খুব কম জিনিসই আছে যা মাথাব্যথার মতো বিরক্তিকর। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই মাথাব্যথা বোঝা যায় না যতক্ষণ না এটি সহ্যের বাইরে চলে যায়। সব মাথাব্যথা এক নয়। যেমন মাইগ্রেন। এর লক্ষণ হলো ক্রমাগত ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা ইত্যাদি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ‌মাইগ্রেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বয়ঃসন্ধিকালে শুরু হয় এবং ৩৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করে। এটি নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। হরমোনের প্রভাবের কারণে এমনটা হয়ে থাকে। গুরুতর মাইগ্রেনের জন্য চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। তবে সাধারণ ক্ষেত্রে খাবারের দিকে নজর রাখলেই এই সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

ইরানি জার্নাল অফ নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি রিসার্চে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় বলা হয়েছে মাথাব্যথার আক্রমণ প্রতিরোধ এবং মাইগ্রেনের রোগীদের ওষুধ সেবনের ফলে সৃষ্ট জটিলতা কমাতে খাদ্যতালিকা সংশোধন করার প্রতি আরও জোর দেওয়া প্রয়োজন। তাই মাইগ্রেনের মতো সমস্যা থাকলে খাবারের দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।

ভারতীয় পুষ্টিবিদ শিখা ত্রিপাঠি সম্প্রতি তার সোশ্যাল মিডিয়ায় মাইগ্রেনের আক্রমণ প্রতিরোধে কিছু করণীয় শেয়ার করেছেন। তিনি লিখেছেন, মাইগ্রেনকে অন্তর্নিহিত ভারসাম্যহীনতার সংকেত হিসাবে বোঝার জন্য আমরা হরমোনের ওঠানামা, পুষ্টির ঘাটতি, প্রদাহ, অন্ত্রের স্বাস্থ্য, স্ট্রেস এবং জেনেটিক্সের মতো মূল দিকগুলো বিশ্লেষণ করি। ডায়েটের চারটি ভুল এড়িয়ে চলতে বলেছেন এই পুষ্টিবিদ। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

১. খাদ্য সংবেদনশীলতা

কিছু কিছু খাবারে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে টাইরামাইন থাকে। টাইরামাইন হলো একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড যা মাইগ্রেনের মতো প্রাথমিক রক্তনালীতে পরিবর্তন আনতে পারে। এই খাবারগুলো সাধারণত ক্যাফেইন, পনির, অ্যালকোহল, গম এবং দুগ্ধজাত দ্রব্য হতে পারে। কীসে আপনার সমস্যা হচ্ছে সেদিকে খেয়াল করুন।

২. বদহজম

বিশেষজ্ঞরা সবসময় শরীরের মসৃণ কার্যকারিতার জন্য স্বাস্থ্যকর অন্ত্র থাকার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। যেকোনো সময় মস্তিষ্ক বা অন্ত্রে কোনো গোলযোগ দেখা দিলে দুই অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ব্যাহত হতে পারে। পুষ্টিবিদ শিখার মতে, এটি মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে। তাই খাবারের ভুলের কারণে যেন বদহজম না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন

৩. খাবার না খাওয়া

খাবার এড়িয়ে যাওয়া এবং ক্ষুধার্ত থাকাও মাইগ্রেনের ব্যথার কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞের মতে, খাবার বাদ দিলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়। তখন শরীরে এমন হরমোন নিঃসৃত হয় যা বেশিরভাগ সময় মাথার দু’পাশে অবিরাম ব্যথা সৃষ্টি করে। তাই দিনের গুরুত্বপূর্ণ তিন পর্বের খাবার অবশ্যই সঠিক সময়ে গ্রহণ করবেন। কোনো বেলার খাবার এড়িয়ে যাবেন না।

৪.  ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি

পুষ্টিবিদ শিখা আরও বলেছেন যে পুষ্টির ঘাটতি, বিশেষ করে ম্যাগনেসিয়ামের অভাবও মাইগ্রেনের ট্রিগারের জন্য দায়ী হতে পারে। কারণ সঠিক পুষ্টির অভাব প্রদাহ সৃষ্টি করে, শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস আরও বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে ক্রমাগত মাথাব্যথা হয়।