ক্যালোরির বিষয়টি একটু জটিল। ধরুন আপনি অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করলেন, আপনার ওজন বাড়তে শুরু করলো। আবার দীর্ঘ সময় ধরে কম ক্যালোরি গ্রহণ করার ফলে আপনার ওজন কমতে থাকবে। শুধু তাই নয়, ওজন কমে যাওয়ার কারণে একটা সময় তা বিভিন্ন অসুখের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই সঠিক বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য আপনার কতটা ক্যালোরি প্রয়োজন তা জানতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। ইন্টারনেটে ওজন কমানোর অনেক টিপস খুঁজে পাবেন, তবে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়ানোর পদ্ধতি সহজলভ্য নয়।

স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বৃদ্ধির সবচেয়ে ভালো উপায় হলো স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। তবে কোনো খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়। কারণ ওজন অতিরিক্ত হয়ে গেলে তখন আবার তা কমানো মুশকিল হয়ে যেতে পারে। খাদ্যে থাকা ক্যালোরি মূলত সেই শক্তি যা আপনাকে সক্রিয় থাকতে এবং সারাদিন চলতে সাহায্য করে। এটি শরীরকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর বিপাক এবং হজমেও সহায়তা করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত স্বাস্থ্যকর ৫ খাবার সম্পর্কে, যা আপনার স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন বাড়াতে কাজ করবে-

সাদা ভাত

ক্যালোরি এবং কার্বোহাইড্রেটের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উৎসগুলোর মধ্যে একটি হলো এই সাদা ভাত। ইউএসডিএ অনুযায়ী, এক কাপ রান্না করা ভাতে ২০৪ ক্যালোরি এবং ৪৪ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে। এছাড়াও, এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খনিজ থাকে যা ভাতকে একটি স্বাস্থ্যকর খাবার তৈরি করে। কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ওজন বাড়াতে চাইলে সাদা ভাত খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। আপনার প্রতিদিন যতটা ক্যালোরি প্রয়োজন, তার সঙ্গে সমন্বয় করে খেতে হবে।

পিনাট বাটার

দীর্ঘকাল ধরে পিনাট বাটার মূলধারার খাদ্যের একটি অংশ হয়ে উঠেছে। এই খাবারের জনপ্রিয়তার একটি বড় কারণ হলো, এর উপকারিতা সমূহ। সাধারণ বাটারের বদলে পিনাট বাটারে কম ট্রান্স-ফ্যাট থাকে। তবে এটি ক্যালোরি দিয়ে পূর্ণ। ইউএসডিএ-এর তথ্য অনুসারে, এক মুঠো কাঁচা বাদামে প্রোটিন, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টির পাশাপাশি ১৭০ ক্যালোরি থাকে। তাই নাস্তায় পরিমাণমতো পিনাট বাটার রাখলে তা স্বাস্থ্যকরভাবে আপনার ওজন বাড়াতে কাজ করবে।

গ্রানোলা

গ্রানোলা জনপ্রিয় ব্রেকফাস্ট আইটেম। এটি ক্যালোরি দিয়ে পূর্ণ। দানা শস্য, বাদাম, বীজ এবং শুকনো ফলের মতো উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয় এই নাস্তায়। এসব উপাদানের প্রতিটিতে থাকে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট, যা মধু বা ম্যাপেল সিরাপের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে আরও বেশি ক্যালোরি পাওয়া যায়। প্রিজারভেটিভ এড়ানোর জন্য দোকান থেকে না কিনে বাড়িতে তৈরি গ্রানোলা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

কলা

নিঃসন্দেহে কলা সারা বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল। এটি সারা বছর পাওয়া যায় এবং নিজেই একটি স্বাস্থ্যকর খাবার। অনেকে উচ্চ কার্ব এবং ক্যালোরির কারণে কলা এড়িয়ে চলে। কিন্তু কলা না খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার খাদ্য থেকে ফাইবার, পটাসিয়াম, প্রোটিন ইত্যাদির মতো পুষ্টিও বাদ দিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা ভালো হজম এবং অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপ বজায় রাখতে প্রতিদিন পরিমিত পরিমাণে কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন।

ফুল-ফ্যাট ডেইরি

দুধ প্রক্রিয়াকরণের সময় তার পুষ্টি কমে যায়, এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। শরীরে শক্তি উৎপাদনের জন্য ক্যালসিয়াম, ভিটামিন, প্রোটিন এবং উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্যালোরি যোগ করতে চাইলে দুধ পান করতে হবে। এক্ষেত্রে ফুল-ফ্যাট দুধ এবং দুগ্ধজাতীয় পণ্য খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।