শিশুটি যখন পৃথিবীতে একেবারেই নতুন, সবকিছুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে তার সময় লাগে। পৃথিবীর আলো-বাতাস, ধুলো-মাটির সঙ্গে মিলেমিশে বড় হতে থাকে সে। শিশুর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে দুজন মানুষের জন্ম হয় মা-বাবা হিসেবে। বাড়ে অনেক দায়িত্ব। কীসে সন্তানের ভালো হবে সেই চিন্তা করতে থাকেন তারা।

নবজাতকের যত্ন নিয়ে নানা ধরনের ধারণা প্রচলিত রয়েছে। তার মধ্যে কিছু সত্যিই কার্যকরী, কিছু আবার কুসংস্কার। কিছু কিছু কুসংস্কার বহু বছর ধরে চলে আসছে। সেসব মেনে চলতে গিয়ে শিশুর ভালোর বদলে খারাপই হয় বেশি। না জেনেই শিশুর ক্ষতি ডেকে আনেন অভিভাবকেরা। জেনে নিন যত্নের নামে শিশুর সমস্যা সৃষ্টি করে কোন নিয়মগুলো-

মুখে মধু

অনেকেই নবজাতকের মুখে মধু দেন। বিশেষজ্ঞরা ছয় মাস বয়সের আগে শিশুকে মায়ের দুধ ছাড়া বাকি সব খাবার দিতে নিষেধ করেন, সেখানে সরাসরি মধু খেতে দেওয়া কতটা ক্ষতিকর বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই। এক বছর বয়সের আগে শিশুকে মধু একদমই খেতে দেবেন না। কারণ এতে বটালিজম নামের এক রকমের অসুখ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেটি শিশুর জন্য ডেকে আনতে পারে মারাত্মক কোনো ক্ষতি।

চোখে-কপালে কাজল

নবজাতকের চোখে-কপালে কাজল পরান না এমন অভিভাবক কমই আছেন। মনে করা হয়, এতে বিভিন্নজনের কুনজর থেকে শিশু রক্ষা পায়। বলা বাহুল্য যে এটি কুসংস্কার। এদিকে কাজলের কারণে শিশুর কোমল ত্বক হয় ক্ষতিগ্রস্ত। সতর্ক না হলে শিশুর ত্বকে ইনফেকশন হওয়াও অস্বাভাবিক নয়।

কানের ব্যথায় স্তন্যদুগ্ধ

শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ সবচেয়ে পুষ্টিকর। অনেকে মনে করেন, শিশুর কানে ব্যথায় মায়ের বুকের দুধ ড্রপার হিসেবে ব্যবহার করলে উপশম মেলে। কিন্তু এটি একেবারেই ভুল ধারণা। শিশুর কানের ভেতরে দুধ দিলে তাতে ব্যাকটেরিয়া বাসা বেঁধে ইনফেকশনের ভয় বেড়ে যায়।

কাপড়ে শক্ত করে জড়িয়ে রাখা

শিশুর জন্মের পরপরই তাকে তোয়ালে বা কাঁথা দিয়ে শক্ত করে মুড়িয়ে রাখা হয়। মনে করা হয়, এতে শিশুদের পা সোজা থাকবে। কিন্তু জন্মের পরপরই এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি শিশুর জন্য কষ্টকর হয়ে ওঠে। এমনকী তার নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হতে পারে। তাই শিশুকে যতটা সম্ভব স্বস্তিতে থাকতে দিন।

ছাগলের দুধ পুষ্টিকর

গরুর দুধের থেকে ছাগলের দুধ বেশি পুষ্টিকর। আর একারণেই অধিক পুষ্টির আশায় শিশুকে ছাগলের দুধ খাওয়ানো হয়। ছয় মাস বয়সের পর শিশুকে ছাগলের দুধ খেতে দেবেন না। কারণ এটি অধিক পুষ্টি সমৃদ্ধ হলেও শিশু সহজে হজম করতে পারে না।