কখন বুঝবেন আপনার বিরতি নেওয়া প্রয়োজন?
জীবন একটা ঘূর্ণিঝড়। কাজ, সম্পর্ক, দায়িত্ব এবং আমাদের ডিভাইসের ক্রমাগত পিংপিংয়ের মধ্যে আমরা ক্রমাগত তলিয়ে যেতে থাকি। সবদিক সামলে চলা মুশকিল, একটা সময় বিশৃঙ্খলার মধ্যে ভেসে যাওয়া আর গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো ভুলে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। বিশ্রামকে অবহেলা করলে তা আপনার জন্য আরও ক্ষতিকর হতে পারে। কিন্তু আপনি কীভাবে জানবেন যে কখন আপনার বিরতি প্রয়োজন? চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. মনোযোগ দেওয়া কঠিন হলে
বিজ্ঞাপন
আপনার অসাধারণ স্মৃতিশক্তি যদি ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে তবে সেটি স্বাভাবিক মনে করে চুপ থাকবেন না। বরং এটি হতে পারে আপনার জন্য সতর্ক সংকেত। কাজে মনোযোগ দিতে না পারলে বুঝতে পারবেন আপনার বিরতি নেওয়ার সময় হয়েছে। মস্তিষ্ক সচল ও কার্যক্ষম রাখার জন্য প্রয়োজন পড়ে সুন্দর কিছু স্মৃতির। তাই সুন্দর সুন্দর স্মৃতি তৈরি করুন। যা হবে আপনার মস্তিষ্কের খাদ্য। প্রিয়জনদের সঙ্গে সময় কাটান, সুন্দর কোনো স্থান থেকে ঘুরে আসুন। কাজে একেবারেই মনোযোগ দিতে না পারলে কাজ থেকে বিরতি নিন।
২. শক্তি না পেলে
আপনি কি নিজেকে দিনভর টেনে নিয়ে যাচ্ছেন? ক্লান্তি লাগলে এককাপ কফিতেই বিশ্রাম খুঁজছেন? এভাবে ধীরে ধীরে রুটিনের কাজগুলো করাও আপনার জন্য কঠিন হয়ে উঠবে। এই টানা ক্লান্তি আসলে গভীর ক্লান্তির সংকেত দেয়, শুধু শারীরিক নয়, মানসিকও। চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাওয়ার অভ্যাস আসলে ক্লান্তি সৃষ্টি করে, যা আপনি প্রতিদিন অনুভব করেন। এ বিষয়ে সতর্ক থাকুন কারণ এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। আপনার শরীর মানসিক এবং শারীরিক বিশ্রামের জন্য চিৎকার করছে; সেদিকে কান পেতে শুনুন।
৩. ছোটখাটো বিষয়ে বিরক্ত হলে
আগের সেই শান্ত স্বভাবের মানুষটিকে খুঁজে পাচ্ছেন না? ইদানিং খুব অল্পতেই বিরক্ত হয়ে যান? এটি আসলে একটি সতর্ক সংকেত। আপনার মন ও শরীর বিশ্রাম চাইছে। কিছুটা বিরতি চাইছে। তাই অল্পতেই মেজাজ হারাচ্ছেন। তাই বিরতি নিন। কয়েকটি দিন নিজের মতো কাটিয়ে ফের কাজে ফিরুন। এতে শরীর ও মন অনেকটাই চাঙ্গা হবে। নিজেকে আবার খুঁজে পাবেন। বিরক্তিভাবও কেটে যাবে।
৪. আবেগ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে
ইদানিং একটুতেই আবেগাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছেন? আবেগ ধরে রাখা মুশকিল হয়ে গেলে বুঝবেন আপনার সব ধরনের কাজ দিয়ে কয়েকটা দিন বিরতি প্রয়োজন। মনে রাখবেন, এই উত্তাল সমুদ্রে আপনি একা নন। এমনটা ঘটে প্রায় সবার ক্ষেত্রেই। তাই বিরতি নিন। বন্ধু-পরিজনদের সঙ্গে সময় কাটান। পছন্দের খাবার খান, দূরে কোথাও বেড়িয়ে আসুন। আপনার আবেগের আধিপত্য নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তখন আর যখন তখন চিৎকার করে কান্না করতে ইচ্ছা করবে না।
৫. হতাশা ভর করলে
পৃথিবীটা যদি আগের মতো রঙিন মনে না হয় তাহলে ভালো করে খেয়াল করুন। কী এমন বিষয় যা আপনার পৃথিবীকে ধূসর করে দিলো? হতাশায় নিজেকে ডুবে যেতে দেবেন না। হতাশা কখনো আলোর পথ দেখায় না। যদি ইদানিং আপনার খুব বেশি হতাশ লাগতে শুরু করে তবে সবকিছু থেকে ছুটি নিন কয়েক দিনের জন্য। নিজের মতো করে সময় কাটান। ভাবুন। পড়ুন। ঘুমান। যা যা করতে ভালোলাগে, তাই করুন। কয়েকটি দিন বিরতি পেলেই সব হতাশা দূর হয়ে যাবে।