আমাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন যার ঘুমের মধ্যে পা নাড়ানোর অভ্যাস রয়েছে। এই সমস্যাকে ইংরেজিতে রেস্টলেস লেগস সিনড্রোম বা আরএলএস বলা হয়। সাধারণত ২৫-৭৫% ক্ষেত্রেই এটি জেনেটিক কারণে হতে পারে। এছাড়া পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি, আয়রন, ফোলেট, ম্যাগনেসিয়াম বা ভিটামিন বি-১২ এর ঘাটতি, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, পারকিনসন্স ডিজিজ, কিডনি ফেইলিউর, ডায়াবেটিস, ভেনাস ডিসঅর্ডার, থাইরয়েড ডিসঅর্ডার বা স্নায়বিক ব্যাধির কারণেও এমনটা হতে পারে। অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস, ব্যথানাশক, অ্যালকোহল এবং ক্যাফেইন গ্রহণ করলে তা এই সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

আরএলএস বেশিরভাগই মধ্যবয়সী বা বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে ঘটে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের সমস্যার সময়মতো চিকিৎসা করা হলে তা অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হয়। যদিও বেশিরভাগ রোগীর ক্ষেত্রে আরএলএস কোনো উল্লেখযোগ্য সমস্যার সৃষ্টি করে না। খুব গুরুতর ক্ষেত্রে এটি রোগীর দৈনন্দিন কাজকর্মকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। এর লক্ষণ ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং এরপর সেগুলোর গতি বৃদ্ধি পায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও খারাপ হয়। খুব অল্প ক্ষেত্রেই আরএলএস নিজে থেকেই চলে যায়।

বেশিরভাগ চিকিৎসকই বলে থাকেন যে আরএলএস এর কোনো বিশেষ কারণ নেই, ফলে এর চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে ওঠে। যদি কোনো রোগের কারণে এমনটা হয়ে থাকে তবে সেই রোগের চিকিৎসা করা অপরিহার্য হয়ে ওঠে। আপনি যদি আরএলএস-এ ভোগেন তবে এই উপায়গুলো মেনে চললে উপকার পাবেন-

খাবারের দিকে খেয়াল রাখুন

খাবারের তালিকার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ এতে অনেক অসুখ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব হবে। আপনার যদি দিনে কয়েক কাপ কফি পান করার অভ্যাস থাকে তবে আপনাকে প্রথমে যা করতে হবে তা হলো, ক্যাফেইন গ্রহণের পরিমাণ কমানো। অ্যালকোহল গ্রহণ এবং ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তাও রোধ করতে হবে। কারণ এই দুই অভ্যাসই আরএলএস-এর লক্ষণ আরও বাড়িয়ে তোলে। 

ঘুমের রুটিন মেনে চলুন

প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করুন। এই রুটিন মেনে চললে আপনার শরীর ঘুমের প্যাটার্নে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। এতে আরএলএস-এর সমস্যা কমিয়ে আনা সহজ হবে এবং অস্বস্তি কম সৃষ্টি করবে। তাই প্রতিদিন যতটা সম্ভব একই সময়ে ঘুমান এবং জেগে উঠুন।

সক্রিয় থাকুন

দিনের সময়টাতে আরও সক্রিয় থাকার চেষ্টা করুন। গবেষণায় বলা হয়েছে যে, অলস জীবনযাপন আরএলএস-এর সমস্যাকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে। তবে সারাক্ষণ ছোটাছুটি বা অতিরিক্ত শরীরচর্চা করবেন না। কারণ এতে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।

আইস প্যাক বা হিট কম্প্রেস

আরএলএস-এর সমস্যা বেশি অনুভূত হলে তা কমানোর জন্য ঘরোয়া কোনো উপায় বেছে নিতে পারেন। যখন খুব বেশি অস্বস্তি হবে, তখন পায়ে আইস প্যাক বা হিট কম্প্রেস লাগান। এতে আরাম পাবেন।

আয়রনের পরিমাণ বাড়ান

আমাদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে সেখান থেকে নানা সমস্যা শুরু হতে পারে। আরএলএস-এর সমস্যা কমাতে নিয়মিত আয়রনযুক্ত খাবার খেতে হবে। খাবারের তালিকায় প্রচুর সবুজ শাক-সবজি যোগ করুন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে