ব্যক্তিগত সবকিছু সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন? জেনে নিন কী হয়
সোশ্যাল মিডিয়া ওভারশেয়ারিং এবং ক্রমাগত সংযোগের দ্বারা প্রভাবিত বিশ্বে কারও ব্যক্তিগত জীবনকে গোপন রাখার ধারণাটি সেকেলে বলে মনে হতে পারে। কিন্তু মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন ভিন্ন কথা। গোপনীয়তা বজায় রাখা আপনার মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। চলুন জেনে নেওয়া যাক বর্তমান বিশ্বে কেন আপনার ব্যক্তিগত জীবন গোপন রাখা জরুরি-
১. সবাই আপনার বন্ধু নয়
বিজ্ঞাপন
মনস্তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে, মানুষ হলো সামাজিক প্রাণি যাদের সংযোগ গঠনের দিকে স্বাভাবিক প্রবণতা রয়েছে। তবে প্রতিটি সংযোগ প্রকৃত বন্ধুত্বের সমান নয়। নির্বিচারে আপনার জীবনের ঘনিষ্ঠ বিবরণ শেয়ার করা আপনার ক্ষতির কারণ হতে পারে। মানুষ আপনার সম্পর্কে ভুল ধারণাও পেতে পারে। বন্ধুত্বের সূক্ষ্মতা বুঝে সেই অনুসারে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করুন। এতে আপনার বিচক্ষণতার গুরুত্ব প্রকাশ পাবে। কাউকে কিছু বলার আগে নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, ‘এটি কি তার জানা দরকার?’
২. আপনি কাউকে কোনো ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হবেন না
মানুষের মন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সামাজিক অনুমোদন এবং বৈধতা চায়। মনোবিজ্ঞান আমাদের শেখায় যে ক্রমাগত অন্যদের কাছে আমাদের জীবনের সবকিছুর ব্যাখ্যা করা বা অনুমোদন চাওয়ার অভ্যাস মানসিক অশান্তির কারণ হতে পারে। আপনার ব্যক্তিগত জীবনকে আড়ালে রাখলে তা আপনাকে অপ্রয়োজনীয় ব্যাখ্যার বোঝা থেকে মুক্ত রাখবে। আপনি বাহ্যিক চাপ ছাড়াই নিজের কাজগুলো করতে পারবেন।
আরও পড়ুন
৩. মনে শান্তি থাকবে
গোপনীয়তা এবং মনের শান্তি এই দুইয়ের মধ্যে সংযোগ রয়েছে। আপনার ব্যক্তিগত জীবনের বিবরণের ক্রমাগত প্রকাশ করতে থাকলে তা মানসিক চাপের মাত্রা এবং উদ্বেগ বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যক্তিগত সীমানা বজায় রাখা এবং তথ্য কম ভাগাভাগি করার অভ্যাস মানসিক সুস্থতায় উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখতে পারে। আপনার ব্যক্তিগত জীবন গোপন রাখলেই প্রশান্তি অনুভব করবেন।
৪. নিরাপদ থাকবেন
মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপত্তার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়। পাবলিক ডোমেন বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খুব বেশি প্রকাশ করলে তা আপনাকে পরিচয় চুরি, সাইবার বুলিং বা অবাঞ্ছিত মন্তব্যসহ বিভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন করতে পারে। তাই নিজের ব্যক্তিগত কোনো তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের আগে ভালো করে ভেবে নিন। আপনার ব্যক্তিগত এবং মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিন।
৫. আপনার সম্পর্ক আরও ভালো থাকবে
ব্যক্তিগত জীবনকে খুব বেশি প্রকাশ্যে আনলে তা আপনার সংযোগের গভীরতা এবং সত্যতাকে কমিয়ে দিতে পারে। আপনার জীবনের অর্থপূর্ণ দিকগুলো তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিন যারা সত্যিকার অর্থে গুরুত্বপূর্ণ। কতটুকু প্রকাশ করা যাবে এবং কতটুকু প্রকাশ করা যাবে না তার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখুন। এতি প্রিয়জনদের সঙ্গে বিশ্বাস, বোঝাপড়া এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে আরও গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন।