হাইকোর্টে নিজের জীবনের নিরাপত্তা প্রার্থনা করেছেন রাজারবাগ পীরের বিরুদ্ধে রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

রোববার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে তিনি নিরাপত্তা প্রার্থনা করেন।

অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির আদালতে বলেন, রাজারবাগ পীরের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করায় আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই মামলা থেকে আমাকে সরে যেতে বলা হচ্ছে। গত ২০ বছরের মধ্যে এমন নিরাপত্তাহীনতা কখনো বোধ করিনি। আমার স্ত্রীকে গভীর রাতে ফোন দিয়ে এই মামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে। আমার সন্তানদের স্কুলে যাওয়া আসার সময় অনুসরণ করা হচ্ছে। আমার শ্বশুরের নাম্বারে ফোন দিয়ে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। এ অবস্থায় আমি থানায় জিডি করেছি। মক্কেলের পক্ষে মামলা লড়তে গিয়ে আমি এমন হয়রানি ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

এ সময় আদালত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে আইনজীবী শিশির মনিরের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে বলেন।

এক পর্যায়ে রাজারবাগ পীরের বিরুদ্ধে রিটকারী আরেক আইনজীবী এমাদুল হক বশিরও আদালতে বলেন, আমি নিজেও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাকে নিরাপত্তা দিন।

তখন আদালত বলেন, এত ভয় পেলে চলবে না। আমাদেরকেও হুমকি দিয়ে কাফনের কাপড় পাঠানো হয়। ভয় পেলে জজিয়তি ও ওকালতি চলে না।
 
গত ১৬ সেপ্টেম্বর রাজারবাগ পীর ও তার চক্র কর্তৃক দেশব্যাপী দায়ের করা গায়েবি মামলার তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করে ভুক্তভোগী ৮টি পরিবার।

৭ বছরের শিশু, নারী, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মাদরাসার শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ ৮ জন ভুক্তভোগী আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনকারীরা হলেন মো. আবদুল কাদের, মাহবুবুর রহমান, জয়নাল আবেদীন, মো. আলা উদ্দিন, জিন্নাত আলী, আইয়ুবুর হাসান সিয়াম, নাজমা আক্তার ও নার্গিস আক্তার।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজারবাগ দরবার শরীফের সব সম্পদের বিষয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এই তদন্ত করতে বলা হয়। এছাড়া তাদের কোনো জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা তদন্ত করতে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে বলা হয়। একইসঙ্গে আবেদনকারীদের মামলা প্রতারণামূলক কি না, সিআইডিকে এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

অন্যদিকে রাজারবাগ পীর ও দরবার শরীফের বিরুদ্ধে আরেকটি রিট করেন ৪৯ ভুয়া মামলার আসামি রাজধানীর শান্তিনগরের বাসিন্দা একরামুল হক কাঞ্চন। আইনজীবী এমাদুল হক বশির এ রিট দায়ের করেন।

এমএইচডি/জেডএস