স্বামীর সঙ্গে ১৫ বছর ধরে সংসার করছেন নিকি মারিয়া। কিন্তু এই কয়েক বছরে দুই সন্তানের মা নিকি বহুবার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। এখননো পর্যন্ত পরকীয়া সম্পর্কে তার প্রেমিকের সংখ্যা এক ডজন। এমন অনেক বার হয়েছে যে, একই দিনে চার জনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়েছেন। তবে স্বামীকে তা ঘুণাক্ষরেও টের পেতে দেননি। এ নিয়ে কখনো তার মনে কোনো খারাপ লাগাও জন্মায়নি।

বছর ৪৫-এর অ্যানির সঙ্গেও নিকির গল্প খানিকটা মিলে যায়। অ্যানি গত পাঁচ বছর ধরে স্বামীর সবচেয়ে সুদর্শন বন্ধুটির সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে রয়েছেন। কিন্তু কখনো স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ চাননি তিনি। বরং দু’টি সম্পর্কই খুব সাবধানে চালিয়ে যেতে চেয়েছেন। কিছুটা হলেও সফল তিনি। কারণ এখনো পর্যন্ত অ্যানির স্বামী জানেন না যে, স্ত্রী তারই বন্ধুর সঙ্গে শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হন।

ফ্লোরিডার বাসিন্দা পিয়াজা জেনিফার। তিনি একটি সমাজসেবী সংস্থা চালান। সম্প্রতি নারীদের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা এত বেড়ে যাওয়ার কারণ নিয়ে অনলাইনে একটি সমীক্ষা করেছিলেন। নিকি, অ্যানি ছাড়াও এমন অনেকেই আছেন, যারা নাম প্রকাশ করতে চাননি। কিন্তু নিজেদের পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে অকপটে স্বীকার করেছেন। প্রেমের কথা আগে থেকে বলা যায় না। কখন কার প্রতি অনুভূতি গড়ে ওঠে, তার কোনো নির্দিষ্ট কারণ নেই। তবে অনেকের সঙ্গে কথা বলে পিয়াজা নারীদের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্কের প্রতি আসক্তির কয়েকটি কারণ খুঁজে পেয়েছেন।

১) সম্পর্কে টানাপোড়েন থাকলে তবেই মেয়েরা অন্য একটি সম্পর্কের খোঁজ করেন। বাইরে থেকে সম্পর্ক স্বাস্থ্যকর মনে হলেও, সব সম্পর্কের সমীকরণ মনের মতো হয় না। আর সব না পাওয়া শুধু মুখোমুখি কথা বলে মিটিয়ে ফেলা যায় না। নিকি এবং অ্যানির ক্ষেত্রেও এমন হয়েছে। এবং সমীক্ষায় অংশ নেওয়া অনেক নারী তা জানিয়েছেন।

২) সমীক্ষা উঠে এসেছে আরো একটি তথ্য। অনেক নারী জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরে একই ব্যক্তির শরীরী স্পর্শে একঘেয়েমি চলে আসে। তাই নতুন স্পর্শ এবং অনুভূতির সন্ধান করেছেন তারা। এ ক্ষেত্রে স্বামীকে প্রতারণা করে অন্য একজন পুরুষের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠ হয়েছেন, তা কিন্তু নয়। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া এমন অনেকেই আছেন, যাদের একাধিক পুরুষসঙ্গী রয়েছেন।

৩) সমীক্ষায় বলছে, বিবাহিত সম্পর্কে থাকাকালীন অন্য কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অন্য একটি কারণ হতে পারে আত্মবিশ্বাস এবং আর্থিক স্বাধীনতা। অধিকাংশ নারী এখন কর্মরতা। স্বামীর অর্থের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে, এই সংখ্যাটা ধীরে ধীরে কমে আসছে। ফলে বিচ্ছেদের পর কীভাবে জীবনধারণ করবেন, সেই চিন্তা নেই বেশির ভাগেরই। অন্য কারো জন্য অনুভূতি জন্ম নিলেও তাই তা না আটকে বরং প্রশ্রয় দিচ্ছেন।

৪) সামাজিক মাধ্যম, অনলাইন ডেটিং অ্যাপ এবং আরো বহু সুবিধার কারণে প্রতি দিনই নতুন কারো সঙ্গে আলাপ হচ্ছে। প্রথমে বন্ধুত্ব দিয়ে শুরু হলেও, ধীরে ধীরে তা পরিণত হচ্ছে প্রেমের সম্পর্কে। দীর্ঘ দিনের সম্পর্কে থাকার পর হঠাৎ নতুন কোনো অভিজ্ঞতা মনে হিন্দোল তুলছে। ফলে সম্পর্কে থাকা সত্ত্বেও নিজেদের নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া থেকে আটকাতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

এমএ