তারুণ্য মানেই ঝলমলে সুন্দর। হোক তা ত্বক কিংবা চুল। বার্ধক্যে গেলে তখন চুলে পাক ধরবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এমন অনেক তরুণ-তরুণী আছে যারা তারুণ্যেই মুখোমুখি হন করুণ অভিজ্ঞতার। অল্প বয়সেই তাদের চুলে পাক ধরে যায়। বয়স খুব বেশি নয় অথচ মাথা ভর্তি পাকা চুল। এমনটা দেখতে কারোই ভালোলাগার কথা নয়। আমরা যদি নিজেদের প্রতি যত্নশীল হই তবে এ ধরনের সমস্যা অনেকটা দূরে রাখা সম্ভব। ভারতের সেলিব্রিটি পুষ্টিবিদ নমামি আগরওয়ালের মতে, ফাস্টফুড এবং প্রসেসড ফুডের আবির্ভাব আমাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি থেকে দূরে রাখছে। কিন্তু চুলের অকালপক্কতার সমস্যার পেছনে এটাই একমাত্র কারণ নয়।

অকালে চুল পেকে যাওয়ার কারণ কী?

মেলানিনের উৎপাদন কমে গেলে বা একেবারেই না হলে চুলের স্বাভাবিক রঙ নষ্ট হয়ে যায়। জেনেটিক্স, স্ট্রেস, পরিবেশগত কারণ, জীবনযাত্রার ধরন ইত্যাদিও অকালে চুল পেকে যাওয়ার কারণ হতে পারে। কিন্তু এগুলো সবসময় আমাদের নিয়ন্ত্রণে নাও থাকতে পারে। এই কারণে আপনি ডায়েটের ভূমিকা এড়িয়ে যাবেন না। নমামি বলেন, নির্দিষ্ট ভিটামিন এবং খনিজের ঘাটতি এই সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই এমন খাবার খেতে হবে যেগুলো চুলের জন্য ভালো। ৪টি মূল ভিটামিন এবং খনিজ চুলের অকালপক্কতা রোধে কাজ করতে পারে-

ফলিক এসিড

ফলিক অ্যাসিড হলো ভিটামিন বি ৯ এর সিন্থেটিক ফর্ম, যখন ফোলেট হলো প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ফর্ম। যদিও প্রথমটি সম্পূরক আকারে নেওয়া যেতে পারে, পরবর্তীটি নির্দিষ্ট খাবারের মাধ্যমে খাওয়া যেতে পারে। এই খাবারগুলোতে ফলিক অ্যাসিড পাবেন-

গাঢ় পাতাযুক্ত সবজি: পালংশাক, মেথি শাক, সরিষা শাক ইত্যাদি।

ডাল: মটরশুটি, ছোলা, মসুর এবং মটর।

বাদাম এবং বীজ: চিনাবাদাম, বাদাম, সূর্যমুখী বীজ এবং কুমড়ার বীজ।

ফল: কমলা, জাম্বুরা, লেবু ইত্যাদি।

ভিটামিন বি ১২

পুষ্টিবিদের মতে, ভিটামিন বি ১২ লোহিত রক্তকণিকা এবং মেলানিনের উৎপাদন বাড়াতে কাজ করে। এটি আপনার চুলের রঙের জন্য দায়ী রঙ্গক। ডিমের কুসুম, দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং মাশরুম এই ভিটামিনের ভালো উৎস।

জিংক

এই খনিজ চুলের ফলিকলগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটি নতুন চুলের কোষ তৈরিতেও ভূমিকা রাখে। কুমড়া, সূর্যমুখী, তরমুজ, কালো তিল ইত্যাদির বীজ খেলে তা আপনার জিঙ্ক গ্রহণ নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও আপনাকে অবশ্যই খাবারের তালিকায় পেস্তা বাদাম, ছোলা ইত্যাদি যোগ করতে হবে।

কপার

নমামি বলেন, মেলানিন উৎপাদনের জন্যও কপার গুরুত্বপূর্ণ। এটি তিল বীজ, কাজুবাদাম, বাদাম, দানা শস্য এবং অন্যান্য খাবারে পাওয়া যেতে পারে। আমিষভোজীরা তাদের কপার গ্রহণের পরিমাণ ঠিক রাখতে চর্বিহীন লাল মাংস, শেলফিশ এবং মিঠা পানির মাছ বেছে নিতে পারেন।