বয়সের সঙ্গে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় যেভাবে
বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ অসুখগুলোর মধ্যে একটি হলো ডায়াবেটিস। আমাদের দেশেও আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বার্ধক্য, পারিবারিক ইতিহাস, স্থূলতা, শরীরচর্চা না করা ইত্যাদি। যেহেতু এটি বয়স্কদের ক্ষেত্রে খুব পরিচিত একটি সমস্যা, তাই এই রোগের সাধারণ লক্ষণ এবং উপসর্গ মনে রাখা জরুরি।
ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ
বিজ্ঞাপন
ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গগুলো হলো- অতিরিক্ত তৃষ্ণা, ঘন ঘন প্রস্রাব, ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া এবং হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া। বয়স্ক ব্যক্তিরা সাধারণত টাইপ-২ ডায়াবেটিসে ভোগেন। একে ম্যাচিউরিটি অনসেট ডায়াবেটিসও বলা হয়। সাধারণত ৪৫-৫০ বছর বয়সের পরে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিসের চিকিৎসা
ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় সাধারণত ইনসুলিনের প্রয়োজন হয় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মুখে খাওয়ার ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। যেকোনো কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে গুরুতর অবস্থায় ইনসুলিনের প্রয়োজন হতে পারে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ডায়াবেটিস কতটা মারাত্মক হতে পারে?
ডায়াবেটিস বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য অনেক ধরনের জটিলতা ডেকে আনতে পারে। এটি হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ, দীর্ঘস্থায়ী রেনাল ফেইলর বা অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। তাই চিকিৎসার পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর রাখতে নিয়মিত চেকআপ করা অপরিহার্য। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আপনি ডায়াবেটিসের উচ্চ ঝুঁকিতে থাকতে পারেন।
ডায়াবেটিস থেকে বাঁচতে করণীয়
নিয়মিত ত্রৈমাসিক HbA1c এবং ছয় মাস পরপর পুরো শরীর পরীক্ষা করা অপরিহার্য। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিয়মিত খাবার গ্রহণ করতে হবে। সময় মেনে খাবার খেলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার প্রবণতা থাকে অর্থাৎ রক্তে শর্করার মাত্রা বিপজ্জনকভাবে কমে যেতে পারে। ঠিকমতো ওষুধ বা ইনসুলিন গ্রহণ না করলে এবং নিয়ম মেনে খাবার না খেলে এই সমস্যা হতে পারে। এর ফলে মাথা ঘোরা, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যা শনাক্ত করা জরুরি কারণ এটি স্থায়ীভাবে মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত মুখে চিনি দিলে অবস্থার উন্নতি হয়, এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
সবসময় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা রাখতে হবে
বয়স্ক ডায়াবেটিস রোগীদের সব সময় কিছু চিনি বা মিষ্টি সঙ্গে রাখা উচিত, এটি জীবন রক্ষাকারী হতে পারে। ওষুধের পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম যেমন হাঁটা এবং নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস অপরিহার্য। প্রতিদিন ৪৫ মিনিট হাঁটা উপকারী বলে জানা যায়। প্রশিক্ষিত পুষ্টিবিদদের খাদ্য পরামর্শ কঠোরভাবে মেনে চলা উচিত। ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সুস্থ জীবনের জন্য অপরিহার্য।
টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে