শিশুরা মা-বাবার সঙ্গে সঙ্গে থাকতে চাইবে এটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু কখনো কখনো এটি অতিরিক্ত হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে যখন আপনার সন্তান একটু বড় হওয়ার পরেও এই ধরনের আচরণ প্রদর্শন করতে থাকে। শিশুরা তাদের মা-বাবার ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। এক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ে মা-বাবার কিছু আচরণই দায়ী থাকে। মা-বাবা যে আচরণগুলো ভালো বলে মনে করেন, কিন্তু কখনো কখনো সেগুলোই সন্তানের ক্ষতির কারণ হতে পারে-

সব সময় সঙ্গে থাকা

আপনি যদি প্রতিটি মুহূর্তে আপনার সন্তানের সুরক্ষায় নিয়োজিত থাকেন, তাহলে সে ছোট ছোট বিষয়েও আপনার ওপরেই নির্ভরশীল থাকবে। নিজেই সমাধান খোঁজার চেষ্টা করার বা নিজের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার পরিবর্তে, সে প্রথমেই সবকিছু ঠিক করার জন্য আপনার কাছে কান্নাকাটি করবে। যদিও সন্তানের পাশে থাকা বা তার বন্ধু হয়ে ওঠা একটি দুর্দান্ত বিষয়, কিন্তু আপনার সন্তানকেও যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। সমস্যা মোকাবিলা করার মতো শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। তার ছোট ছোট সমস্যা তাকেই সমাধান করতে দিন, আপনাদের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই।

বাউন্ডারি না থাকা

মা-বাবা ও সন্তানের মধ্যে বাউন্ডারি না থাকলে শিশুরা নিজের অনুভূতি ঠিকভাবে বিকাশ করতে পারে না। তাদের মধ্যে এমন একটি সম্পর্ক গড়ে ওঠে যেখানে সবকিছুতেই মা-বাবার কাছ থেকে অনুমোদন চেয়ে নিতে হয়। নিজে থেকে তারা কোনো সিদ্ধান্তই নিতে পারে না।

ব্যর্থতায় সমর্থন না দেওয়া

বেশিরভাগ মা-বাবাই সন্তানের কেবল সফলতা দেখতে চান। কিন্তু ব্যর্থতাও যে জীবনেরই অংশ তা তারা সন্তানকে শেখান না। যে কারণে সন্তান সব সময় চাপ অনুভব করে। তারা সব সময় মা-বাবার প্রশংসার জন্য মুখিয়ে থাকে এবং মা-বাবার ওপরই নির্ভরশীল হয়। আপনার সন্তানকে তার ক্ষমতার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে উৎসাহিত করুন। তাকে বলুন, সে সফল হোক বা ব্যর্থ, আপনারা তাকে ভালোবাসেন।

সমস্যার সমাধান না করা

শিশুর ক্রমাগত পরনির্ভরশীল আচরণের পেছনে একটি সাধারণ কারণ হলো আপনার পরিস্থিতির সমাধানযোগ্যতার অভাব। আপনার সন্তানকে আগলে রাখা ভুল নয়। কিন্তু এভাবেই চলতে থাকলে তা সন্তানের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়। আপনি যদি সমাধান না করতে পারেন তবে একজন শিশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন। তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে সেভাবেই সমাধান করুন।