বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে তার প্রভাব পড়ে আমাদের ত্বক ও চুলে। তাই শীত এলেই সবার আগে রুক্ষ হতে শুরু করে শরীরের এই দুই অংশ। তাই এসময়ে নিজের প্রতি বাড়তি যত্নশীল হওয়া জরুরি। এসময়ে চুল অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। চুল উজ্জ্বলতা হারিয়ে হয়ে যায় নিষ্প্রাণ। আর এ নিয়ে আপনার মন খারাপ হতেই পারে। তবে একটু যত্নশীল হলে শীতের আগে তো বটেই, পুরো শীতের সময়েও আপনার চুল থাকবে ঝলমলে, প্রাণবন্ত। 

আমাদের চুলের কোনো প্রাকৃতিক তৈলাক্তকরণ নেই। পুষ্টি বজায় রাখার জন্য এর গোড়ায় উৎপাদিত তেলের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করে। যেহেতু শীতকালে আমাদের শরীর শুকিয়ে যায়, তাই মাথার ত্বক তার সঞ্চিত তেলকে সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করে। যার ফলে চুল শুষ্ক, ভঙ্গুর এবং ঝরঝরে হয়ে যায়, যেমন WebMD রিপোর্টে বলা হয়েছে। এটি মাথার ত্বকে খুশকি তৈরি করে।

প্রতিবেদনে আরও ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, শুষ্ক আবহাওয়া আমাদের কিউটিকলকেও প্রভাবিত করে। কিউটিকল হলো প্রতিরক্ষামূলক স্তর যা আমাদের চুলকে পরিবেশগত ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। যখনকিউটিকলের স্তর আলাদা হয়ে যায় এবং চুল থেকে খোসা ছাড়িয়ে যায়, তখন এটি আর্দ্রতা ধরে রাখতে পারে না এবং তেল চলে যায়।

চুলে যত্নের রুটিন থেকে তেল, শ্যাম্পু এবং সিরাম বাদ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। চুল আর্দ্র এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে আপনার ডায়েটে কিছু মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। চুল ভালো রাখার জন্য এই সময়ে খেতে হবে এমন কিছু খাবার যেগুলো আপনাকে এই কাজে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

১. পর্যাপ্ত পানি পান করুন

শীতের সময়ে বেশিরভাগ মানুষই পর্যাপ্ত পানি পান করার গুরুত্বকে উপেক্ষা করেন। হাইড্রেটেড থাকার জন্য এবং কোষ ও টিস্যুতে অক্সিজেন প্রবাহকে উন্নীত করার জন্য শরীরে স্বাস্থ্যকর পানির ভারসাম্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যা চুল স্বাস্থ্যকর রাখতে কাজ করে। তাই চুলের রুক্ষতা দূর করতে চাইলে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।

২. মৌসুমী খাবার খান

শীতের মৌসুমে খাবারের বৈচিত্র পাবেন। অনেক ধরনের সবজি ও ফল পাবেন বাজারে। সেখান থেকে প্রতিদিন খাবারের তালিকায় যোগ করুন কোনো না কোনো মৌসুমী খাবার। মৌসুমী খাবার প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং পুষ্টি জোগায়। সমস্ত শরীরের জন্য তো বটেই, এগুলো আপনার চুলের জন্যও উপকারী। চুল সুস্থ রাখার অন্যতম সেরা উপায় হলো মৌসুমী ফল এবং শাকসবজি সমৃদ্ধ একটি সঠিক ডায়েট মেনে চলা। এসব খাবার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং খনিজের সমৃদ্ধ উৎস। এগুলো খেলে তা চুলের সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে উন্নীত করতে সাহায্য করে।

৩.  ভাজা খাবার কম খান

স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি, ভাজা এবং উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবার কম খাওয়াও সমান গুরুত্বপূর্ণ। শীতের সময়ে বেশিরভাগ মানুষই মুখরোচক খাবার খেতে চান। ভাজা, চর্বিযুক্ত, এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবারগুলো এসময় দূরে রাখতে হবে। অনেক বেশি খেতে ইচ্ছা করলে পরিমিত খেতে পারেন। তবে বেশি খেলে ভুগতে হবে আপনাকেই। অতিরিক্ত কিছু খাওয়ার অভ্যাস আমাদের শরীরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়িয়ে দেয়। যা ত্বক ও চুলের কোষে রক্ত ও অক্সিজেনের নিয়মিত সঞ্চালনকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই চুল ভালো রাখতে এই সময়ে এ ধরনের খাবার কম খাওয়াই ভালো।