ছবি: প্রতীকী

সামনে পরীক্ষা। বড্ড মনে পড়ছে বাবাকে। পরীক্ষার আগে বাবা আমাকে ডেকে বলতো- কী কী কিনতে হবে কিনে ফেল। কয়েকদিন পরেই তো পরীক্ষা। ইচ্ছে মতো কিনতাম যা ইচ্ছে করতো। 

পরীক্ষার দিন কাক ভোরে আমাকে ডেকে ফজরের নামাজে নিয়ে যেতেন বাব। রাতে মিষ্টি এনে রাখতেন। ভোরে মসজিদে নিয়ে ইমাম সাহেবকে বলতেন আজ সোহাগের পরীক্ষা একটু দোয়া করে দিয়েন।

নামাজ থেকে এসে বলতেন, কিছু খেয়ে নিয়ে পড়তে বসো। পড়া শেষ করে গোসল করে খাওয়া সেরে যখন কাছে যেতাম তখন বাবা বলতেন, সবার কাছে দোয়া নিয়েছো?

আমি বলতাম, হ্যাঁ নিয়েছি, তখন আমি বলতাম বাবা তাহলে আমি আসছি দোয়া কোরো। তখন পকেট থেকে দুশো টাকা বের করে হাত দিয়ে বলতো যাও ভালো মতো পরীক্ষা দিও। আর মনে রেখো আমার মানসম্মান কিন্তু বাবা তোমার হাতে। এটা মনে রেখে পরীক্ষা দিও। সমাজে আমার যথেষ্ট সম্মান আছে এটা যেন নষ্ট না হয়। এটা ছিল প্রতিবারের ঘটনা।

এবার বাবা নেই। বাবাকে ছাড়া সবসময় একা লাগে। বাবা যে একটা পাহাড় ছিল সেটা এখন টের পাচ্ছি। বাবা একজন মহান মানুষ ছিলেন। পরীক্ষা শেষে যেদিন রেজাল্ট বের হতো আমার, রেজাল্ট ভালো দেখে বাবা অনেক খুশি হতেন। 

আজ বাবা নেই। বাবা আজ অন্ধকারে একা শুয়ে আছে। মাঝেমধ্যে বড্ড ইচ্ছে করে তোমার কাছে যেতে বাবা কিন্তু তুমি অনেক দূরে।

বাবা দোয়া কোরো আমার জন্য। তোমার ছেলে যেন তোমার নাম রাখতে পারে। তোমার ছেলে যেন তোমার মতো সমাজে সম্মান পায়।

বাবা।

আব্বু।

আব্বা।

ওপারে ভালো থেকো। একদিন ওপারে তোমার হাত ধরে হাঁটব।

লেখক : শিক্ষার্থী, ধানমন্ডি আইডিয়াল, ঢাকা -১২০৫