বর্তমান ফাস্টফুডে ভরা বিশ্বে সামগ্রিক সুস্থতার জন্য সঠিক পুষ্টির বিকল্প নেই। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের স্বাস্থ্যের বিকাশের জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি অপরিহার্য। শীতের শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্দি, কাশি এবং গলা ব্যথার মতো সমস্যাও নিয়ে আসে। এক্ষেত্রে পুষ্টিকর খাবারকে অগ্রাধিকার দেওয়া আরও কঠিন হয়ে ওঠে। সৌভাগ্যবশত শীতের ঋতুতে প্রচুর ফল এবং শাক-সবজি পাওয়া যায় যা আপনার খাদ্যকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিয়ে সমৃদ্ধ করতে পারে।

অপর্যাপ্ত পুষ্টি শরীরকে দুর্বল করে দেয়, এটি বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ এবং কার্বোহাইড্রেড সামগ্রিক শারীরিক কার্যকারিতা জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই পুষ্টিগুলো কোষ এবং টিস্যু মেরামত এবং বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুষম, পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য শরীরের প্রতিদিনের পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা মেটাতে এবং ঋতু পরিবর্তনের সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে কাজ করে।

ঋতু পরিবর্তনের সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হতে পারে। তাই এসময়ে এমন খাবার খেতে হবে যা শুধুমাত্র রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে না বরং প্রতিদিনের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করে। এই সময়ের ৭টি ফল এবং শাকসবজি সম্পর্কে জেনে নিন যা আপনাকে সুস্থ রাখতে অবদান রাখতে পারে-

১. পালং শাক

পালং শাক শীতকালীন শাক-সবজির একটি পাওয়ার হাউস, যা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার এবং আয়রনের মতো পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর পালং শাক সামগ্রিক ফিটনেস বজায় রাখতে এবং স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে। তাই শীতের সময়ে নিয়মতি পালং শাক রাখতে হবে খাবারের তালিকায়। 

২. মটরশুটি

মটরশুটিও বিভিন্ন পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। মটরশুটি লাইসিনে সমৃদ্ধ। লাইসিন একটি অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিড যা ফ্যাটি অ্যাসিড রূপান্তর এবং কোলেস্টেরল হ্রাসে সহায়তা করে। মটরশুটি ফোলেট, ভিটামিন বি, ফাইবার এবং প্রোটিনেরও ভালো উৎস। তাই এসময় খাবারের তালিকায় মটরশুটি রাখতে হবে।

৩. মিষ্টি আলু

শীতের সময়ে আরেকটি খাবার আপনাকে ভালো রাখতে কাজ করবে, সেটি হলো মিষ্টি আলু। মিষ্টি আলুতে কম গ্লাইসেমিক সূচক থাকে। ফাইবার, ভিটামিন এ, বিটা-ক্যারোটিন এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু শরীর শক্তিশালী রাখে। সেইসঙ্গে বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। তাই এসময়ে আপনার জন্য আরেকটি জরুরি খাবার হলো মিষ্টি আলু।

৪. গাজর

গাজরে প্রচুর ভিটামিন এ, বিটা-ক্যারোটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে এবং খাদ্যতালিকাগত ফাইবার রয়েছে। এতে ক্যালোরি থাকে অনেক কম। গাজর ওজন নিয়ন্ত্রণের সহায়ক। যে কারণে শীতের সময়ের জরুরি খাবারের মধ্যে অন্যতম হলো গাজর। সুস্বাদু ও সুন্দর এই সবজি রাখুন আপনার প্রতিদিনের খাবারে।

৫. আপেল

শীতকাল হলো আপেল খাওয়ার উপযুক্ত ঋতু, এই ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করার জন্য পরিচিত। পেকটিন, প্রোটিন, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর আপেল সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। তাই প্রতিদিন একটি আপেল খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এতে নানা ধরনের অসুখ থেকে দূরে থাকা সহজ হয়।

৬. মেথি শাক

মেথি শাক একটি পুষ্টিকর সবুজ শাক। সুস্বাদু এই শাকে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন এবং ভিটামিন থাকে। শীতের খাবারে মেথি শাক রাখলে তা সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। বুঝতেই পারছেন, এই সময়ে মেথি শাক কেন জরুরি? তাই মেথি শাক থাকুক আপনার খাবারের তালিকায়। 
 
৭. নাশপাতি

একটি সুস্বাদু ফল হলো নাশপাতি। এটি দেখতে যেমন সুন্দর, তেমন পুষ্টিগুণেও ভরা। এই ফলে থাকে ভিটামিন ই, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। যা সুস্থতায় অবদান রাখে, সক্রিয়ভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধ করে।