৩৬, ৩৭ ও ৩৯তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত ৮৪ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে দ্রুততম সময়ে নিয়োগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনপ্রশাসন সচিবকে এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

বুধবার বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ছিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া, অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত।

বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩৬তম থেকে ১০, ৩৭তম থেকে ৩৮ ও ৩৯তম থেকে ৩৬ জনসহ সর্বমোট ৮৪ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রদান করেছেন। পৃথক চারটি রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় দেন।

রায়ের পর রিটকারীদের আইনজীবী ছিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া বলেন, রিটকারীরা বিভিন্ন বিসিএসে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হলেও কারণ ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সুপারিশপ্রাপ্ত অন্যান্যদের নিয়োগ দেওয়া হলেও তারা বাদ থাকেন। এরই পরিপ্রক্ষিতে তারা রিট করেন। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ক্রিমিনাল কেস বা রাষ্ট্রদ্রোহী কোনো অভিযোগ নেই। এসব শুনে আদালত বলেন, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ না থাকলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগ দিতে হবে। চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পরেও নিয়োগ না দেওয়া অবশ্যই অবৈধ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ৩৭তম বিসিএস এবং ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল ৩৯তম বিসিএসের নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপন প্রকাশ করলে রিটকারীরা আবেদন করেন। যথারীতি লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ৩৭তম বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে ২০১৮ সালের ১২ জুন মোট এক হাজার ৩১৪ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে। পরবর্তী সময়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের ২০ মার্চ এবং পরে বিভিন্ন তারিখে সর্বমোট এক হাজার ২৪৮ জনকে নিয়োগ দেয়। কিন্তু সুপারিশকৃত এক হাজার ৩১৪ জনের মধ্যে ৩৮ জন রিটপিটিশনারসহ সর্বমোট ৬৬ জন নিয়োগ বঞ্চিত হয়।

৩৯তম বিসিএসে ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল মোট চার হাজার ৭৯২ জনকে বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সহকারী সার্জন পদে সুপারিশ করে পরবর্তী সময়ে সুপারিশকৃতদের মধ্যে থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর এবং পরবর্তী বিভিন্ন তারিখে চার হাজার ৭২০ জনকে সহকারী সার্জন পদে নিয়োগ দেয়। কিন্তু ৩৬ জন রিটকারীসহ সর্বমোট ৭২ জন নিয়োগ বঞ্চিত হয়। বারবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলেও নিয়োগ না দেওয়ায় তারা হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।

ছিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া বলেন, আজ এ রায়ের ফলে রিটকারীরা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। তাদের নিয়োগের পথ সুগম হলো। উল্লেখ্য যে, ৩৯তম বিসিএসের ৩৬ জনের সবাই চিকিৎসক।

রিটকারীরা হলেন- ৩৭তম বিসিএসের মোসা. আরফুনা খাতুন, কংকন চন্দ্র রায়, শেখ মাহবুবে সোবহানী, আতিয়া তামান্না, জান্নাতুল নাঈম, নাইমুর রহমান, ইমরান হাসান, মেহরাব হোসেন, বেনাজীর ইকবাল, মো. রুবাইয়াত ফেরদৌসসহ ৩৮ জন। ৩৯তম বিসিএসের এ.বি.এম মেহেদী, নাহিদ আজম পরাগ, শায়লা আক্তার, মোহাম্মাদ আলী আফতাব, মো. ইব্রাহিম হোসেন, হোসনে আরা সনিয়া, মো. রাকিবুল হাসান, মো. আতিকুর রহমান, আনোয়ার আহমেদ মিয়াজি, রুবাইয়া তাসমিনসহ ৮৪ জন।

এমএইচডি/ওএফ