এনে দেয়। যা গঠনমূলক দ্বন্দ্ব সমাধানের পথ প্রশস্ত করে। রাগন্বিত হলেও তাই সাবধানে শব্দ চয়ন করুন।

এইচএন