দই ও মধু একসঙ্গে খেলে কী হয়?
আপনি কি দীর্ঘদিন ধরে ব্রণ এবং ত্বকের অন্যান্য সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছেন? এক্ষেত্রে শুরুতেই খেয়াল করুন আপনার ব্যবহৃত ক্রিমের দিকে। হতে পারে তাতে থাকা রাসায়নিক আপনার ত্বকে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া আপনার খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে আমাদের খাবার আমাদের ত্বকে বড় প্রভাব ফেলে? ত্বককে ডিটক্স ও উজ্জ্বল করতে ভেতর থেকে কাজ করে কিছু খাবার। নিয়মিত সেসব খাবার খেতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করতে পারে দই ও মধু।
কীভাবে দই এবং মধু ত্বককে উজ্জ্বল করে
বিজ্ঞাপন
দই ঠান্ডা প্রকৃতির এবং মধুতে গরম করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এক্ষেত্রে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে এই দুই বিপরীত স্বভাবের খাবার আমাদের শরীরে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে কি না? মজার বিষয় হলো, দই এবং মধু খেলে এ ধরনের সমস্যা হয় না। একাধিক গবেষণায় এই সংমিশ্রণের সুবিধা উল্লেখ করা হয়েছে।
দই
দই প্রোবায়োটিক, ফাইবার, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টির সমৃদ্ধ উৎস। এতে ল্যাকটিক অ্যাসিডও রয়েছে যা প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া বজায় রাখে। যা আমাদের শরীরকে মসৃণভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। দই খেলে তা সঠিক হজম, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং ত্বকের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে।
মধু
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, মধু একটি শক্তিশালী প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে যা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে (দইয়ে পাওয়া যায়)। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, বদহজম এবং অন্যান্য সমস্যা উপশম করতে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য শারীরিক ক্রিয়াকলাপে সহায়তা করে।
অন্ত্র যেভাবে স্বাস্থ্যকর ত্বক বজায় রাখতে কাজ করে
এখন, আপনি নিশ্চয়ই ভাবছেন যে এই অন্ত্র-স্বাস্থ্যকর খাবার- মধু এবং দই ত্বকের কীভাবে উপকার করে। এটি বোঝার জন্য আপনাকে প্রথমে অন্ত্র এবং ত্বকের মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে বের করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্বক ভালো রাখার জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য প্রয়োজন। বিপাকীয় এবং পাচনতন্ত্রের যেকোনো ধরনের ব্যাঘাত ত্বকের কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং প্রদাহের সৃষ্টি করে। ফলে ব্রণ, ফুসকুড়ি, অ্যাকজিমা এবং আরও অনেক সমস্যা তৈরি করে। এছাড়া অস্বাস্থ্যকর অন্ত্র শরীরে টক্সিনের মাত্রা বাড়ায়, ত্বক থেকে প্রাকৃতিক আর্দ্রতার স্তরকে সরিয়ে দেয়।
দই এবং মধু ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে যেভাবে সাহায্য করে
প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে
দইতে রয়েছে ল্যাকটিক অ্যাসিড এবং মধু প্রচুর পরিমাণে হিউমেক্ট্যান্ট। উভয়ই প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে, ত্বক ও শরীরে পানির স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখে।
ত্বক উজ্জ্বল করে
মধু এবং দই উভয়ই প্রাকৃতিক এক্সফোলিয়েটর হিসাবে কাজ করে যা ছিদ্রগুলোকে বন্ধ করতে সাহায্য করে। এটি আপনার ত্বককে শ্বাস নিতে এবং ভেতর থেকে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
ত্বক কোমল করে
মধু এবং দই উভয়েরই অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা আপনার ত্বককে প্রশমিত করতে এবং যেকোনো ধরনের জ্বালা কমাতে সাহায্য করে। এটি ফুসকুড়ি, ব্রণ এবং এই জাতীয় ত্বকের অন্যান্য সমস্যা প্রতিরোধে সহায়তা করে।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল প্রভাব রয়েছে
মধু প্রিবায়োটিক এবং দই প্রোবায়োটিক হিসাবে কাজ করে, এটি স্বাস্থ্যকর অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া তৈরি করতে এবং অস্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়াকে দূর করার জন্য একটি দুর্দান্ত খাবার তৈরি করে। এটি আমাদের ত্বককে বিভিন্ন মাইক্রোবিয়াল ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
বলিরেখা দূর করে
প্রচুর পানি থাকায় এটি ডিটক্স ফুড তৈরি করে যা ত্বকের বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করতে সাহায্য করে। এখন যেহেতু আপনি এই দুই খাবার একসঙ্গে খাওয়ার সুবিধাগুলো সম্পর্কে জানেন, তাই এটি আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করুন। এতে আপনার উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে।