বাঙালি খাবারে ভাতের পরেই যে নামটি সবচেয়ে বেশি আসে, সেটি হলো ডাল। কাউকে দাওয়াত করার সময়ও আমরা বলে থাকি- ‘দু’টো ডাল-ভাত খেয়ে আসবেন’। ডালের কোনো না কোনো পদ পছন্দ করেন না, এমন কাউকে সম্ভবত খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাঙালি রান্নার প্রতিদিনের আয়োজনে পাতলা ডাল থাকে অনেক ঘরেই। ডালের চচ্চরি, ডালের বড়া, পিঁয়াজু ইত্যাদিও বেশ সুস্বাদু। শুধু ভাতের সঙ্গেই নয়, ডাল খাওয়া হয় রুটি-পরোটার সঙ্গেও। চাল আর ডাল মিশিয়ে যে খিচুড়ি রান্না হয়, তা খেতে কে না পছন্দ করেন! ডালে থাকে সর্বাধিক প্রোটিন। সহজে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে তাই প্রতিদিন পাতে রাখুন ডাল। নিয়মিত ডাল খেলে অনেক রোগ থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

ডালের আছে নানা রকম। সেসব ডালের স্বাদও আলাদা। যেমন মসুর ডাল এবং ছোলার ডালের স্বাদ কিন্তু এক নয়। স্বাদের মতোই এর পুষ্টিমানও কম-বেশি হয়ে থাকে। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কোন পাঁচ ডাল বেশি ভালো। এসব ডাল নিয়মিত খেলে পাবেন বেশি উপকার-

ডাল

সাধারণত ডাল বলতে আমরা মুগ, মসুর বা কাবুলি ডালকে বুঝি। এ ধরনের ডাল খাওয়া হয় ভাত কিংবা রুটি-পরোটার সঙ্গে। এসবে আছে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, দস্তা এবং ক্যালসিয়ামের মতো খনিজ এবং প্রোটিন, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, বি-কমপ্লেক্সের মতো ভিটামিন। আর এসব উপাদান আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য সবচেয়ে জরুরি। আরও আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফেনলিক যৌগ। ডায়াবেটিসে ভুগছেন এমন মানুষের জন্যও উপকারী হলো এ ধরনের ডাল।

ছোলা

রক্তে কোলেস্টেলের সমস্যায় ভুগলে মসুর ডালের বদলে খেতে পারেন ছোলার ডাল। এই ডাল আমাদের শরীরের জমে থাকা অতিরিক্ত টক্সিন দূর করে। এতে আছে ভিটামিন এ, সি এবং ই, ফাইবার, প্রোটিন ও প্রয়োজনীয় খনিজ। নিয়মিত ছোলার ডাল খেলে  হৃদপিণ্ড, হাড়, মস্তিষ্ক ইত্যাদি সুস্থ থাকে এবং ক্যান্সারও দূরে থাকে।

 

কাঁচা ছোলা

কাঁচা ছোলা আরও বেশি উপকারী। কাঁচা ছোলা সারারাত ভিজিয়ে রেখে সালাদে কিংবা স্প্রাউট হিসেবে খাওয়া যেতে পারে। নিয়মিত কাঁচা ছোলা খেলে তা পেশী গঠনে ভূমিকা রাখে। পাশাপাশি দূরে রাখে ক্লান্তিও।

রাজমা ডাল

দক্ষিণ ভারতীয় জনপ্রিয় খাবার এই ডাল। এতে আছে প্রোটিন, ডায়েটারি ফাইবার, শর্করা, ভিটামিন এবং খনিজ। রাজমায় পর্যাপ্ত ফাইবার থাকায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এই ডাল উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। রাজমা ডাল নিয়মিত খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে কমে ডায়াবেটিসের ভয়। অনেকটা কিডনির মতো দেখতে এই ডাল ভালো রাখে কিডনিও।

মটরশুঁটি

এই ডাল দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও তেমন সুস্বাদু। এটি মাছ-মাংস, শাক-সবজি, পোলাও কিংবা বিরিয়ানিতে ব্যবহার করা যায়। আবার সেদ্ধ বা ভাজা মটরশুঁটিও খেতে বেশ ভালো। এই ডালে আছে প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার। এসব উপাদান হজমের জন্য বেশ সহায়ক। এটি প্রোটিনের বেশ ভালো একটি উৎস।

এইচএন/এএ