কর্মজীবীদের জীবনে ব্যস্ততাই বড় কথা। কারণ তাদের দিনের বেশিরভাগই কাটে অফিসে। চাকরি, ক্যারিয়ার, সাফল্য ইত্যাদির পেছনে ছুটতে গিয়ে কিছু মানুষ নিজেকে ভালো রাখার কথাই ভুলে যান। তারা সবচেয়ে বেশি অনিয়ম করেন খাবারের ক্ষেত্রে। তাড়াহুড়ায় সকালের খাবার না খাওয়া, অফিসে গিয়ে কিছু একটা অর্ডার করে খেয়ে নেওয়া, বেশিরভাগ সময়েই অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে বেশিরভাগ কর্মজীবীর। এর ফলে একটা সময় তারা হঠাৎ করেই শারীরিক অসুস্থতা বোধ করতে পারেন। কারণ আপনি কী খাচ্ছেন, তার ওপরেই তো নির্ভর করে আপনার শরীর কেমন থাকবে। কর্মজীবীদের জন্য ব্যালান্স ডায়েট জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক কী খাবেন-

সকালের নাস্তা বাদ দেবেন না

স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট দিয়ে দিন শুরু করার গুরুত্ব আমরা সবাই জানি। এরপরও বেশিরভাগ সময় আমরা এটি এড়িয়ে যাই। আমাদের দ্রুতগতির জীবন এই অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের প্রাথমিক কারণ। আপনি ভাবতে পারেন যে এটি খুব একটা সমস্যা সৃষ্টি করে না, এটি ভুল ধারণা। কর্মজীবীদের সকালের খাবারে সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগ করা উচিত। স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার এবং উচ্চ-প্রোটিন খাবারের একটি স্বাস্থ্যকর মিশ্রণ। তাই সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাবেন না। সকালে ভরপেট নাস্তা খেলে তা আপনাকে সারাদিন কর্মক্ষম থাকতে সাহায্য করবে।

হাইড্রেটেড থাকুন

হাইড্রেটেড থাকা একটি ব্যালান্স ডায়েটের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। আমাদের যেমন সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া উচিত নয়, তেমনি পানি পান করা বাদ দেওয়াও উচিত নয়। সঙ্গে একটি পানির বোতল রাখুন, এতে সারাদিন ভালোভাবে হাইড্রেটেড থাকা সহজ হবে। এটি আপনার শক্তির মাত্রা বাড়াতে এবং আপনার ক্ষুধার মাত্রা কম রাখতে সাহায্য করবে। কিন্তু মনে রাখবেন, সংযম জরুরি এবং অতিরিক্ত পানি পান করা ভালো নয়। এছাড়াও, খাবারের মধ্যে পানি পান করা এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি আপনার হজমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

স্বাস্থ্যকর ক্যাফেইন গ্রহণ করুন

ক্যাফেইনের আসক্তি এড়ানো সম্ভব হয় না, বিশেষ করে এটি কর্মক্ষেত্রে আরও বেশি হয়। অনেক সময় আমরা সারাদিন ধরে চা বা কফির পান করতে থাকি। এটি আপনার শক্তিকে কিছুটা বাড়িয়ে তুলবে, তবে এরপরই আবার ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। ব্যালান্স ডায়েট চার্ট তৈরি করার সময় আপনার ক্যাফেইন গ্রহণের বিষয়ে সচেতন থাকুন এবং এটি বেশি খাওয়া এড়িয়ে চলুন। এছাড়াও আপনি স্বাস্থ্যকর উপায়ে ক্যাফেইন গ্রহণ করতে পারেন, যেমন এক আদা, লেবু এবং মধু দিয়ে চা বা এক কাপ গ্রিন টি

স্বাস্থ্যকর নাস্তা খান

কাজের সময় বা বিরতিতে সমুচা, সিঙ্গাড়া আপনার কাছে অনেক লোভনীয় হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি ফিট এবং সুস্থ থাকতে চান তবে অবশ্যই এগুলো খাওয়া বাদ দিতে হবে। এর পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর নাস্তা বেছে নিন। যেমন এক বাটি ফল বা উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন বাদাম। এ ধরনের খাবার দীর্ঘ সময়ের জন্য আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে এবং অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়ার চাহিদা তৈরি করবে না। এই অদলবদল করার জন্য কিছুটা প্রচেষ্টার প্রয়োজন হতে পারে, তবে এটি দীর্ঘমেয়াদে আপনার জন্য উপকারী হবে।

রাতের খাবার বাদ দেবেন না

আমাদের কাজের সময়সূচী সাধারণত ব্যস্ত থাকে, এর মানে আমাদের বাড়ি ফিরতে বেশিরভাগ সময়েই দেরি হয়ে যায়। এর ফলে অনেক সময় রাতের খাবার আর খাওয়া হয় না। বাড়িতে পৌঁছানোর আগে রাতের খাবার খাওয়া তো সম্ভব নয়। তাই বাড়িতে ফেরার পরপরই রাতের খাবার খেয়ে নিতে হবে। রাতের খাবার বাদ দেবেন না। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ২-৩ ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খান। অস্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট এবং চিনি এড়িয়ে চলুন, কারণ এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে এবং আপনার স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।