ঈদের তিনবেলায় যেসব খাবার রাঁধতে পারেন
ঈদের আনন্দের অন্যতম অংশ হলো বিভিন্ন মজার খাবারের আয়োজন। ঈদের সকাল থেকে শুরু হয়, থাকে রাত কিংবা পরের কয়েকদিন পর্যন্ত। রান্নাঘর আর খাবার টেবিলে চলে সমান ব্যস্ততা। অতিথি সামলানো, সবার সামনে পছন্দের খাবারগুলো পৌঁছে দেওয়া তো সহজ কথা নয়! অবশ্য এই কঠিন কাজগুলোও কিছুটা সহজ হতে পারে যদি আপনি আগে থেকে পরিকল্পনা করে নেন।
ঈদের তিনবেলায় কোন খাবারগুলো রান্না করবেন তা আগে থেকে ঠিক করা থাকলে কাজ গোছানো সহজ হবে। কোন জিনিস কতটুকু রাঁধবেন তা নির্দিষ্ট হলে তার জন্য কী কী লাগবে সেগুলোও গুছিয়ে রাখতে পারবেন। আগেভাগে কাজ গোছানো হলে ঈদের দিনের রান্না অনেকটা সহজ হবে। যেসব খাবার আগে থেকে ফ্রোজেন করে রাখা যায়, সেগুলো ফ্রোজেন করে রাখবেন। এতে ঈদের দিন সময় বাঁচবে অনেকটাই। সারাদিন রান্নাঘরেই কাটিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
বিজ্ঞাপন
সকালের নাস্তায় কী খাবেন
ঈদের দিনের সকালের খাবারটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই মধুর স্মৃতি পুরো বছর আমরা লালন করি। ঈদের সকালে সাধারণত মিষ্টিমুখ করা হয়। কেবল মিষ্টি জাতীয় খাবারই নয়, ঈদের দিন সকালের নাস্তায় রাখতে পারেন ঝাল জাতীয় খাবারও। অনেকে চিকিৎসকের নিষেধের কারণে মিষ্টি খাবার খেতে পারেন না, অনেকে আবার মিষ্টি খাবার খুব একটা পছন্দ করেন না। তাদের জন্য ঝাল স্বাদের খাবার বেশি উপযোগী। চেষ্টা করুন ঈদে সব খাবার ঘরে তৈরি করতে। এতে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ভয় থাকবে না। মিষ্টি খাবারের মধ্যে সেমাই কিংবা ফিরনি তো থাকবেই, সেইসঙ্গে রাখতে পারেন পুডিং, পিঠা ইত্যাদিও। সেমাই গতানুগতিক রেসিপিতে রান্না না করে ভিন্ন স্বাদের কিছু তৈরি করতে পারেন। সেক্ষেত্রে সেমাইয়ের জর্দা, নবাবী সেমাই ইত্যাদি তৈরি করতে পারেন। ফিরনিতে যোগ করতে পারেন শাহী স্বাদ। ঈদের সকালের নাস্তায় ঝাল খাবার হিসেবে নুডলস, পাস্তা, চটপটি, হালিম, পাকোড়া, ঝালপোয়া ইত্যাদি রাখতে পারেন।
দুপুরের খাবার
কোরবানির ঈদের দুপুরের খাবারটা নিয়ে একটু ভাবনায় পড়তেই হয়। কারণ এদিন দুপুরেই বেশি ব্যস্ততা থাকে। কোরবানির পশু জবাইয়ের পর মাংসা কাটাকাটি ও ভাগ করার পর্ব। এরপর আসে পরিষ্কার করা, বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া। এসব কাজ শেষ করতে গিয়ে দুপুরই হয়তো গড়িয়ে যায়। তাই এদিন দুপুরের খাবার আগেই তৈরি করে রাখতে হবে। কোরবানির মাংস ভুনা, পোলাও ইত্যাদি রাখতে পারেন। অথবা কোরবানির মাংস দিয়ে ঝটপট তেহারি বা খিচুড়ি রান্না করে নিতে পারেন। এতে এক ডিশে দুপুরের খাবার হয়ে যাবে। যদি এদিন দুপুরে অতিথি আপ্যায়নের পর্ব থাকে তবে তো বাড়তি পদ যোগ করতে হবেই। সেক্ষেত্রে আগে থেকে কিছু খাবার রান্না করে রাখতে পারেন। যেমন মুরগির রোস্ট, ডিমের কোরমা, বিভিন্ন ধরনের কাবাব ইত্যাদি। এই ঈদে মাছের তৈরি পদগুলো একটু আড়ালেই থাকে। তবে বাড়িতে মাছপ্রেমী কেউ থাকলে তার জন্য মাছের কোনো পদ রাখতে পারেন।
রাতের খাবার
রাতের খাবারটাই এই ঈদের মূল আকর্ষণ। কারণ সারাদিন মাংস নিয়ে ব্যস্ত থাকার পর রাতে সুযোগ মেলে পছন্দের খাবার তৈরির। বেশিরভাগ বাড়িতেই চালের আটার রুটির সঙ্গে কোরবানির মাংস ভুনা খাওয়া হয়। রাতের খাবারে রুটি বা পরোটার সঙ্গে মাংসের কয়েক পদ থাকতে পারেন। চাইলে তৈরি করতে পারেন গরুর মাংসের কালাভুনা। এটি রুটি বা পরোটা দিয়ে খেতে দারুণ লাগবে। রাতের বেলা খুব বেশি ভারী খাবার না খাওয়াই ভালো। তাই সম্ভব হলে বিরিয়ানি, পোলাও বা তেহারি এসময় এড়িয়ে চলবেন। আস্ত রসুন দিয়ে মাংস রান্না করতে পারেন। এটি খেতে দুর্দান্ত। গরুর ভুঁড়ি, নেহারি ইত্যাদি খাবার একদিনেই খাওয়া যায় না। একটু সময় নিয়ে জ্বাল করলে খেতে সুস্বাদু হয়। তাই এগুলো খেতে পারেন ঈদের দুই-তিনদিন পর।