হলুদ আমাদের অনেক রান্নায়ই ব্যবহার করা হয়। মসলাটি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ঐতিহ্যবাহী ওষুধের একটি প্রধান উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এর প্রাথমিক সক্রিয় যৌগগুলির মধ্যে একটি হলো কারকিউমিন। হলুদের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য এই মসলাকে স্বাস্থ্যকর খাবারের একটি অপরিহার্য অংশ করে তুলেছে। তবে অতিরিক্ত হলুদ খেলে দেখা দিতে পারে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত-

হলুদ কেন উপকারী?

হলুদের মূল উপাদান কারকিউমিন। এটি একটি স্বাস্থ্য সম্পূরক যার অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রয়েছে। এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার মূল কারণগুলোকে মোকাবিলা করতে পারে। হলুদ খেলে তা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে, চর্বি জমা হওয়া দমন করে। সেইসঙ্গে প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে ইনসুলিন প্রতিরোধ এবং স্থূলত্বের মতো স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো দূরে রাখতে কাজ করে। অস্টিওআর্থারাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী জয়েন্টের ব্যথার অবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করে হলুদ। এতে থাকা কারকিউমিন ব্যথা উপশম এবং জয়েন্টের উন্নতি করে। এটি আপনার সুস্থতার যাত্রায় একটি মূল্যবান সংযোজন।

প্রতিদিন কতটুকু হলুদ খাবেন?

কারকিউমিনের স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় হলুদ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। জন হপকিন্স মেডিসিন অনুসারে, প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রামের মতো হলুদ গ্রহণ করা যেতে পারে।

অতিরিক্ত হলুদ খেলে কী হয়?

হলুদ এবং কারকিউমিন সাধারণত নিরাপদ। তবে এর সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া হয় বা পরিপূরক হিসাবে নেওয়া হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, অতিরিক্ত হলুদ খাওয়ার অপকারিতা সম্পর্কে-

১. পেট খারাপ: হলুদ বা কারকিউমিনের উচ্চ মাত্রায় পেট খারাপ, অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং ডায়রিয়া সহ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অস্বস্তি হতে পারে।

২. মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরা: কারকিউমিন ৪৫০ মিলিগ্রাম বা তার বেশি মাত্রায় খেলে কারও কারও ক্ষেত্রে মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরার সমস্যা হতে পারে।

৩. পেটের সমস্যা: হলুদ পেটের সমস্যাকে বাড়িয়ে তুলতে পারে, যেমন অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং পিত্তথলির পাথর।

৪. গর্ভাবস্থা এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে: গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন নারীদের ক্ষেত্রে হলুদের সাপ্লিমেন্ট এড়ানো উচিত, কারণ এটি জরায়ু সংকোচনকে উদ্দীপিত করতে পারে। ফলে দেখা দিতে পারে জটিলতা।