বেশি ডিম খেলে কী হয়?
ডিম খাওয়া উপকারী তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রতিদিন ডিম পোচ, ভাজা, সেদ্ধ, ভুনা নানাভাবে খেয়ে থাকি। আবার কেক, পুডিংসহ অনেক খাবার তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় ডিম। প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এটি কোনো না কোনোভাবে থাকেই। অনেকে বেশি পুষ্টি পাওয়ার জন্য বেশি বেশি ডিম খাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু বেশি ডিম মানেই কি বেশি পুষ্টি? বিশেষজ্ঞরা কিন্তু তেমনটা বলছেন না। সঠিক পুষ্টি পাওয়ার জন্য যেকোনো খাবারই সঠিক পরিমাণে খেতে হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত-
প্রতিদিন ডিম খেতে পারবেন?
বিজ্ঞাপন
ডিমে আমাদের শরীরের পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি পুষ্টি রয়েছে। প্রোটিন, ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট থেকে অত্যাবশ্যক খনিজ এবং ভিটামিন, সবকিছুই ডিমে পাওয়া যায়। ডিম একটি স্বাস্থ্যকর খাবার, যা সারাদিন কাজ করার জন্য যথেষ্ট শক্তি সরবরাহ করে। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ সময়েই সঞ্চিত শক্তি পোড়ানোর কথা ভুলে যাই। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালোরি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সঞ্চিত শক্তি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ায়, সেইসঙ্গে আরও অনেক রোগ ডেকে আনে। তাই ডিমের সর্বাধিক উপকারিতা পেতে পরিমিতভাবে ডিম খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
অতিরিক্ত কোলেস্টেরল
ডিমে কোলেস্টেরল থাকে, যা পরিমিত গ্রহণ করা হলে তা সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে। যাইহোক, নিউট্রিয়েন্ট জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা সকালের নাস্তায় ডিম খান তারা ডিম না খাওয়া ব্যক্তিদের তুলনায় বেশি কোলেস্টেরল গ্রহণ করছেন। যাদের উচ্চ কোলেস্টেরলের ইতিহাস রয়েছে তাদের ডায়েটে ডিম যোগ করার আগে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
হার্টের ঝুঁকি বাড়াতে পারে
জেএএমএ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন অতিরিক্ত ডিম খেলে কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। দিনে ঠিক কতগুলো ডিম খাওয়া যেতে পারে তা নিয়ে বিভ্রান্ত থাকেন অনেকেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তিভেদে ডিম খাওয়ার পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে।
ওজন বাড়তে পারে
ডিম সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করলে তা স্বাস্থ্যের জন্য দারুণভাবে কাজ করে। অনেকে এটি অতিরিক্ত খেয়ে থাকে, বিশেষ করে কুসুম, এবং পরে ওজন বৃদ্ধির অভিযোগ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিমের কুসুমে চর্বি থাকে, যা সঠিক সময়ে পোড়ানো না হলে শরীরে জমে যায়। অনেক বেশি ডিম খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। ডিমে প্রচুর ফাইবার এবং প্রোটিন থাকে যা অতিরিক্ত গ্রহণ করলে হজমের সমস্যা হতে পারে। এর ফলে পেট ফাঁপা, অ্যাসিডিটি এবং এই জাতীয় অন্যান্য অন্ত্রের সমস্যা হতে পারে। কেউ কেউ ক্রমাগত বমি বমি ভাব সহ অ্যালার্জিজনিত সমস্যার শিকার হতে পারে।
কতগুলো ডিম খেতে পারবেন?
একটি সুষম খাবারের সংজ্ঞা বয়স, লিঙ্গ, চিকিৎসা ইতিহাস এবং সহনশীলতা অনুসারে আলাদা হয়। তবে পুষ্টিবিদের মতে, স্বাস্থ্যকর সুষম খাবারের অংশ হিসেবে দিনে একটি ডিম অথবা সপ্তাহে তিন থেকে চারবার খাওয়া প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নিরাপদ। আর শিশুরা খুব সহজেই প্রতিদিন একটি করে ডিম খেতে পারে। যাদের হার্টের সমস্যা বা উচ্চ কোলেস্টেরল রয়েছে তাদের সপ্তাহে তিনটি ডিম খাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত।