কিডনিতে পাথর হওয়ার সমস্যা আমাদের দেশে অপরিচিত নয়। প্রস্রাবের কিছু পদার্থ যেমন ক্যালসিয়াম, অক্সালেট এবং ইউরিক অ্যাসিড বেশি ঘনীভূত হলে এই সমস্যা বিস্তার লাভ করে। যদিও জেনেটিক্স এবং মেডিকেল কন্ডিশন এক্ষেত্রে একটি ভূমিকা পালন করতে পারে। আপনার খাদ্যাভ্যাস কিডনিতে পাথর হওয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে, নিম্নলিখিত টিপসগুলো মেনে চলুন-

লবণ কম খান এবং হাইড্রেটেড থাকুন

প্রচুর পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত হাইড্রেশন পাথর গঠনের জন্য দায়ী পদার্থগুলোকে পাতলা করতে সাহায্য করে, যার ফলে স্ফটিক একত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য প্রতিদিন ২ লিটার তরল খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। উচ্চ সোডিয়ামের মাত্রা প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম বৃদ্ধি করতে পারে, যা পাথর গঠনের ঝুঁকির কারণ। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞরা লবণ খাওয়া কমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

অক্সালেট সমৃদ্ধ খাবার নিয়ন্ত্রণ করুন

অক্সালেট প্রস্রাবে ক্যালসিয়ামের সঙ্গে মিশে পাথর তৈরি করতে পারে। পালং শাক, বীট এবং বাদামের মতো খাবার যাতে অক্সালেট বেশি থাকে, সেগুলো পরিমিতভাবে গ্রহণ করা উচিত। এতে কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ করা সহজ হবে।

প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের দিকে খেয়াল রাখুন

উচ্চ প্রাণীজ প্রোটিন খাবার ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে, এটি পাথর তৈরির কারণ হতে পারে। তাই যেকোনো খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেই সংযম জরুরি। পর্যাপ্ত খাদ্যতালিকাগত ক্যালসিয়াম অন্ত্রে অক্সালেটের সঙ্গে আবদ্ধ হয়ে পাথর হওয়ার ঝুঁকি কমাতে পারে। ক্যালসিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিক সীমার মধ্যে বজায় রাখা উচিত, এর মাত্রা বৃদ্ধি এবং হ্রাস হলে সেদিকে নজর দিন। কারণ উভয়ই কিডনিতে পাথর গঠনের প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।

অতিরিক্ত ভিটামিন সি এড়িয়ে চলুন

ভিটামিন সি সাপ্লিমেন্টের উচ্চ মাত্রা কিডনির পাথর গঠনের কারণ হতে পারে। তাই প্রতিদিন যতটুকু প্রয়োজন, ততটুকুই ভিটামিন সি খান। এছাড়াও ক্যাফিন এবং অ্যালকোহল গ্রহণ সীমিত করুন। এই পদার্থগুলো ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে, যা পাথর তৈরি করতে পারে।

কী খাবেন?

পটাসিয়াম সমৃদ্ধ শাকসবজি যেমন কেল, ব্রোকলি এবং ব্রাসেলস স্প্রাউট কিডনিতে পাথরের বিকাশ রোধ করে এবং ক্যালসিয়ামের ক্ষতি কমায়। লেবুতে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, যা কিডনিতে পাথর তৈরি হতে বাধা দেয় এবং তাদের দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে। বেশিরভাগ দানা শস্য স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ এবং চিকিৎসার জন্য উপকারী।

​ব্যায়াম

অলস জীবনযাপন পাথর গঠনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির একটি, যদিও এটি কেউ তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন। এতে কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ করা সহজ হবে। সেইসঙ্গে মিলবে অন্যান্য শারীরিক সুবিধাও।