ছবি: প্রতীকী

বন্ধু মানে এক আত্মা, এক প্রাণ। বন্ধুত্ব একটি সামাজিক সম্পর্ক। বন্ধুত্ব দু’টি আত্মাকে ভালোবাসার সেতুবন্ধনে একত্রিত করে। বন্ধু হলো সেই, যাকে বিশ্বাস করে, ভরসা করে জীবনের ইতিবাচক চরিত্রকে সংগঠন করা যায়। এমনই একজন বন্ধু হচ্ছে মৌন মাহমুদা।বর্তমানে মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হসপিটালে। 

আমরা দু’জন সিদ্ধেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১২ সালের এস.এস.সি পরিক্ষার্থী ছিলাম। অসম্ভব মেধাবী, আদুরে স্বভাবের মেয়েটি আমার মতো রগচটা স্বভাবের মেয়ের সঙ্গে খুব কৌশলে তাল মিলিয়ে স্কুল জীবনের শেষ অবধি বন্ধুত্ব রেখেছে। সে তার নামের মতোই মৌন। মেধাবী হওয়ার পরেও তার বিন্দুমাত্র  অহংকার ছিল না। সে খুব জ্ঞানী ও ধর্মপরায়ন। জ্ঞান বিতরণে তার কোনো কার্পণ্য ছিল না। 

মৌন আর আমি দু’জন দু’জনের জন্য অপেক্ষা করতাম। পরীক্ষার হলে এই প্রাণোচ্ছল আমি যখন দেরি করে উপস্থিত হতাম ঠিক তখন দেখতাম দরজার সামনে সে দাঁড়িয়ে আছে। আমার বোকা হাসি দেখে বলত ‘এত সুন্দর করে হাসিস কিভাবে তুই’, আমি বলতাম, ‘জানি না’। টিফিন ব্রেকে একসাথে টিফিন ভাগাভাগি করে আর তার সঙ্গে তপুর ‘মন ভালো নেই, বলো না কিছুতেই, তবু বুঝে নেবে কে আছে! দেখ কেউ কাছে নেই, তবু তুমি এগোবেই, ভাঙা পথ সাথী কে হবে!’ গানে মুখরিত সময়টা খুব তাড়াতাড়ি কেটে গেছে। 

উপহার ,নোট আদান প্রদান, আমার জন্য ঘুগনিসহ আর তার জন্য ঘুগনি ছাড়া ঝালমুড়ি হাতে বেইলী রোডের রাস্তায় হেঁটে প্রাইভেটে যাওয়ার মাঝে ছিল অনেক আনন্দ। একসঙ্গে বৃষ্টিতেও ভিজেছি দু’জন। সব মিলিয়ে তার সঙ্গে কাটানো সময়গুলো ছিল অসাধারণ চমৎকার। এমন বন্ধু বারবার জীবনে ফিরে আসুক। সত্য এবং বিশুদ্ধ বন্ধুত্ব জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও মহা মূল্যবান উপহার।কাউকে খুব ভাগ্যবান বলতেই হবে যদি তার একজন ভালো বন্ধু থাকে। আর আমি সেই ভাগ্যবতী। শত ব্যাস্ততার মাঝেও সবার বন্ধুত্ব অটুট থাকুক। এবারের বন্ধু দিবসে সব বন্ধুর কথা এটাই হোক।

দক্ষিণখান, ঢাকা।