বিশ্বে অধিকাংশ মানুষের মৃত্যুর কারণ হৃদরোগ। এ কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির দ্রুত চিকিৎসা করা জরুরি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, প্রতি বছর ১ কোটি ৭৯ লাখ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। পরিবারে মা-বাবা কারও মধ্যে এমন রোগ থাকলে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নেওয়া উচিত। অধিকাংশ পরিবারে প্রায় দেখা যায়, মা-বাবা কেউ অসুস্থ হলেও সন্তানদের সামনে খুলে বলেন না। এ কারণে তাদের শরীরে ধীরে ধীরে হৃদরোগের মতো রোগ বাসা বাধে। ফলে তাদের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। মা-বাবার হৃদরোগজনিত কোনো সমস্যা রয়েছে কি না সেটি ১০টি উপসর্গ থেকে জানা যায়। এসব উপসর্গ হলো- 

উচ্চ রক্তচাপ

মা-বাবা কারও মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া প্রয়োজন। রক্তচাপ মাপার যন্ত্রের সাহায্যে তাদের এ সমস্যা রয়েছে কি না সেটি সহজেই জানা যায়। যদি আপনার মা-বাবার বয়স ৫০-এর বেশি হয় তাহলে প্রতি সপ্তাহে তাদের রক্তচাপ পরীক্ষার ব্যবস্থা করুন। রক্তচাপের মাত্রা সর্বনিম্ন ৮০ ও সর্বনিম্ন ১২০ হলে হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে। তাই মা-বাবার কারও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে হৃদরোগ আছে কি না সেটি নিশ্চিত হোন। 

ডায়েবেটিস

ডায়েবেটিসের সমস্যা বা রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে গেলে করোনারি আর্টিরি রোগের ঝুঁকি থাকে। যা মানুষকে হৃদরোগের দিকে নিয়ে যায়। তাই মা-বাবার কারও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ডায়েবেটিস ধরা পড়লে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

শ্বাসকষ্ট

শ্বাসকষ্টের সমস্যা থেকেও অনেক সময় হৃদরোগ হয়। তাই মা-বাবার যদি শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকে তাহলে চিকিৎসকের কাছে তাদের নিয়ে যাওয়া জরুরি। হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে কি না সেটিও নিশ্চিত হওয়া উচিত। 

বুকে ব্যথা

বেশিরভাগ সময় মা-বাবা তাদের বুকে ব্যথা থাকলেও সেটি এড়িয়ে যান। যদি তারা শরীরে অতিরিক্ত চাপ অনুভব করেন তাহলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার। কারণ বুকে ব্যথা থেকে হৃদরোগ হতে পারে। 

হাই কোলেস্টেরোল

যাদের হাই কোলেস্টেরোলের সমস্যা রয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। হাই কোলেস্টেরোলের কারণে হৃদযন্ত্র ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে। সে কারণে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় হাই কোলেস্টেরোল ধরা পড়লে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। হাই কোলেস্টেরোল আক্রান্ত রোগীকে শাক-সবজি ও ফলমূল খাওয়াতে হবে। 

মাথা ব্যথা ও অজ্ঞান হওয়া

যদি আপনার মা-বাবার মাথা ব্যথা ও অজ্ঞান হওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত। ক্রমাগত মাথা ব্যথা অনুভব ও অজ্ঞান হওয়া ভালো কোনো উপসর্গ নয়। কারণ ধীরে ধীরে এটি উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের দিকে নিয়ে যেতে পারে। 

ঘাড়ে ব্যথা

বুকে ব্যথা থাকলে সেখান থেকে জন্ম নিতে পারে ঘাড়ে ব্যথা। এর মাধ্যমে হৃদরোগের সমস্যা দেখা দেয়। হঠাৎ করে মা-বাবার ঘাড়ে ব্যথা দেখা দিলে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। 

বমি করা

অতিরিক্ত বমি করা হৃদরোগের প্রাথমিক উপসর্গগুলোর অন্যতম। এমন অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কোনো কারণ ছাড়া হৃদযন্ত্রে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার আগেই চিকিৎসকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুন। 

অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া

মা-বাবা যদি হঠাৎ করে অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়া শুরু করেন তাহলে সেটিও হৃদযন্ত্রের দুর্বলতার একটি উপসর্গ হতে পারে। অনবরত মিষ্টি খাওয়ার কারণে তারা যেকোনো সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন। 

পায়ের পাতা, পা ও গোড়ালি ফুলে যাওয়া

পায়ের পাতা, পা ও গোড়ালি অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যাওয়ার পেছনে হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা থাকতে পারে। মা-বাবা বা পরিবারের অন্য কারও এমন সমস্যা দেখা দিলে তাদের যথাশীঘ্র চিকিৎসকের কাছে নেওয়া উচিত। কারণ যেকোনো সময় তারা হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

এইচএকে/এইচএন/এএ