ভাত খাওয়া উপকারী না-কি অপকারী এই নিয়ে বিতর্ক থাকেই। বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন, ভাত খাওয়া মোটেই উপকারী নয়। কারণ ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কিংবা স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা উঠলে সবার আগে বাদ দেয়া হয় ভাতকে। এমনকী ভাত খেলে তা নানারকম অসুখ ডেকে আনতে পারে এমনটাও মনে করা হয়। তাই অনেকেই সচেতনতার নাম করে খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেন ভাতকে। কোনো কোনো দিন দুই-একবেলা ভাত খেলেও ওজন বেড়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়।

ভাত খাওয়া অপকারী নয়

মজার বিষয় হলো, ভাত খেলে আমাদের শরীরে মেলে নানা উপকার। কিন্তু একথা অনেকেরই জানা নেই যে ভাত আমাদের জন্য কতটা উপকারী। বরং ভাতকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অপকারী খাবার হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। তবে একথা সত্যি, ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা এশিয়া মহাদেশে সবচেয়ে বেশি। আর এজন্য ভাত খাওয়ার অভ্যাসকে অনেকটা দায়ী করা হয়। কারণ ওজন বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে ভাত খাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয়। তবে এই তথ্য কতটুকু সত্যি?

হজম সহজ হয়

প্রায় সব বাড়িতেই এখন সাদা চালের ভাত খাওয়া হয়। ঝরঝরে, অল্প সময়ে রান্না হয় বলে ভাত রান্নার জন্য এই চাল বেছে নেন অনেকে। কিন্তু যে সাদা চালের ভাত খেয়ে আমরা অভ্যস্ত, তা মেশিনে ছাঁটা। আর মেশিনে ছাঁটার কারণে চালের উপরের অনেকটাই বাদ দিয়ে দেয়া হয়। ফলে সেই চালের বেশিরভাগ পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু বাইরের আবরণ বাদ দেয়ার কারণে এই চালের ভাত হজম করা অনেকটা সহজ হয়। আপনি যদি পেটের সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে মাড় ছাড়া ভাত খাবেন। এতে ভাতের ফাইবার পেট ভরিয়ে রাখবে, দূর হবে কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাও।

ভাত খেলে কি ওজন বাড়ে?

ওজন বাড়ার ভয়ে ভাত খান না? তবে জেনে রাখুন ভাতের কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে অনেকটা সময় নেয় আমাদের শরীর। তাই বাড়তি ওজনের ভয়ে ভাত থেকে দূরে থাকার প্রয়োজন নেই। ভাতে যেটুকু বাড়তি পানি থাকে তা আমাদের এই আর্দ্র আবহাওয়ার সঙ্গে শরীরের খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য প্রয়োজন। তাই ভাত খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।

লাল চাল না-কি সাদা চাল?

ভাতের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স একটু বেশি এটি মিথ্যা নয়। আর তাইতো আমরা ভাতের সঙ্গে নানা ধরনের মাছ-মাংস, শাক-সবজি, ডাল ইত্যাদি মিশিয়ে খেতে অভ্যস্ত। আবার লাল চালের ভাত খেতে পারলে বেশি মিলবে মিনারেল ও ভিটামিন। তবে অনেকের ক্ষেত্রে লাল ও কালো চালের ভাত হজম করতে সমস্যা হতে পারে। এমনটা হলে এই চালের ভাত না খাওয়াই উত্তম।

ভাতের সঙ্গে যা খাবেন

সুস্থতার জন্য পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খাওয়া জরুরি। ভাত খেলে যেহেতু কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ বেশি থাকে তাই সঙ্গে রাখতে হবে পর্যাপ্ত শাক-সবজি, ডাল, মাছ, মাংস ইত্যাদি। ভাতের পরিমাণ খুব বেশি রাখবেন না। একথালা খাবার নিলে তার চার ভাগের একভাগ ভাত ও বাকি অংশ সবজি-মাছ-মাংস ইত্যাদি দিয়ে যেন পূর্ণ থাকে। ডাল এবং সালাদও রাখুন প্রতিদিনের খাবারের তালিকায়।