চট্টগ্রামে ড্রেনে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সেহরীন মাহবুব সাদিয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবারকে ১০ কোটি টাকা  ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), সিসিবি ফাউন্ডেশন ও সাদিয়ার মামা জাহিদ উদ্দিন বেলাল এ রিট দায়ের করেন।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনটি আজ উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালতে রিট আবেদনটি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক। সঙ্গে ছিলেন সিসিবি ফাউন্ডেশনের পরিচালক অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল।

এর আগে গত ১৯ অক্টোবর ড্রেনে পড়ে সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সেহরীন মাহবুব সাদিয়া মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে সিসিবি ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম ও আইনজীবী ইশরাত হাসান এই নোটিশ পাঠান।

নোটিশে সালেহ আহমেদ ও সেহরীন মাহবুব সাদিয়া মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানাতে বলা হয়েছে। এছাড়া এই ধরনের দুর্ঘটনা রোধে বিবাদীরা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তার রিপোর্ট প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।

স্থানীয় সরকার, স্বরাষ্ট্র সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনকে নোটিশে বিবাদী করা হয়েছে। তবে রিট আবেদনে শুধু সাদিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।

গত ২৪ সেপ্টেম্বর ‘চট্টগ্রামে নালায় পড়ে মৃত্যু : দায় কার?’ এই শিরোনামে একটি নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সবজি ব্যবসায়ী সালেহ আহমদের পর চট্টগ্রাম নগরীতে নালায় পড়ে সেহেরীন মাহবুব সাদিয়ার মৃত্যুতেও দায় নিতে চাইছে না সিটি করপোরেশন কিংবা সিডিএ।

সরকারি দুটি সংস্থাই একে অন্যকে দোষ দিচ্ছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বলছে, দুদিকে ফুটপাত করলেও খালের মুখটি অরক্ষিত রেখেছে সিডিএ। তাই এর দায় সিডিএর।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ বলছে, খালের মালিকানা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের। তাই খালের মুখে সুরক্ষা নিশ্চিতের দায়িত্বও তাদের। 

নালা-খালে একের পর এক মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ নগরবাসী। তারা বলছেন, দায় এড়ানোর এই প্রবণতা প্রমাণ করে সেবা সংস্থার মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো স্বাচ্ছন্দ্যের পরিবর্তে নগরবাসীর ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে।

গত ২৫ অগাস্ট মুরাদপুর এলাকায় খালে পড়ে তলিয়ে যান সালেহ আহমদ। তার খোঁজ আর মেলেনি। তার আগে গত ৩০ জুন ষোলশহর চশমা হিল এলাকাতেও এমন দুর্ঘটনায় মারা যান দুজন।

এরপর আগ্রাবাদে নবী টাওয়ারের কাছাকাছি নাছিরছড়া খালে পড়ে তলিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাদিয়া। পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় কয়েক টন আবর্জনার স্তূপ সরিয়ে ১৯ বছর বয়সী সাদিয়ার লাশ উদ্ধার হয়।

এমএইচডি/জেডএস