জীবনকে সুন্দরভাবে উপভোগ করার জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো সুস্থ থাকা। এই সুস্থতা হতে হবে শারীরিক ও মানসিক। নিজেকে ভেতর থেকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে চাইলে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতোই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের হৃদযন্ত্র। সুস্থ থাকতে হলে তাই হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখতে হবে। খেতে হবে এমন খাবার, যা আপনার হৃদযন্ত্রকে ভালো রাখবে। 

কমলা

সুস্বাদু ফল কমলা। এটি আমাদের তৃষ্ণা মেটাতে সাহায্য করে। কমলায় রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন সি, নিউট্রিসিয়ান্টস, পটাসিয়াম ও পেকটিন। এই ফল হৃদযন্ত্রকে সচল রাখে। এটি কোলেস্ট্রেরলও শোষণ করে থাকে। 

বাঁধাকপি

হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে বাঁধাকপি যথেষ্ট। বাঁধাকপিতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার রয়েছে। ফ্যাট ও ক্যালোরি শোষণ করে থাকে বাঁধাকপি। তাই খাবারের তালিকায় বাঁধাকপি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। 

রসুন

রসুন খাওয়ার মধ্য দিয়ে হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখা সম্ভব। খাবারের রেসিপিতে রসুনের ব্যবহার দেহকে সবসময় সুস্থ রাখে। খাবারে রসুনের স্বাদ অসামান্য। রসুন এক প্রকার ওষুধও। এর মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। 

চকোলেট

চকোলেটে খেতে ভালোবাসে না এমন মানুষকে পাওয়া যাবে না। ডার্ক চকোলেট হৃদযন্ত্রকে হৃদরোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত চকোলেট খেলে দেহ ও মন সুস্থ থাকে। তাই খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন চকোলেট। 

সার্ডিন

হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে সার্ডিন। এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। সার্ডিন কোলেস্ট্রেরলকে শোষণ করে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। 

ডাল  

যারা ডায়েট করছেন তাদের জন্য ডাল উপকারী খাবার। ডালে রয়েছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও প্রোটিন। ডাল রক্তচাপ কমায় ও কোলেস্ট্রেরল শোষণ করে। 

আমন্ড

আমন্ড সুস্বাদু বাদাম। গবেষণায় দেখা যায়, আমন্ড খেলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত আমন্ড খাওয়ার মাধ্যমে ডায়েবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। আমন্ড কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। 

ডালিম

ডালিমে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। ফলটি কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করে। গবেষণায় জানা যায়, ডালিম ক্যান্সার, ডায়েবেটিস, স্ট্রোক ও আলঝেইমার রোগ সারিয়ে তুলতে সক্ষম। এছাড়া ডালিমের মাধ্যমে চর্মরোগ, জয়েন্টের ব্যথা, দাঁতব্যথা ভালো হয়। 

ব্লুবেরি

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিগুণসম্পন্ন ব্লুবেরি ফল অনেক উপকারী। গবেষণায় জানা যায়, ব্লুবেরি ফলের খেলে রক্তচাপের ঝুঁকি কমে। ব্লুবেরি ফল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। 

বিটস

উচ্চস্তরের মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার বিটস। সুস্বাদু ও রঙিন ফল বিটস কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম। গবেষণায় জানা যায়, এটি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। 

স্যামন

স্যামন এক ধরনের তেল জাতীয় মাছ। সাধারণত তেল জাতীয় মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকে। স্যামন হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। 

টার্মারিক

হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার জন্য টার্মারিক উপাদেয় খাবার। টার্মারিকের মাধ্যমে কার্ডিয়াক হাইপারট্রফি বা হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় টার্মারিক। আপনার খাদ্যতালিকায়ও টার্মারিক রাখতে পারেন। 

সিয়া সিডস

স্বাস্থ্যকর খাবার সিয়া সিডস। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, নিউট্রিশন, ফাইবার, প্রোটিন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে সিয়া সিডসে। সিয়া সিডস ক্যালোরি শোষণ করে নেয়। এর ফলে হৃদরোগ ও কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করা যায়। 

আপেল

ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও মিনারেলসমৃদ্ধ আপেল রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। চিকিৎসকরা প্রায়ই আপেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তারা বলে থাকেন, দিনে একটি আপেল দেহকে সুস্থ রাখে। 

অ্যাভোক্যাডো

হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার জন্য অ্যাভোক্যাডো অত্যন্ত উপকারী। এটি অনেক সুস্বাদু। পটাসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দ্বারা পরিপূর্ণ অ্যাভোক্যাডো হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

বেগুন 

মিনারেল, ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ এগপ্ল্যান্ট কোলেস্ট্রেরল শুষে নেয়। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। মস্তিষ্কের জন্যও এটি উপকারী। 

ব্রোকলি

ব্রোকলি জনপ্রিয় একটি সবজি। কোলেস্ট্রোরল শুষে নেয় এটি। শরীরের রক্ত চলাচলে সাহায্য করে ব্রোকলি। পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। 

গাজর

গাজর অত্যন্ত সুস্বাদু একটি সবজি। হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। পুষ্টিগুণসম্পন্ন গাজর খেলে হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকবে। মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী খাবার এটি। 

মুরগির মাংস

মুরগির মাংস আমিষ জাতীয় খাবার। এটি কোলেস্ট্রেরল শুষে নেয়। অনেকেই এটি খেতে পছন্দ করেন। শরীরের স্বাভাবিক বিকাশে এই মাংস অনেক উপকারী। হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার জন্যও এটি উপকারী খাবার। 

ছোলা

পটাসিয়াম, ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ ছোলা অত্যন্ত উপাদেয় খাবার। এটি কোলেস্ট্রেরল শুষে নেয় ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। ছোলা কাঁচা এবং রান্না করে দুই উপায়েই খাওয়া যায়। 

কফি

হৃদযন্ত্রের সুরক্ষার জন্য কফি অত্যন্ত উপকারী খাবার। গবেষণায় দেখা গেছে, হৃদযন্ত্রের দুর্বলতা, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ও করোনারি হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে পারে কফি। তবে একসঙ্গে খুব বেশি কফি খাবেন না। প্রতিদিন এক-দুই কাপ কফি খেলেই যথেষ্ট। 

গ্রিন টি

হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার জন্য গ্রিন টি অনেক উপকারী। গ্রিন টি কোলেস্ট্রেরল শুষে নেয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ গ্রিন টি হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। সাধারণ চায়ের বদলে নিয়মিত পান করতে পারেন গ্রিন টি।

এইচএকে/এইচএন/এএ