গরম পোশাক আর কম্বল নিয়ে শীত মোকাবিলায় প্রস্তুত তো? শীতের এই প্রস্তুতির তালিকা কিন্তু সঠিক খাবারের নাম ছাড়া অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। এসময় খেতে হবে এমন খাবার যা আপনাকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখবে এবং বাড়াবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শীতের আগমনে কিছু শরীরে কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যেমন বাতের ব্যথা, ত্বকের সমস্যা যেমন শুষ্কতা, চুলকানি ইত্যাদি। 

শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী থাকার মানে কেবল অসুখ থেকে দূরে থাকাই নয়; বরং আমাদের চুল, ত্বক ও হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখাও এর কাজ। আর্থ্রাইটিসে আক্রান্তরা শীতকালকে ভয় পান কারণ এসময়ে তাদের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ফলে তাদের জয়েন্ট পেইনও বেড়ে যায়। সেইসঙ্গে ত্বকের শুষ্কতা, চুলের রুক্ষতা, ত্বকে চুলকানি ইত্যাদিও শীতের সময়ে বেড়ে যায়। 

এমন অনেক খাবার আছে যা শীতকালে শরীরের পক্ষে লড়াই করে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী শরীরে সঠিক পুষ্টি পৌঁছে দেয়। এসময়ে সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সঠিক খাবার খাওয়া খুবই জরুরি। শীতের সময়েই শুধু নয়, আবহাওয়া ও ঋতুর ধরন বুঝে সারা বছর সুষম খাবার গ্রহণ করা উচিত। জেনে নিন শীতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন ৫ খাবার সম্পর্কে-

ঘি

খাঁটি ঘিয়ে থাকে সহজে হজমযোগ্য ফ্যাট যা শরীরকে দ্রুত শক্তি ও তাপ দেয়। ফলে শরীর সহজেই উষ্ণ হয়। পরিমিত ঘি খেলে তা আমাদের ত্বককেও শুষ্কতার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। নিয়মিত রান্নায় ঘি ব্যবহার করতে পারেন অথবা রুটি, পরোটা, ভাত, পোলাও, খিচুড়ি ইত্যাদির সঙ্গেও ঘি মিশিয়ে খেতে পারেন। 

মিষ্টি আলু

শীতের অন্যতম জনপ্রিয় সবজি হলো মিষ্টি আলু। এতে আছে প্রচুর ফাইবার, ভিটামিন এ এবং পটাশিয়াম। নিয়মিত মিষ্টি আলু খেলে তা কোষ্ঠকাঠিন্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং শরীরের প্রদাহ কমাতে কাজ করে। এক টুকরা মিষ্টি আলু খেয়ে নিলেই দিনের প্রয়োজনীয় বিটা ক্যারোটিনের যোগার হয়ে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করার জন্য এটি বেশ ভালো কাজ করে। সেইসঙ্গে এটি শরীরে ভিটামিন সি এর ঘাটতিও পূরণ করে। চাইলে পুড়িয়ে কিংবা দুধের সঙ্গে সেদ্ধ করেও খেতে পারেন।

আমলকি

আমলকি দেখতে ছোটখাটো হলেও এটি পুষ্টিগুণে ঠাসা। এতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণকে দূরে রাখে। আমলকির মোরব্বা, আচার, ক্যান্ডি, চাটনি, জুস ইত্যাদি খেতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় কাঁচা আমলকি সামান্য লবণ মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারলে।

খেজুর

খেজুর কেবল খেতেই ভালো নয়, বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি খাবার তৈরিতেও ব্যবহার করা যায় এই ফল। একথা সবারই জানা যে, খেজুর খেলে অনেক উপকারিতা পাওয়া যায়। বিশেষ করে এটি বাতের রোগীদের জন্য বেশি কার্যকরী। বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে কার্যকরী হিসেবে পরিচিত খেজুরে আছে পর্যাপ্ত ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার ও ক্যালসিয়াম। এটি হাড় ও দাঁত ভালো রাখতেও কাজ করে। হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে এটি বিশেষভাবে কার্যকরী। সকালের খাবার এবং বিকেলের নাস্তায় খেজুর খেলে তা আপনার শরীরে শক্তি যোগাতে কাজ করবে। ফলে শীতেও আপনি অলসতা কিংবা ক্লান্তি থেকে দূরে থাকতে পারবেন। এটি ত্বকে পুষ্টি যোগায় এবং ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে কাজ করে।

গুড়

চিনির বিকল্প এই খাবারে শরীর উষ্ণ রাখার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। রক্তস্বল্পতায় গুড় সমান কার্যকরী কারণ এতে থাকে প্রচুর আয়রন। শীতের সময়ে আয়রনের মাত্রা পর্যাপ্ত রাখা জরুরি। কারণ আয়রনের পরিমাণ কমে গেলে শরীরে অক্সিজেনের স্বল্পতা দেখা দিতে পারে। ফলে শীত বেশি অনুভূত হয়। গুড় খেলে তা আমাদের ফুসফুস পরিষ্কারেও কাজ করে। তাই এটি শীতের সময়ে বেশি উপকারী।

হিন্দুস্তান টাইমস অবলম্বনে