কোন তেল বেশি উপকারী?
প্রতিদিনের রান্নার কাজে তেল তো লাগেই। সবজি, মাছ, মাংস, ডাল, খিচুড়ি, পরোটা কোনটাই বা তেল ছাড়া হয়! কিন্তু সব তেল যেন স্বাস্থ্যের জন্য সমান উপকারী, তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে উপকারী তেলের তালিকা। কোনোটি বলছে অলিভ অয়েলই ভালো, কোনোটি আবার অ্যাভোকাডো তেলের পক্ষে। সরিষার তেলের উপকারিতাও কম নয়, তবে এর ব্যবহার বর্তমানে কমেছে।
পরিশোধিত তেল কি ভালো?
বিজ্ঞাপন
আমাদের সবার রান্নাঘরেই থাকে পরিশোধিত তেল। বেশিরভাগেরই ধারণা, এই তেল স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী এবং এই তেল দিয়ে সব ধরনের খাবার তৈরি করা যায়। আসলেই কি এই তেল উপকারী? বিশেষজ্ঞদের মতে, এই তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। পরিশোধিত করতে গিয়ে এই তেল খুব বেশি তাপমাত্রার মধ্য দিয়ে আসে, যে কারণে এর পুষ্টি অনেকটাই কমে যায়। এই তেলে পাওয়া যায় ট্রান্স ফ্যাট, যা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। উপকারী তেল তাহলে কোনগুলো? জেনে নিন-
কাচ্চি ঘানি তেল
পরিশোধিত তেলের বদলে কাচ্চি ঘানি তেল ব্যবহার করুন। এটি তৈরিতে কোনো তাপমাত্রা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় না। ফলে পুষ্টির প্রায় সবটাই রয়ে যায়। সরিষার তেল অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে এবং এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এই তেল আপনি যেকোনো রান্নায় ব্যবহার করতে পারেন।
অলিভ অয়েল
বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যতম স্বাস্থ্যকর তেল হলো অলিভ অয়েল। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলে রান্না করা ভালো কারণ এটি সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ। এই তেল প্রক্রিয়াজাত ও পরিশোধিত হয় না, ফলে এর গুণমান অটুট থাকে। এতে থাকে পর্যাপ্ত মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কিছু পরিমাণ পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড। এগুলো হার্টের জন্য খুব উপকারী। অলিভ অয়েলে রান্না করলে আঁচ খুব বেশি বাড়ানো যাবে না। এই তেল বেকিং বা সালাদে ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে ভালো।
নারিকেল তেল
নারিকেল তেলে থাকে উচ্চমাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট। তাই এর উপকারিতা নিয়ে ভিন্ন মত রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। এই ফ্যাটকে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে ধরা হয়। তবে কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, স্যাচুরেটেড ফ্যাট স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোতে অল্প ব্যবহার করে কোলেস্টেরল কমানো যেতে পারে। তাদের মতে, আমাদের শরীরেও দরকার পড়ে কিছু পরিমাণ স্যাচুরেটেড ফ্যাটের। তাই এটি সামান্য পরিমাণ ব্যবহার করা যেতে পারে।
সূর্যমুখী তেল
ভিটামিন ই সমৃদ্ধ তেল হলো সূর্যমুখী। এক চা চামচ সূর্যমুখী তেলে প্রায় আঠাশ শতাংশই থাকে ভিটামিন ই। এতে আলাদা স্বাদ থাকে না, তাই রান্না করা খাবারে তেলের স্বাদ যোগ হয় না। সূর্যমুখী তেলে থাকে ওমেগা-৬ ফ্যাটি অ্যাসিড, এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি শরীরে সৃষ্ট প্রদাহ কমাতে কাজ করে।
ভেজিটেবল অয়েল
উদ্ভিদ থেকে পাওয়া তেলকে বলা হয় ভেজিটেবল অয়েল। রান্নার ধরন বুঝে এই তেলের উপকারিতা বাড়তে বা কমতে পারে। তবে এই তেল প্রক্রিয়াজাত এবং পরিশোধিত হওয়ার কারণে এর স্বাদ ও পুষ্টি কম হয়। এটি পরিমিত খেলে আমাদের শরীরে ভালো ও খারাপ কোলেস্টেরলের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে। তবে অতিরিক্ত খেলে তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।