করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বব্যাপী বিরাজ করছে আতঙ্ক ও ভয়। মূলত করোনাভাইরাসের কারণে ফুসফুসের ব্যাপক ক্ষতি হয়। অনেকে করোনার উপসর্গের সঙ্গে সাধারণ অ্যালার্জির সমস্যা মিলিয়ে ফেলেন। কিন্তু করোনা ও সাধারণ অ্যালার্জির সমস্যার মধ্যে রয়েছে অনেক পার্থক্য। 

করোনা ও অ্যালার্জি কেন হয়?

আমাদের শরীর সবসময় রোগ প্রতিরোধের চেষ্টা করে। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার মতো ক্ষতিকর বস্তুকে মেরে ফেলার মাধ্যমে এই চেষ্টা করা হয়। রোগ প্রতিরোধের চেষ্টাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ইমিউন বলা হয়। বাতাসের মাধ্যমে অ্যালার্জি হয়। অ্যালার্জির কারণে হাঁচি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকার কারণে অনেকের অ্যালার্জি হতে পারে। সাধারণত ধূলোবালি, গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ ও গরুর দুধে অ্যালার্জি হয়। অন্যদিকে করোনাভাইরাস হওয়ার কারণ সার্স-কোভ-২ ভাইরাস। এটি সংক্রামক রোগ। অন্যের হাঁচি-কাশি থেকে করোনাভাইরাস হয়। তবে মনে রাখতে হবে, করোনাভাইরাস সংক্রামক রোগ হলেও অ্যালার্জি সংক্রামক রোগ নয়। 

করোনা ও অ্যালার্জির উপসর্গ

করোনাভাইরাসের একজন রোগীর মধ্যে একসঙ্গে অনেকগুলো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী জ্বর, অবসাদগ্রস্ততা, স্বাদহীনতা বা গন্ধহীনতা ও শুকনো কাশি করোনাভাইরাসের সাধারণ উপসর্গ। অপরদিকে মৌসুমী অ্যালার্জির উপসর্গ হলো ঘন ঘন হাঁচি দেওয়া, নাক বন্ধ হওয়া ও চোখ দিয়ে পানি পড়া। এসব উপসর্গ করোনা রোগীর মধ্যে দেখা যায়। 

করোনা নাকি অ্যালার্জি- বুঝবেন যেভাবে

অনেক সময় করোনা হয়েছে নাকি অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিয়েছে সে বিষয়ে সংশয় দেখা দেয়। এসব সংশয় থেকে বাঁচার উপায় হলো স্বাস্থ্য পরীক্ষা। মৌসুমী অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিলে নাক বন্ধ হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়াসহ আরও অনেক উপসর্গ দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হলে কারও জ্বর, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, স্বাদহীনতা বা গন্ধহীনতা কারও মধ্যে দেখা যায়নি। তাই অ্যালাজিতে আক্রান্ত হলেই করোনা হয়েছে এমনটি ভাবা উচিত নয়। 

অ্যালার্জির কারণে করোনার ঝুঁকি বাড়ে?

অ্যালার্জি থেকে করোনা ছড়ায় কি না সেটি নিয়ে অনেকেই দ্বিধাগ্রস্ত। এ বিষয়ে খুব কম গবেষণা হওয়ায় এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্তের অভাব রয়েছে। সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী অ্যালার্জির কারণে কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই। তাই যারা অ্যালার্জিতে আক্রান্ত, তারা করোনার ঝুঁকিতে রয়েছেন- এমন কথা ঠিক নয়। 

টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে এইচএকে/এইচএন/এএ